Advertisement
Advertisement

Breaking News

করোনা

পোশাক-চুল-দাড়িতে স্বল্পায়ু করোনা, অযথা বারবার স্নানেও নিষেধ বিশেষজ্ঞদের

জানেন জামাকাপড়ে কতক্ষণ বেঁচে থাকে এই ভাইরাস?

How long does CoronaVirus lives on clothes or shoes
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:May 10, 2020 9:48 am
  • Updated:May 10, 2020 9:48 am

গৌতম ব্রহ্ম: অন্যের শরীরে রোগজীবাণুর সম্ভাব্য ডেরা নিয়ে ত্রাসমিশ্রিত সংশয় তো আছেই। নিজের মাথার চুল থেকে পরনের জামা, গালের দাড়ি, পায়ের জুতো নিয়েও চিন্তার অন্ত নেই আমজনতার। বাইরে হেঁটেচলে বেড়ালে কি করোনা ভাইরাস জামাপ্যান্টে আটকে যেতে পারে? জুতো কতটা ভাইরাস বহন করে? চুলদাড়িতে কি ঘাপটি মেরে থাকতে পারে সার্স-কোভ-২? মানুষের মনে এমন হাজারো প্রশ্নের ভিড়। জোট বেঁধে অ্যারোডায়নামিক্সের আলোয় যার উত্তর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রশ্নোত্তরের ব্যবস্থা করেছে নিউইয়র্কের একটি সংবাদ মাধ্যম।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, জামা-জুতো নিয়ে বেশি দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই। স্বল্প সময়ের জন্য বাড়ি থেকে বেরোলে জামাপ্যান্ট পালটানোরও দরকার নেই। তবে হাসপাতাল বা বাজারের মতো জনবহুল জায়গায় গেলে অবশ্যই জামাকাপড় নিয়ে সতর্ক হতে হবে। কিন্তু সব কিছু লন্ড্রিতে পাঠানো জরুরি নয়। বাড়িতে সাধারণ ডিটারজেন্টে কাচলেই যথেষ্ট। মার্কিন মুলুকের ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিন-এর ডা. অ্যান্ড্রু জনস্কি ও ভার্জিনিয়া টেকনোলজির অ্যারোসল বিজ্ঞানী ডা. লিনসে মারের যুক্তি, “আমরা বাতাসের মধ্যে ডুবে আছি। কিন্তু আমাদের গতি কম থাকায় ভাসমান কোনও জীবাণু জামাকাপড়ে আটকে যাওয়ার সম্ভাবনা কম। ঠিক যেমন গাড়ির গতি কম থাকলে পোকামাকড়ের উইন্ডস্ক্রিনে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা কম থাকে। গতি বাড়লে বাড়ে সম্ভাবনা। অর্থাৎ, গতি কম থাকার জন্যই আমাদের জামাকাপড়ে ভাইরাস লেগে গেলেও তার ‘লোড’ অনেক কম হবে। ফলে, দ্রুত তা শুকিয়ে যাবে।”

Advertisement

corona

Advertisement

মার্কিন গবেষকদের পর্যবেক্ষণ, নোভেল করোনা বাতাসে কয়েক মিনিট বেঁচে থাকতে পারে। তবে মশা-মাছির মতো তা ওড়ে না। বাতাসের অভিমুখে ভেসে যায়। কাছাকাছি কোনও সংক্রামিত মানুষ হাঁচলে বা কাশলে তবেই এই সম্ভাবনা তৈরি হয়। গবেষণা বলছে, ধাতব সামগ্রীর উপর ৪৮ ঘণ্টা এবং প্লাস্টিকের উপর ভাইরাস ৭২ ঘণ্টা বেঁচে থাকতে পারে। ২০০৫ সালে সার্সের সময় কাপড়ের গাউনের উপর পরীক্ষা চলেছিল। তখন দেখা গিয়েছিল, সুতির বস্ত্রের উপর করোনা গোত্রের ভাইরাস জীবন হারায় তাড়াতাড়ি। কারণ, ভাইরাসের গায়ে যে লিপিডের আবরণ, তা সুতির কাপড়ে তাড়াতাডি় শুকিয়ে যায়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাঁচি-কাশির সঙ্গে বেরিয়ে আসা ড্রপলেট আয়তনে খুবই ছোট হয়। বাতাসে ভাসার পর আরও ছোট হয়ে যায়। ফলে সংক্রমণের জন্য যত পরিমাণ ভাইরাল লোড দরকার, তা বাতাসে থাকে না। যদি না কেউ আচমকা আমাদের গায়ের উপর হেঁচে দেয়। তেমন হলে কিন্তু জামাকাপড় ধুয়ে নেওয়াই বাঞ্ছনীয়। মাথার চুল বা গালের দাড়িগোঁফ নিয়েও অনেকে দুশ্চিন্তায়। করোনার বাজারে কেউ কেউ তো বেমালুম নেড়া হয়ে গিয়েছেন! যদিও বিশেষজ্ঞদের মত, পোশাকের মতোই চুলদাড়িতে ভাইরাসের বেশিক্ষণ বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই। তাই যত বার বাইরে যাবেন, ততবার স্নান, মশা মারতে কামান দাগা হয়ে যাবে। উলটে ঠান্ডা লেগে বিপত্তি বাঁধতে পারে। তবে হাতমুখ ধুতে হবে বারবার।

[আরও পড়ুন: রাজ্যে তৈরি কিটে ৫০০ টাকাতেই হবে করোনা পরীক্ষা, স্বীকৃতি দিল ICMR]

জুতো নিয়ে অবশ্য হুঁশিয়ারিবার্তা মজুত। অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেনের কুইন্সল্যান্ড ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির অধ্যাপক লিন্ডিয়া মোরাস্কার মত, এই সময় জুতো নিয়ে বাড়িতে না ঢোকাই ভাল। বরং বাইরে শু র‌্যাকে জুতো রেখে খালি পায়ে ঘরে ঢুকুন। তবে বাজার বা মুদি দোকানে গেলে মাটির সঙ্গে ভাইরাস জুতোর সোলে আটকে থাকার সম্ভাবনা কম বলে জানিয়েছেন ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. সিদ্ধার্থ জোয়ারদার। তাঁর বক্তব্য, কোভিড চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের জুতো নিয়ে সতর্ক হতে হবে। ইউহানে ৫০ শতাংশ স্বাস্থ্যকর্মীর জুতোয় ভাইরাস পাওয়া গিয়েছে। সাবধানতার জন্যই সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং মেনে চলা ভাল। তবে জামাকাপড় নিয়ে দুশ্চিন্তা নৈব নৈব চ।

[আরও পড়ুন:হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন না অশ্বগন্ধা? করোনা যুদ্ধের ব্রহ্মাস্ত্র খুঁজতে শুরু ক্লিনিকাল ট্রায়াল]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ