সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রিলায়েন্স কর্তা মুকেশ আম্বানি ভারতের বাজারে কার্যত বিনামূল্যে জিওফোন আনার কথা ঘোষণা করতেই হইচই পড়ে গিয়েছে অনুরাগীদের মধ্যে। অনেকেই অপেক্ষা করে রয়েছেন কবে ফোনটি হাতে পাবেন বলে। জিও-র নয়া VoLTE ফিচার ফোনে এমন বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে যেগুলি সাধারণ ফিচার ফোনে কোনওদিন পাওয়া যায়নি। যেমন, ভয়েস কন্ট্রোল, জিও মুভির সাহায্যে সিনেমা দেখা বা এইচডি ভয়েস কল।
কিন্তু জিওফোনে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করা যাবে না জানতে পেরে অনুরাগীদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। যাঁরা ফোনটির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে ছিলেন, তাঁরাও বলতে শুরু করেন, ‘হোয়াটসঅ্যাপের মতো জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করা না গেলে নতুন ফোন কিনে লাভ কী?’ সোশ্যাল মিডিয়া, টুইটারে আছড়ে পড়তে থাকে ক্ষোভ। অনুরাগীদের ক্ষোভের আঁচ টের পান জিও কর্তারাও। সেই ক্ষোভে প্রলেপ দিতেই সম্ভবত এবার জিওফোনেও হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করার সুবিধা মিলতে চলেছে। একটি রিপোর্টকে ঘিরে টেক দুনিয়ায় শুরু হয়েছে তুলকালাম।
[‘ফ্রি’-তে JioPhone হাতে পেতে এখনই করুন এই কাজটি]
শোনা যাচ্ছে, জিওফোনেও যাতে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করা যায়, সেই বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছেন জিও কর্তারা। তাঁরা যোগাযোগ করেছেন হোয়াটসঅ্যাপ সংস্থার ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে। ‘ফেসবুক লাইট’-এর মতো হোয়াটসঅ্যাপেরও কোনও ‘লাইট’ না ‘নেটিভ’ ভার্সন জিওফোনে ব্যবহার করা যাবে কি না, সে বিষয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা। শোনা যাচ্ছে, রিলায়েন্স ও হোয়াটসঅ্যাপের ইঞ্জিনিয়াররা এই বিষয়ে একযোগে কাজ শুরু করতে পারেন। ‘ফ্যাক্টর ডেইলি’-র রিপোর্টে জিও-র এক সূত্রকে উদ্ধৃত করে জানানো হয়েছে, ‘রিলায়েন্সের সঙ্গে ফেসবুকের মতো সংস্থার সম্পর্ক বেশ ঘনিষ্ঠ। জিওফোনে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করায় কিছু প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সেই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতেই এবার আসরে নেমে পড়েছেন দুই সংস্থার শীর্ষ কর্তারা।’
[Jio-কে টেক্কা দিতে এবার Airtel কী আনছে জানেন?]
ভারতে হোয়াটসঅ্যাপ পা রেখেছে খুব বেশিদিন হয়নি। কিন্তু ইতিমধ্যেই ভারতের এক নম্বর জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ হয়ে উঠেছে ফেসবুক অধীনস্থ এই সংস্থাটি। জিওফোন এই অ্যাপটি সাপোর্ট না করার মূল কারণ হল ফিচার ফোনটির অপারেটিং সিস্টেম। KaiOS আসলে ফায়ারফক্সের একটি লঘু সংস্করণ। জিওফোনে হোয়াটসঅ্যাপ চালাতে এই প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জকে অতিক্রম করতে হবে। হোয়াটসঅ্যাপের ইঞ্জিনিয়াররা এখন KaiOS অপারেটিং সিস্টেমেও কী করে এই মেসেজিং অ্যাপ চালানো যায়, সেই বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছেন।
কিন্তু কেন এই একটি অ্যাপ নিয়েই মুকেশ আম্বানির সংস্থার এত মাথাব্যথা? কারণ, দেশজুড়ে সমস্ত গ্রাহকদের আকর্ষণ করতে নয়া জিওফোনে হোয়াটসঅ্যাপের কোনও বিকল্প নেই। হোয়াটসঅ্যাপ না থাকলে নতুন প্রজন্মের গ্রাহকদের মধ্যে অনেকেই জিওফোন কিনতে চাইবেন না। তা সে দাম যতই কম হোক না কেন! জিও-র নিজস্ব মেসেজিং অ্যাপ, ‘জিওচ্যাট’ এখনও ততটা জনপ্রিয় নয়। হোয়াটসঅ্যাপকে টক্কর দেওয়ার জন্য তাই জিওচ্যাটের উপর বাজি রাখছেন না মুকেশ আম্বানি। বর্তমানে ভারতের বহু গ্রাম রয়েছে যেখানে ঠিকমতো জল মেলে না। কিন্তু সেখানেও সাধারণ মানুষ হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করেন। বহু সংস্থাই গ্রাহকদের কাছ থেকে সরাসরি প্রতিক্রিয়া পেতে ভরসা রাখছেন হোয়াটসঅ্যাপের উপর। আর তাই এবার সবদিক খতিয়ে দেখে জিওফোনেও হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করার সুবিধা দিতে চান মুকেশ আম্বানি।