১৪ আশ্বিন  ১৪৩০  সোমবার ২ অক্টোবর ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

হার্ট অ্যাটাকের আগের সাতদিন, কী করে বুঝবেন হৃদরোগের সংকেত

Published by: Biswadip Dey |    Posted: September 29, 2022 2:31 pm|    Updated: September 29, 2022 2:33 pm

How to keep heart attack away। Sangbad Pratidin

ডা. প্রদীপ ঘোষাল (এসএসকেএম হাসপাতাল): হার্ট অ্যাটাক (Heart attack) একটি গুরুতর সমস্যা। প্রতি বছর অসংখ্য মানুষ এতে মারা যান। হৃৎপিণ্ডের রক্তবাহী নালি, যার মাধ্যমে রক্ত হার্টে পৌঁছয় সেই নালিতে ব্লক হয়ে রক্ত চলাচল ব্যাহত হলেই হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা তৈরি হয়। এই সমস্যায় মৃত্যু হঠাৎ করে হলেও হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ কিন্তু অনেক আগে থেকেই জানান দেয়। শরীরে দীর্ঘদিন লক্ষণ থাকা সত্ত্বেও বেশিরভাগ মানুষের রোগটির পূর্ববর্তী লক্ষণ সম্বন্ধে সঠিক ধারণা নেই। তাই আচমকা বিপদ দেখা দেয়। অ্যাটাকের আগের উপসর্গ সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল থাকা খুব জরুরি।

অ্যাটাক আগে জানান দেয়
হার্ট অ্যাটাকের পূর্ববর্তী লক্ষণ হিসাবে, ভোররাতে হঠাৎ বুকের বাঁ দিকে অস্বস্তি ভাব, বুকে ব্যথা, আপার অ্যাবডোমিনাল অর্থাৎ পেটে ব্যথা, যাকে গ্যাসের ব্যথা ভেবে ভুল করা হয়, সেই ব্যথাটি বাঁ হাত ও পিঠে ছড়িয়ে পড়লে, চোয়ালে ব্যথা, বুকে ভারী ভাব, প্রচন্ড ঘাম ইত্যাদি ৩০ মিনিটের বেশি সময় স্থায়ী হলে রোগীর হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ শুরু হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয়। অল্পতেই ক্লান্ত ও দুর্বল হয়ে যাওয়া, গ্যাস্ট্রো ইনটেস্টিনাল সমস্যার মতো উপসর্গে দেরি না করেই সত্বর চিকিৎসকের দ্বারস্থ হতে হবে।

[আরও পড়ুন: বিবাহিত না হলেও গর্ভপাতের সমান অধিকার, ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ও ‘ধর্ষণ’, বেনজির রায় সুপ্রিম কোর্টের]

উপসর্গ দেখা গেলে, তারপর
উপরিউক্ত লক্ষণগুলো দেখা গেলে তৎক্ষণাৎ ইসিজি করে প্রাথমিক রোগ নির্ণয় করা হয়। অনেক সময় ইসিজিতে ৫০ শতাংশ রোগী সঠিক রিপোর্ট আসে না। যে রোগীর হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ হয়েছে বলে অনুমান করা হয়, তার প্রথম ইসিজি রিপোর্ট সঠিক হলে আধঘণ্টা অন্তর ইসিজির পুনরাবৃত্তি করে রিপোর্টে কোনও পরিবর্তন হয়েছে কিনা দেখা হয়।

ইসিজিতে এসটি লেভেল বেড়ে যাওয়ার অর্থ হল রোগীর হার্টের সমস্যা শুরু হয়ে গিয়েছে। হার্টের পেশি কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেটা দেখার জন্য বুকে ব্যথা বা অস্বস্তির তিনঘণ্টা পর ট্রপ-টি নামক পরীক্ষা করা হয়। যদি এই পরীক্ষার ফলাফল পজিটিভ আসে তবে নিশ্চিতভাবে রোগীর হার্ট অ্যাটাক শুরু হয়ে গিয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয়। তখন অতি সত্বর রোগীকে প্রয়োজনীয় ওষুধ দিয়ে (অ্যাসপিরিন ট্যাবলেট ৩২৫ মি.গ্রা, ক্লোপিডোগগ্রেল ৩০০ মি.গ্রা সঙ্গে প্যান্টোপ্রাজল ৪০ মি.গ্রা এবং অ্যাটোরভ্যাস্টাটিন ৮০ মি.গ্রা খাইয়ে হাসপাতালে ভরতি করে দিতে হবে। এই পর্যায়ে চিকিৎসা করে দিলে সাময়িকভাবে হার্ট অ্যাটাক আটকানো সম্ভব। তাছাড়া ইকো কার্ডিওগ্রাফি করে ওয়াল মোশন অ্যাবনর্ম্যালিটিজ দেখে নেওয়া বাঞ্ছনীয়।

[আরও পড়ুন: ইরাকে ভয়াবহ হামলা ইরানের, মৃত অন্তত ১৩, বিক্ষোভ থেকে নজর ঘোরাতে যুদ্ধের আশ্রয়!]

মানুন, সুস্থ থাকুন
হার্ট অ্যাটাকের মতো বড় বিপদকে প্রতিহত করার জন্য কিছু ভাল অভ্যাস রপ্ত করতে পারলে এর কবল থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব। ডায়াবেটিস ও হাইপারটেনশন নিয়ন্ত্রণে রাখা, প্রতিদিন নিয়ম করে ব্যয়াম ও হাঁটাচলা করা, লিপিড প্রোফাইলে কোনও সমস্যা থাকলে সেটা পরীক্ষা করে নেওয়া ও চিকিৎসা করা, কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইডের ওষুধ নিয়ম করে খাওয়া উচিত। মেডিটেশন ও মর্নিং ওয়াক এইক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বাইরের ফার্স্ট ফুড, তৈলাক্ত খাবার, ধূমপান ও মদ্যপান সম্পূর্ণ বর্জন করলে ভাল। উল্লেখযোগ্য, মেয়েদের ক্ষেত্রে ৩৫ বছর বয়সের পর কন্ট্রাসেপটিভ পিল ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। মিউজিক থেরাপি ও স্বাস্থ্যকর স্থানে ভ্রমণ খুবই উপকারী হার্টের জন্য।

অনুলিখন : মৌমিতা চক্রবর্তী

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে