অরূপ বসাক, মালবাজার: করোনা কাঁটায় প্রায় দু’বছর ঘরবন্দি সকলে। আপাতত রাজ্যে কোভিড পরিস্থিতি অনেকটাই ভাল। আবার সামনেই পুজো। এমন সময় কি ঘরে আর মন টেকে? পাহাড়-পাহাড় করছে মনটা। পুজোয় ভিড় ছাড়িয়ে হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করছে কুয়াশা মাখা অচেনা পথের বাঁকে। সেই সমস্ত ভ্রমণপিপাসুদের জন্য দরজা খুলে দিয়েছে কালিম্পং (Kalimpong Tourism) জেলার ছোট গ্রাম সুন্তালে।
প্রায় ৬ হাজার মিটার উঁচুতে পাহাড়ের কোলে সবুজে ঘেরা এই গ্রাম। ঘরের পর্দা সরালেই উঁকি দেবে তুষারশুভ্র কাঞ্চনজঙ্ঘা। কান পাতলেই শোনা যাবে চেনা-অচেনা এক ঝাঁক পাখির ডাক। আর এসবের মাঝেই চারিদিক জড়িয়ে থাকবে অদ্ভুত এক নিস্তব্ধতা। এই মরসুমে সুন্তালে এলে দুর্গাপুজোর ফ্লেভার মিস করবেন, এমনটা যেন ভাববেন না। আগত পর্যটকদের পুজোর স্বাদ দিতে তৈরি হচ্ছে এখানকার হোম স্টে-গুলি।
কখনও রোদ আবার কখনও ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। দিনের তাপমাত্রাও আরামদায়ক। কিন্তু দুপুরের পর থেকে নামছে উষ্ণতার পারদ। দোসর হচ্ছে কুয়াশাও। এমন আবহে প্রিয়জনের সঙ্গে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে দিলেও মন ভরে না। তাই পুজোর আগে পর্যটকদের জন্য সাজিয়ে তোলা হচ্ছে এখানকার হোম স্টে এবং লজগুলো। গরুবাথান ব্লকের সুন্তালে (Suntale) থেকে মাত্র ১ কিলোমিটার দূরে পর্যটকদের জন্য তৈরি হয়েছে ইষ্টি কুটুম হোম স্টে। পাহাড়ের কোলে হোম স্টেগুলিতে সাধারণের ঘরের পাশাপাশি রয়েছে তাঁবুতে থাকার ব্যবস্থাও।
খাওয়ার পাতে মিলবে তাজা শাক-সবজি। পুজোর সময় থাকছে আরও বিশেষ ব্যবস্থা। বাঙালিদের মন কাড়তে পাতে পড়বে দই-মিষ্টি-পায়েস। হোম স্টে চত্বরে বাজবে ঢাক। স্থানীয়রা বলছেন, সুন্তাল থেকে কিছুটা হেঁটে গেলেই একটা দুর্গাপুজো (Durga Puja 2021) হয়। ইচ্ছে করলে সেখানে অষ্টমীর অঞ্জলিটাও সেরে ফেলতে পারেন। সুন্তালের হোম স্টে থেকে দেখা মিলবে কাঞ্চনজঙ্ঘার। হোম স্টের চত্বর থেকে দেখা যাবে সূর্যদয়, সূর্যাস্ত। কপাল ভাল থাকলে দেখা মিলতে পারে রামধনুর। এখান থেকে খুব কাছে লাভা, লোলেগাঁও, ঝান্ডি, লুনসেল, মাঞ্জিং। গাড়ি নিয়ে চট করে ঘুরে আসতে পারেন এই সমস্ত এলাকায়।
ইষ্টি কুটুম-এর দায়িত্বে থাকা সুভম পোদ্দার বলেন, “পর্যটকদের জন্য পুজোর আগে নতুন করে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। এখানে মোট ১৪ টি রুম রয়েছে। প্রত্যেকটি রুম থেকে দেখা যাবে পাহাড়ের অপরূপ সৌন্দর্য। তাছাড়া পুজোর চারদিন, পর্যটকদের জন্য থাকবে বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা৷” তিনি আরও জানান, রাত জেগে ক্যাম্প ফায়ারও করারও রয়েছে সুযোগ।
ভাবছেন তো কীভাবে যাবেন? রোদ-ছায়ায় ঘেরার এই পাহাড়ি গ্রামে? যে কোনও ট্রেনে চলে আসুন নিউ ম্যাল স্টেশনে। সেখান থেকে গাড়ি বুক করে সোজা পৌঁছে যেতে পারবেন সুন্তালে। ৪ জনের গাড়ির খরচ পড়বে মোটামুটি ৮০০ টাকা। আবার স্টেশন থেকে শেয়ার গাড়িতে গরুবাথান এসে সেখান থেকেও গাড়ি রিজার্ভও করতে পারেন। তবে বহু হোম স্টে-র নিজস্ব গাড়ি রয়েছে।
থাকা-খাওয়ার খরচ- সাধারণত ডবল বেডের রুমের একদিনের ভাড়া ১৮০০ টাকা। দুজনের সারাদিনের খাওয়া দাওয়ার খরচ পড়বে ৬০০ টাকা। তাহলে আর দেরি কেন, রোদ-কুয়াশায় মোড়া সুন্তালের জন্য বেড়িয়ে পড়ুন আজই।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.