রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: এবার পুজোয় টোটোপাড়ার অতিথি হতে চলেছেন পর্যটকরা। কারণ, জলদাপাড়ার ট্রলিলাইন কার সাফারির সীমানা বাড়িয়ে এবার ভুটান পাহাড়ের কোলে টোটোপাড়ায় নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান কর্তৃপক্ষ। ফলে এবার জঙ্গল সাফারিতে বেরিয়ে পৃথিবীর আদিম জনজাতি টোটো সম্প্রদায়ের মানুষেরা সঙ্গে দেখা ও তাঁদের সঙ্গে আলাপচারিতার সুযোগ মিলবে পর্যটকদের। উদ্যান কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনায় খুশি পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
[আরও পড়ুন: ‘একদিন সফল হবেই মিশন চন্দ্রযান’, আশাবাদী বাংলার বিজ্ঞানী চন্দ্রকান্তের বাবা]
আলিপুরদুয়ারের জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে দুটি কার সাফারি চলে। একটি কার সাফারি জঙ্গলের ভিতর বন্যপ্রাণীদের বিচরণ ক্ষেত্রে চালানো হয়। এই জঙ্গল সাফারিতে সাধারণত বন্য জন্তু-জানোয়ারদের হামেশাই দেখতে পান পর্যটকরা। আরেকটি কার সাফারিতে ট্রলিলাইন ধরে লংকাপাড়া বিট পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়। এই পথে তোর্ষা নদীর সৌন্দর্য্য ও জঙ্গল দেখার সুযোগ রয়েছে। মাঝে মধ্যে বন্যপ্রাণের দেখাও মিলে যায়। কিন্তু এবার এই জঙ্গল সাফারির সীমানা বাড়িয়ে তা টোটোপাড়া পর্যন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছে বনদপ্তর। পৃথিবীর আদিম জনজাতি টোটোদের কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকে এই পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত করতেই এই চিন্তাভাবনা। জলদাপাড়া বন্যপ্রাণ বিভাগের ডিএফও কুমার বিমল জানান, “এই পথে জঙ্গল সাফারি সেভাবে জনপ্রিয় হচ্ছে না। সেই কারণে জঙ্গল সাফারিকে আমরা আরও আকর্ষনীয় করার কথা ভাবছি। লংকাপাড়া থেকে বাড়িয়ে সাফারির সীমানা টোটোপাড়া পর্যন্ত নিয়ে যেতে চাইছি। ফলে পৃথিবীর আদিম জনজাতি টোটোদের দেখার ও তাঁদের সংস্কৃতির সঙ্গে সংযোগ তৈরি করার সুযোগ পাবেন পর্যটকরা।”

জানা গিয়েছে, ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ফের পর্যটকদের জন্য খুলে যাবে জঙ্গল। তাই অবিলম্বেই জঙ্গল সাফারিকে আরও আকর্ষনীয় করার কথা ভাবা হচ্ছে। আলিপুরদুয়ারের মাদারিহাট-বীরপাড়া ব্লকের শেষ প্রান্তে ভুটান সীমান্তে এক চিলতে পাহাড়ি গ্রামে পৃথিবীর আদিম জনজাতি টোটোদের বাস। ভারতবর্ষে একমাত্র আলিপুরদুয়ারের টোটোপাড়াতেই এই জনজাতীর বাস রয়েছে। আর নিরাকার ভগবানে বিশ্বাসী টোটো সম্প্রদায়ের মানুষেরা বরাবরই গবেষনার একটি অন্যতম বিষয়। তাই টোটোপাড়া মানেই দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে এক অন্য আকর্ষণ।
[আরও পড়ুন: সাধের লুচিই কাড়ল প্রাণ, টিফিন খেতে গিয়ে বনগাঁয় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মৃত্যু ব্যক্তির]
এ প্রসঙ্গে জলদাপাড়া লজ ওনার্স অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী সদস্য সঞ্জয় দাস বলেন, “অসাধারন উদ্যোগ। ইতিহাস জড়িত ট্রলিলাইন কার সাফারিতে পৃথিবীর আদিম জনজাতি টোটোদের যুক্ত করলে পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ হয়ে উঠবে এই সাফারি। এর ফলে পাহাড়ের কোলে থাকা টোটোদেরও আর্থিক উন্নতিও হবে।” পরিকল্পনার বাস্তব রূপায়নে বনদপ্তরকে সবরকমভাবে সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। অর্থাৎ এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।