সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিল্লির সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা থেকে শুরু। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে টেক জায়ান্ট Facebook-এর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ প্রকাশিত হয়েছে। বলা হয়েছে, বিজেপি-RSS নিয়ন্ত্রণ করে এই সোশ্যাল মিডিয়াকে। বিজেপির ভয়ে ভারতে নেতাদের উসকানিমূলক মন্তব্য, হিংসাত্মক ভিডিওর উপর নিষেধাজ্ঞা চাপায় না মার্ক জুকারবার্গের (Mark Zuckerberg) সংস্থা। যা নিয়ে উত্তাল ভারতের জাতীয় রাজনীতি। মার্কিন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনকে হাতিয়ার করে কেন্দ্রকে বিঁধেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। এবার সাফাই দিতে আসরে নামল Facebook। দ্ব্যর্থহীন ভাষায় নিজেদের উপর ওঠা অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে সংস্থার বক্তব্য, Facebook দল-রং না দেখে বিদ্বেষমূলক মন্তব্যে নিষেধাজ্ঞা চাপায়। কোনও দলের প্রভাবে নয়। স্বতন্ত্র হয়ে কাজ করে টেক জায়ান্ট।
প্রসঙ্গত, ফেসবুকে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য পোস্ট করেছিলেন এক বিজেপি নেতা। তারপরেও তাঁর অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্ট সোশ্যাল মিডিয়া সাইটটি। ব্যবসায়িক মুনাফার কথা ভেবেই এমন পদক্ষেপ করেছে ফেসবুক। শুক্রবার এমনই চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট সামনে এনেছে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল (Wall Street Journal)। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে তেলেঙ্গানার বিজেপি বিধায়ক রাজা সিংয়ের বিদ্বেষমূলক মন্তব্য ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছিল। কিন্তু বিধায়কের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। অথচ ফেসবুকে বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে কেন তেমন পদক্ষেপ করল না ফেসবুক? তার ব্যাখ্যাও ওই প্রতিবেদনে দেওয়া হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘Facebook নিয়ন্ত্রণ করছে বিজেপি-RSS’, মার্কিন মিডিয়ার প্রতিবেদনকে হাতিয়ার করে সরব রাহুল]
এরপরই কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয় বিরোধীরা। প্রথম তোপ দাগেন রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। রাহুল নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে লেখেন, “ভারতের ফেসবুক, টুইটার ও হোয়াটসঅ্যাপকে নিয়ন্ত্রণ করে বিজেপি ও আরএসএস। তাঁরাই মিথ্যা খবর প্রচার করে নির্বাচনকে প্রভাবিত করে। শেষপর্যন্ত মার্কিন মিডিয়া সত্য উদঘাটন করল।” মার্কিন মিডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতে ফেসবুকের পাবলিক পলিসি বিষয়ক আধিকারিক আঁখি দাস নাকি বলেছিলেন, কেন্দ্রের শাসকদলের নেতাদের বিরুদ্ধে ‘বিদ্বেষ রোধ আইন’ প্রয়োগ করলে ভারতের বাজারে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে পারে সংস্থা। সে কারণেই কর্মীদের তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন, ওই বিধায়কের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না।
উল্লেখ্য, দিল্লির সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময়েও দেখা গিয়েছিল, কপিল মিশ্র, তেজিন্দর পাল সিং বগ্গার মতো বিজেপি নেতাদের উসকানিমূলক-বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য দাবানলের মতো ফেসবুকে ছড়িয়েছে। কিন্তু মার্ক জুকারবার্গের সংস্থা তা ছড়ানো নিয়ে কোনও পদক্ষেপই করেনি। বিবৃতি দিয়ে তারা যতই বলুক, বিদ্বেষমূলক বা হিংসাত্মক ভিডিও-পোস্ট আটকে দেওয়া হয়। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে তার উলটোটা। বরং সেই পোস্টগুলি দাবানলের মতো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়েছে। বিজেপি নেতাদের প্রচুর অনুরাগীদের পেজ থেকেও এধরনের ভুয়ো, বিদ্বেষমূলক পোস্ট ছড়ানো হয়। হোয়াটসঅ্যাপে (WhatsApp) প্রচুর বিজেপির গ্রুপেও উসকানিমূলক মেসেজ ছড়ানো হয়। সেখানেও কোনওদিন ব্যবস্থা নেয়নি Facebook।
[আরও পড়ুন: চিনা সংস্থার কাছে থেকে TikTok-এর মালিকানা কিনতে চলেছে Reliance Jio!]
Highlights
- দ্ব্যর্থহীন ভাষায় নিজেদের উপর ওঠা অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে সংস্থার বক্তব্য, Facebook দল-রং না দেখে বিদ্বেষমূলক মন্তব্যে নিষেধাজ্ঞা চাপায়।
- কোনও দলের প্রভাবে নয়। স্বতন্ত্র হয়ে কাজ করে টেক জায়ান্ট।
- অভিযোগ, কেন্দ্রের শাসকদলের নেতাদের বিরুদ্ধে ‘বিদ্বেষ রোধ আইন’ প্রয়োগ করলে ভারতের বাজারে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে পারে সংস্থা।