সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কেরলে এখনও পর্যন্ত ১০ জনের প্রাণ কেড়েছে নিপা ভাইরাস। প্রাণঘাতী এই ভাইরাস অবশ্য আগেই ছোবল বসিয়েছে এ রাজ্যে। ২০০১ সালে শিলিগুড়িতে, ২০০৭ সালে নদিয়ায় নিপার প্রকোপে প্রাণ গিয়েছে ৫০ জনের। এবার তাই কেরল কাণ্ডের পরই বাড়তি সতর্ক বাংলা।
নিপা ভাইরাস কী?
এটা এক নতুন ধরনের জুনোসিস যা মানুষ ও জন্তু দু’পক্ষকেই ঘায়েল করে।
বাহক: প্রধান বাহক ফলখেকো বাদুড়। তবে শূকরও এই ভাইরাস বহন করে।
সূত্রপাত: মালয়েশিয়া। ১৯৯৮ সালে প্রথম মালয়েশিয়ায় এই ভাইরাসের সন্ধান মেলে। শূকর প্রতিপালকদের মধ্যে প্রথম এই রোগ ধরা পড়ে।
বাংলায় আগেই হয়েছে:
১) ২০০১ সালে শিলিগুড়িতে নিপার হামলায় আক্রান্ত হন ৬৬ জন। এর মধ্যে ৪৫ জনের মৃত্যু হয়। মৃতের তালিকায় একজন চিকিৎসকও ছিলেন।
২) ২০০৭ সালের এপ্রিলে নদিয়ায় একই পরিবারের চারজন নিপার ছোবলে প্রাণ হারান। রোগীর রক্ত সংগ্রহ করতে এসে এক ব্লাড কালেক্টরও প্রাণ হারান।
শিলিগুড়িতে মৃত্যুর হার ছিল ৬৮ শতাংশ। নদিয়াতে ১০০ শতাংশ।
সম্প্রতি কেরলের কোঝিকোড়, মল্লপুরম-সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় নিপা ভাইরাসের ছোবলে দশজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যু আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা।
কীভাবে ছড়ায়?
বাদুড় বা বাদুড়ের বিষ্ঠার সংস্পর্শে আসা ফল খেলে বা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে এই রোগ হতে পারে। আক্রান্ত শূকর বা বাদুড়ের থেকেও সরাসরি মানুষের শরীরে এই ভাইরাস প্রবেশ করতে পারে।
উপসর্গ:
১) জ্বর, শ্বাসকষ্ট, প্রবল মাথার যন্ত্রণা, বমি বমি ভাব, কাফ মাসলে ব্যথা, কথা জড়িয়ে যাওয়া, মুখমণ্ডলের পেশি সঙ্কুচিত হওয়া।
২) জ্বর বাড়তে থাকলে ভুল বকা শুরু হয়, স্মৃতিশক্তি লোপ পেতে থাকে, মৃগী রোগীর মতো খিঁচুনি শুরু হয়। এনসেফেলাইটিসের লক্ষণ দেখা যায়। শেষে কোমায় চলে যায় রোগী।
চিকিৎসা:
কোনও ওষুধ বা প্রতিষেধক নেই। উপসর্গভিত্তিক চিকিৎসাই একমাত্র সম্বল। ভেন্টিলেটর সুবিধাযুক্ত আইসিইউ বেডে রেখে রোগীর চিকিৎসা করতে হবে। দু’একজন চিকিৎসক ‘রাইভা ভিরিন’ নামে অ্যান্টি ভাইরাল ট্যাবলেট প্রয়োগ করে সাফল্য পেয়েছেন বলে দাবি।
মোকাবিলা:
বাদুড় ও শূকরের সংস্পর্শে আসা চলবে না। এই দুই প্রাণীর বিষ্ঠা বা মাংস ভক্ষণ নৈব নৈব চ। বাদুড়ে ঠোকরানো ফল বা বাদুড়ের বিষ্ঠামাখা ফল খাওয়া চলবে না। আক্রান্ত রোগীকে আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা করতে হবে।