সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মুখে বলি বটে- দীপাবলির আলোকবাতিরা মুছে দিল সব আঁধার! কিন্তু, নিজেই বলুন তো, ভরপুর বিদ্যুতের আলো যেখানে বছর শাসন করে শহরে, সেখানে কি আঁধার থাকে? না কি আঁধার থাকার জো আছে?
অতএব, এই বছরের দীপাবলিতে আলোর মধ্যে নতুন করে আলো না-ই বা দিলেন! না-ই আটকে রইলেন চেনা গণ্ডির চৌহদ্দিতে। বাজির আওয়াজ থেকে বরং কানকে দিন মুক্তি! বারুদের ধোঁওয়া থেকে সুরক্ষিত থাকুক শরীর! আর, চোখ জুড়ে থাকুক ঘন কালো অন্ধকারের মধ্যে ইতিউতি জেগে থাকা আগুনের আলো। পাহাড়ের ঢালে দীপাবলির আলো, জঙ্গলের গাছের তলায় লন্ঠনের আলো, কুটিরঘরের দাওয়ায় প্রদীপের আলো। সেই গ্রামে যা পর্যটকের চোখ থেকে নিজেকে লুকিয়ে রেখেছে খুব সন্তর্পণে।
গ্রামের নামও তাই হিডেন ভিলেজ। মুম্বই-নাসিক রাজপথের উপর একফালি গ্রাম। যাকে ঘিরে রয়েছে অরণ্যের আদিমতা, ঝরনার শীতলতা। যেখানে সকাল আসে পাখির ডাকের হাত ধরে। সে বিদায় নিলে প্রতিটি সকাল-ফুরানো আঁধারে যেখানে আলো দেখায় সাঁঝবাতিরা। সেই রূপকথার গ্রামেই সার্থক হতে পারে এ বছরের দীপাবলি।
তবে, গ্রামের নাম হিডেন ভিলেজ হয়েছে লোকমুখে। এমন ভাবে নিজেকে আড়াল করে রাখে এই গ্রাম যে একঝলক দেখে তার অস্তিত্ব টের পাওয়া মুশকিল! গ্রামকে আদতে সবাই চেনে সাখরোলি নামে। মুম্বই-নাসিক রাজপথ ধরে কিলোমিটার দুয়েক গেলেই সে ধরা দেবে চোখের সামনে। সরিয়ে দেবে গোপন থাকার অবগুণ্ঠন। আর আপনার চোখে পড়বে তার মদির সবুজ রূপরাশি।
পায়ে পায়ে যত এগিয়ে যাওয়া যায় হিডেন ভিলেজের দিকে, ততই চমকে উঠতে হয়। সবুজের এই মাধুর্যের তুলনা মেলা ভার। লাল মাটি ছুঁয়ে এক ফালি বাঁশ-কাঠের বেড়া, তার পরেই শুধু সবুজ আর পাহাড়। সেই বেড়ার কাছে গেলেই কানে ধরা দেবে জলের আওয়াজ। পাহাড়ের বুক চিরে, রুক্ষ পাথরের উপর দিয়ে সেই বয়ে চলেছে সেই ঝরনা। মনের আনন্দেরই মতো!
সেই আনন্দই আঁধার নামলে দেখা দেবে দীপাবলির আলো হয়ে। শহরের আরও হাজার আলোর বুকে মুখ লুকিয়ে থাকা টিমটিমে আলো হয়ে নয়, আগুনের পরশমণি হয়ে। এর চেয়ে ভাল দীপাবলি আর কীই বা হতে পারে!
কী ভাবে যাবেন: ট্রেনে করে চলে আসুন মুম্বই। সেখান থেকে মাত্র ঘণ্টা দেড়েকের দূরত্ব গাড়িতে পেরিয়ে এলেই আপনি পৌঁছে যাবেন প্রকৃতির কোলে লুকানো এই গ্রামে।
কোথায় থাকবেন: গ্রামেই রয়েছে থাকার ব্যবস্থা। নানা বাজেটের নানা ঘর রয়েছে। কোনওটায় নিখাদ কুটিরবাসের আমেজ, কোনওটায় তার মধ্যেই সাজানা-গোছানো নাগরিক জীবনের বিলাস। বাজেট শুরু ৮০০ টাকা থেকে।