Advertisement
Advertisement

Breaking News

শিব নয়, বরং বিষ্ণুর সঙ্গেই রয়েছে দেবী দুর্গার নিবিড় যোগ!

মহাভারত মতে বিষ্ণুর একটি নাম দুর্গ। তারই স্ত্রীলিঙ্গবাচক শব্দ দুর্গা। এছাড়াও আর কোথায় দেবী দুর্গার সঙ্গে প্রত্যক্ষ সম্পর্ক দেখা যাচ্ছে বিষ্ণুর?

Not Shiva, Durga Is Rather Associated With Vishnu
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:October 7, 2016 12:11 pm
  • Updated:October 7, 2016 12:11 pm

অনির্বাণ চৌধুরী: রেগে অনেকে যেতেই পারেন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে! পাল্টা প্রশ্নও ছুড়তে পারেন- যোগ যদি না-ই থাকে, তবে দুর্গা প্রতিমার চালচিত্রের ঠিক মাঝখানে শিবের মুখটা বড় করে থাকে কী করতে?
সেই কূটকচালিতে যাওয়ার আগে একবার শুধু ভক্তিভরে দেবীকে প্রণাম করতে চাই- শরণাগত দীনার্ত পরিত্রাণ পরায়ণে/সর্বস্যার্তি হরে দেবী নারায়ণী নমোহস্তুতে।
দেবীবন্দনার এই মন্ত্রটি আমাদের বড় চেনা। আজ দুর্গাষষ্ঠী, ঠিক কাল দুর্গাসপ্তমী থেকেই শুরু হয়ে যাবে অঞ্জলি দেওয়ার পালা। হাত জোড় করে বলব আমরা, যে দেবী শরণাগত আর্ত দীনকে পরিত্রাণ করেন, যিনি সকল বিপদ থেকে উদ্ধার করেন, সেই নারায়ণীকে প্রণাম করি!
নারায়ণী শব্দটির দিকে চোখ আটকে যাচ্ছে কি? যাওয়া তো উচিত! দেবী দুর্গাকে এখানে আমরা বলছি নারায়ণী। অর্থাৎ নারায়ণের অংশসম্ভূতা। আবার এই শ্লোকেরই প্রথমার্ধে যদি দৃষ্টি রাখি, তাহলে কী পাব? দেখব বলা হয়েছে- সর্বমঙ্গল মঙ্গল্যে শিবে সর্বার্থসাধিকে/শরণ্যে ত্রম্বক্যে গৌরী নারায়ণী নমোহস্তুতে- যিনি সর্বমঙ্গলদায়িনী, সর্ব অর্থ সাধিনী, সেই শিবা ত্রম্বকা গৌরী নারায়ণীকে প্রণাম করি। এই শ্লোকে দেবীবন্দনায় যুক্ত হল বটে শিব শব্দটির স্ত্রীলিঙ্গ, কিন্তু পাশাপাশি তাঁকে গৌরী এবং নারায়ণী বলাটাও বাদ রাখা হল না।

durga5_web
ব্রহ্মা, বিষ্ণু, শিবের দেবীবন্দনা

ব্যাপারটা তাহলে কী? এই তো শিবের কথা পেলাম, পেলাম তাঁর পত্নী গৌরীর কথাও!
আমরা দৃষ্টি স্থির করে রাখব নারায়ণীতেই! কেন না, শিবা যখন বলছি, তখন দেবীকে শিব শব্দটির স্ত্রীলিঙ্গেই বন্দনা করা হচ্ছে। শিব অর্থাৎ যিনি জগতের মঙ্গল সাধন করেন। সেই জন্যই দেবী শিবা, কিন্তু শিবপত্নী নন। তিনি তপ্তকাঞ্চনবর্ণা, মানে ফর্সা! তাই তিনি গৌরী। এবং নারায়ণের অংশসম্ভূতা, কাজেই নারায়ণী। এই মন্ত্র চলতে থাকবে এবং আমরা দেখব, স্পষ্ট বলা হচ্ছে, যে দেবী শঙ্খ-চক্র-গদা-পদ্ম ধারিণী, সেই নারায়ণীকে আমরা প্রণাম করি! এই শঙ্খ-চক্র-গদা-পদ্মের অনুষঙ্গেও বিষ্ণুর কথাই কিন্তু মনে পড়বে।
এবং, সেটা অকারণেও নয়। শুরু থেকেই দেবী দুর্গা এবং দুর্গাপূজার সঙ্গে রয়েছে বিষ্ণু এবং তাঁর অবতারদের প্রত্যক্ষ যোগ। ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ জানাচ্ছে, জগতে প্রথম দুর্গার আরাধনা করেন কৃষ্ণ- প্রথমে পূজিতা সা চ কৃষ্ণেন পরমাত্মনা/বৃন্দাবনে চ সৃষ্ট্যাদ্যৌ গোলকে রাসমণ্ডলে। সৃষ্টির প্রথম যুগে পরমাত্মা কৃষ্ণ আদি-বৃন্দাবনের মহারাসমণ্ডলে প্রথম দুর্গাপূজা করেন। এর ঠিক পরেই আমরা দেখব, দৈত্যভয়ে ভীত ব্রহ্মার দুর্গাপূজার কথা। যদিও সেই পূজাও বিষ্ণুমাহাত্ম্য-বর্জিত নয়।

Advertisement
durga1_web
মধু-কৈটভ বধার্থে ব্রহ্মার স্তবে দেবী যোগনিদ্রার আবির্ভাব

শ্রীশ্রীচণ্ডীর প্রথম অধ্যায়ে বেশ সংক্ষেপেই বলা হয়েছে বিষ্ণুর এই মধু-কৈটভ বধের কথা। প্রলয়কালে পৃথিবী এক বিরাট কারণ-সমুদ্রে পরিণত হলে বিষ্ণু সেই সমুদ্রের উপর অনন্তনাগকে শয্যা করে যোগনিদ্রায় মগ্ন হলেন। এই সময় বিষ্ণুর কর্ণমল থেকে মধু ও কৈটভ নামে দুই দৈত্য নির্গত হয়ে বিষ্ণুর নাভিপদ্মে স্থিত ব্রহ্মাকে বধ করতে উদ্যত হল। ভীত হয়ে ব্রহ্মা বিষ্ণুকে জাগরিত করবার জন্যে যোগনিদ্রার স্তব করতে লাগলেন যা কি না দ্বিতীয় দুর্গা পূজা- মধুকৈটভভীতেন ব্রহ্মণা সা দ্বিতীয়তঃ।। এই স্তবটি গ্রন্থে উল্লিখিত চারটি প্রধান স্তবমন্ত্রের অন্যতম। এই স্তবে সন্তুষ্টা দেবী বিষ্ণুকে জাগরিত করলে তিনি পাঁচ হাজার বছর ধরে মধু ও কৈটভের সঙ্গে মহাসংগ্রামে রত হলেন।
অতঃপর এই দেবীই বিষ্ণুর দৈত্যবধের সহায়ক হলেন। বিষ্ণু পাঁচ হাজার বছর যুদ্ধ করেও মধু-কৈটভকে বধ করতে পারেননি। তখন এই দুর্গা, মতান্তরে যোগনিদ্রা বা যোগমায়া দুই দৈত্যকে মোহাচ্ছন্ন করলেন। তারা প্রার্থনা করল বিষ্ণুর হাতে নিজেদের মৃত্যু! এভাবেই দেবীর সাহায্যে মধু-কৈটভকে বধ করতে সক্ষম হলেন বিষ্ণু। সত্য যুগের এই ঘটনার পর থেকে বার বার আমরা বিষ্ণু এবং তাঁর অবতারদের সঙ্গেই দুর্গার নিবিড় যোগ দেখব।
সত্য যুগের পরে এবার আসবে ত্রেতা যুগের কথা। যে যুগে পৃথিবীকে দুর্গাপূজার সঙ্গে, বিশেষ করে অকালবোধনের সঙ্গে পরিচিত করাবেন বিষ্ণুর অবতার রামচন্দ্র। আবার দ্বাপরে যখন কংসের অত্যাচারে ধরিত্রী রোরুদ্যমানা, চোখের জল ফেলতে ফেলতে হাজির হচ্ছেন বিষ্ণুর দরবারে, তখন বিষ্ণু কী বলছেন? বলছেন, ধরিত্রীর এই ভার হরণের জন্য তিনি কৃষ্ণরূপে অবতীর্ণ হবেন পৃথিবীতে। বসুদেব-জায়া দেবকীর অষ্টম গর্ভে। তবে তিনি একাই নন, এ কাজে তাঁর সহায়ক হবেন সব দেবদেবীরাই! বিশেষ করে দুর্গা। বিষ্ণু বলছেন, তাঁর এই বিশেষ শক্তিই জগৎ পরিচালনা করেন, ভুলিয়ে রাখেন মায়ায়। তাই তাঁর অপর নাম মহামায়া। এই বিষ্ণুশক্তি মহামায়াই যোগমায়া নামে অবতীর্ণ হবেন নন্দপত্নী যশোদার গর্ভে।
যথাসময়ে দুর্গা এক শিশুরূপে ভূমিষ্ঠ হলেন যশোদার গর্ভ থেকে। বসুদেব কৃষ্ণকে নন্দালয়ে রেখে সেই কন্যাকে নিয়ে এলেন কারাগারে, তুলে দিলেন কংসের হাতে। কংস যখন শিশুটিকে পাথরে আছড়ে হত্যা করতে উদ্যত, তখন ঘটল এক অলৌকিক কাণ্ড। সেই শিশুকন্যা কংসের হাত ছাড়িয়ে উঠে গেল শূন্যে। এবং প্রকট হলেন অষ্টভুজা দুর্গা। কংসকে কে বধ করবে, সেই দৈববাণী সেরে তিনি চলে গেলেন বিন্ধ্যাচলে। হলেন বিন্ধ্যাচলনিবাসিনী। এই বিন্ধ্যবাসিনীই পরে শুম্ভ-নিশুম্ভ বধের কারণ হবেন।

Advertisement
durga2_web
সম্মিলিত দেবোতেজে অষ্টাদশভুজা মহালক্ষ্মীরূপে দুর্গা জন্ম

সবার শেষে আমরা চোখ রাখব মহিষাসুরমর্দিনীর স্বরূপে। এখানেও দেবীর সঙ্গে দেখা যাবে বিষ্ণুরই প্রত্যক্ষ সম্পর্ক। মহিষাসুর দেবতাদের ত্রস্ত করে তুললে তাঁরা হাজির হলেন ব্রহ্মার কাছে। ব্রহ্মা সব শুনে দেবতাদের নিয়ে দ্বারস্থ হলেন শিবের। শ্রীশ্রীচণ্ডী মহিষাসুর-বধ প্রসঙ্গে ব্রহ্মা এবং শিবের এই কথোপকথনেই স্পষ্ট করে দিয়েছে যে দুর্গা শিবের স্ত্রী নন! কীরকম সেই কথোপকথন?
ব্রহ্মার সব কথা শুনে শিব স্পষ্ট বললেন, মহিষাসুর বধ মোটেও খুব সহজ কাজ নয়। বাধাটা তৈরি করে রেখেছেন স্বয়ং ব্রহ্মাই! তিনি মহিষাসুরকে বর দিয়েছেন, সে কেবল নারীর হাতেই বধ্য! বেশ কথা! কিন্তু সেই নারীটি কে? শিব বলছেন, দেখো ব্রহ্মা, তোমার বা আমার স্ত্রীকে দিয়ে এই কাজ হবে না। হবে না অন্য দেবপত্নীদের দিয়েও। ব্রহ্মাণী বা শিবানী যদি বা যুদ্ধে যাওয়ার কথা ভাবতে পারেন, ইন্দ্রপত্নী শচী তো তাও পারবেন না! তাহলে উপায়? শিবের পরামর্শেই দেবতারা সদলবলে তখন চললেন বৈকুণ্ঠে। অর্থাৎ এখানেই স্পষ্ট হয়ে গেল- দুর্গা শিবের স্ত্রী নন। এবং, শিব নন, দুর্গার আবির্ভাবে মুখ্য ভূমিকা নেবেন বিষ্ণুই!
বৈকুণ্ঠে পৌঁছে দেবতারা দেখলেন বিষ্ণুর গম্ভীর মুখ। মহিষাসুরের অত্যাচার-বৃত্তান্ত শ্রবণে তিনি ক্রোধিত হয়েছেন। অতঃপর সবার প্রথমে বিষ্ণুর মুখমণ্ডল থেকে নির্গত হল তেজোরাশি। এর পরে ব্রহ্মা এবং শিবের শরীর থেকে নির্গত হল তেজ। তেজ নির্গত হল অন্য দেবতাদের শরীর থেকেও। এবং, হিমালয় পর্বতস্থিত ঋষি কাত্যায়নের আশ্রমে সেই জমাট তেজ ধারণ করল এক অষ্টাদশভুজা নারীর রূপ। উল্লেখ না করলেই নয়, দেবীভাগবত বলছে, এই দেবীই অষ্টাদশভুজা মহালক্ষ্মীরূপে মহিষাসুরবধের জন্য যাত্রা করলেন। মহিষাসুরবধ শেষে যিনি বিন্ধ্যাচলে আশ্রয় নেবেন, পূজিতাও হবেন শস্ত্রধারিণী মহালক্ষ্মীরূপে। যখনই বলছি মহালক্ষ্মী, তখনই কি বিষ্ণুর সঙ্গেই মহিষমর্দিনীর প্রত্যক্ষ সম্পর্ক স্থাপিত হচ্ছে না?

durga3_web
মহিষাসুর বধ

দেবীমাহাত্ম্য বা শ্রীশ্রীচণ্ডী দুর্গার যে শেষ ও তৃতীয় অসুর-সংহারের বৃত্তান্ত বলছে, তা শুম্ভ-নিশুম্ভ বধের কথা। মহিষাসুর বধের পরে অন্তর্হিতা হয়েছেন দেবী। আশ্বাস দিয়ে গিয়েছেন, যখনই যখনই অসুরদের হাতে পীড়িত হবে সভ্যতা, তখনই তখনই তিনি তাঁদের সংহার করে পৃথিবীকে ভারমুক্ত করবেন। খেয়াল করে দেখলে বিষ্ণুর কণ্ঠেও ধ্বনিত হয়েছে ঠিক এক কথা। শ্রীমদ্ভাগবতগীতার চতুর্থ অধ্যায় জ্ঞানযোগে এই আশ্বাসই তো দিয়েছেন ভগবান- যদা যদা হি ধর্মস্য গ্লানির্ভবতি ভারত/ অভ্যুত্থানমধর্মস্য তদাত্মানং সৃজাম্যহম্/ পরিত্রানায় সাধূনাং বিনাশায় চ দুষ্কৃতাম্/ ধর্মসংস্থাপনার্থায় সম্ভবামি যুগে যুগে। যাই হোক, দেবীর আবার আবির্ভাবের প্রয়োজন কিন্তু পড়ল, যখন পৃথিবী এবং দেবকুলকে ত্রস্ত করে তুলল শুম্ভ-নিশুম্ভ দুই অসুরভ্রাতা। এমন সময়ে দেবতাদের মনে পড়ল মহিষমর্দিনী দেবীর কথা।
কিন্তু তিনি কোথায়? তিনি যে বলেছিলেন বিপদ হলেই আবির্ভূতা হবেন, তার কোনও লক্ষণ তো দেখা যাচ্ছে না। দেবতারা তাই হিমালয়ের এক স্থানে গিয়ে স্তব শুরু করলেন বৈষ্ণবী শক্তি মহাদেবীর। সেই স্তবগাথা অপরাজিতা স্তোত্র নামে পরিচিত। যার একেবারে শুরুতেই কী বলছেন দেবতারা? জোড়হাতে, আকুল কণ্ঠে তাঁরা বলছেন- যা দেবী সর্বভূতেষু বিষ্ণুমায়েতি শব্দিতা/নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ। সেই দেবীকে বারংবার প্রণাম করি যিনি সাক্ষাৎ বিষ্ণুমায়া। এর কিছু পরেই দেবতারা বিষ্ণুর সঙ্গে দানবদলনী দুর্গার সম্পর্কটি আরও পরিস্ফুট করবেন, বলবেন- যা দেবী সর্বভূতেষু লক্ষ্মীরূপেণ সংস্থিতা! এছাড়া মহাভারতে দুর্গ শব্দটিরও এক অন্য অর্থ মেলে। এখানে বিষ্ণুর সহস্রনাম কীর্তন করতে গিয়ে এক জায়গায় তাঁকে বলা হয়েছে দুর্গ। বুঝতে অসুবিধা হয় না, এই দুর্গ শব্দেরই স্ত্রীলিঙ্গবাচক শব্দ দুর্গা। যিনি আবার সাক্ষাৎ বৈষ্ণবী শক্তিও!
তা হলে কি ধরে নিতে হবে দুর্গা বিষ্ণুপত্নী? কখনই নয়। তিনি শিবেরও পত্নী নন, বিষ্ণুরও নন! বিষ্ণুর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক অন্যত্র। তিনিই বিষ্ণুর শক্তি। তাঁর কৃপাতেই এই জগৎ পালন করেন শ্রীহরি। তাই দেবী বিষ্ণুমায়া। সেই জন্যই মহিষমর্দিনীর আবির্ভাবের সময় সবার প্রথমে বিষ্ণুর মুখমণ্ডল থেকে নির্গত হয় জ্যোতি। আর শিব?

durga4_web
দেবতাদের অপরাজিতা স্তবপাঠে বৈষ্ণবী শক্তি মহাদেবী কৌষিকীর আবির্ভাব

শিবের সঙ্গে শক্তি দেবীর এই যোগাযোগটি নানা সময়ে তৈরি করেছেন পুরাণকার এবং কবিরা। পুরাণকাররা গিয়েছেন সহজ হিসেব মেলানোর খেলায়। তাঁদের দাবি, দেবী কৌষিকী পার্বতীর কোষ থেকে উৎপন্ন হয়ে শুম্ভ-নিশুম্ভ বধ করলেন, অতএব তাঁকে শিবপত্নীর মর্যাদাই দিতে হবে। ওদিকে, শাক্ত কবিরা হাঁটছেন দার্শনিক পথে। তাঁরা বলছেন, দেবী আত্মলীনা প্রকৃতিস্বরূপা। আর শিব তেমনই যোগী। তাই পরস্পর পরস্পরের পরিপূরক। বিশেষ করে শাক্ত কবি রামপ্রসাদ সেন, কমলাকান্ত ভট্টাচার্য এবং আরও অনেকে এই যুক্তির পথ ধরে দুর্গাকে করে তুলেছেন বাঙালির ঘরের মেয়ে। তাঁদের হাতেই শিব হয়েছেন দুর্গার স্বামী। তাই লোকবিশ্বাস অনুযায়ী চালচিত্রের উপরে, একেবারে মাঝের দিক করে রাখা হয় শিবকে। তবে, সাবেকি চালচিত্রে দেখা যায় শিবের অন্য রূপ। সেখানে তিনি প্রতিমার মাথার উপরে অর্থাৎ অন্তরীক্ষে বীণাবাদনরত। পাশেই থাকেন শিবানী গণেশ কোলে নিয়ে। এদিক থেকে দেখলেও শিবের সঙ্গে দুর্গার প্রত্যক্ষ সম্পর্ক স্থাপিত হয় না। সব মিলিয়ে, দুর্গাপূজার পাঁচ দিনে যে পবিত্র শ্রীশ্রীচণ্ডী পাঠ হয়, তা আমাদের বলে অন্য কথাই। বলে, শিব নয়, বরং বিষ্ণুর সঙ্গেই রয়েছে দেবী দুর্গার নিবিড় যোগ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ