BREAKING NEWS

১১ চৈত্র  ১৪২৯  রবিবার ২৬ মার্চ ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজমে আগ্রহী? জঙ্গলমহলে চালু হচ্ছে নতুন আটটি ট্রেকিং রুট

Published by: Sangbad Pratidin Digital |    Posted: January 14, 2018 10:59 am|    Updated: May 27, 2020 3:34 pm

WB Govt to open 8 new tracking route in the state

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: গত কয়েক দিনে টোটোয় বিভিন্ন বেড়ানোর স্পটের সঙ্গে আপনাদের আলাপ হয়েছে। উত্তরের ডুয়ার্স হোক বা পশ্চিমের পুরুলিয়া কিংবা কোনও সৈকতকেন্দ্র। এবার অন্যরকম সফরের বৃত্তান্ত। যারা অ্যাডেভেঞ্চারপ্রেমী তাদের জন্য সুখবর। পশ্চিমাঞ্চলের চার জেলার দুর্গম পাহাড়-জঙ্গলের সৌন্দর্য্যকে ‘অ্যাডভেঞ্চার’ হিসাবে তুলে ধরতে রাজ্যে নয়া আটটি ট্রেকিং রুট চালু করছে বন দপ্তর। আগামী দিন সাতেকের মধ্যে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বীরভূম ও বর্ধমানে ট্রেকিং রুট চালু হয়ে যাচ্ছে। যে রুটগুলি পশ্চিমাঞ্চলের চার জেলার বন দপ্তরের পাঁচটি ডিভিশনের মধ্যে রয়েছে।

[নদীর এপারে হাতি ওপারে আপনি, ডামডিম যেন স্বপ্নের ঠিকানা]

এই আটটি ট্রেকিং রুটের মধ্যে পুরুলিয়া ডিভিশনের বেড়ষা থেকে অযোধ্যা পাহাড়, অযোধ্যা হিলটপ থেকে চন্দ্রি পাহাড় একদা মাওবাদীদের ডেরা ছিল। সেই দুর্গম এলাকাকেই এবার ‘অ্যাডভেঞ্চার টুরিজম’এর আনন্দ দিতে পর্যটক ও পর্বতারোহীদের কাছে এই ট্রেকিং রুট খুলে দিচ্ছে রাজ্যের বন বিভাগ। পুরুলিয়ায় এই দু’টি ট্রেকিং রুট ছাড়াও গড়পঞ্চকোট পাহাড়েও একটি ট্রেকিং রুট চালু হচ্ছে। এছাড়া বাঁকুড়া (উত্তর) ডিভিশনের ওয়াটার ধারা থেকে শুশুনিয়া পাহাড়, বিহারীনাথ পাহাড় এবং এই জেলারই পাঞ্চেত ডিভিশনের জয়পুর ওয়াচ টাওয়ার থেকে বাসুদেবপুর পিলখানা, বীরভূমের বল্লভপুর ওয়াইল্ড লাইফ স্যাঞ্চুয়ারি, বর্ধমানের আরা-দেউলি রুটগুলি ট্রেকিংয়ের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া পুরুলিয়া ডিভিশনের কোটশিলা বনাঞ্চলের মুরগুমা জলাধারে ওয়াটার স্পোর্টসও চালু করছে বন দপ্তর। সেইসঙ্গে নিতুড়িয়ার গড়পঞ্চকোটে তৈরি করা হচ্ছে প্রকৃতি বীক্ষণ কেন্দ্র। পাহাড়-জঙ্গল ঘেরা এই বনাঞ্চলগুলিতে আরও বেশি করে পর্যটক টানতেই রাজ্যের বন বিভাগ এই উদ্যোগ নিচ্ছে।

trekking-in-purulia

[কীসের টানে সাগরে পুণ্যস্নানে ছোটেন লক্ষ লক্ষ মানুষ?]

এই আটটি ট্রেকিং রুটেই পানীয় জল, রেস্টশেড, ডাস্টবিন, শৌচাগার, ওভার নাইট ক্যাম্পিং সাইট তৈরি করা হচ্ছে। প্রায় আট থেকে পনেরো কিমির মধ্যে এই ট্রেকিং রুটগুলিতে যে সমস্ত মন্দির, হেরিটেজ বিল্ডিং, পুরাকীর্তি, দুর্গ, পাহাড়ি ঝরনাগুলি পড়বে তা আলাদাভাবে তুলে ধরবে বন দপ্তর। এই ট্রেকিং রুটে যে সব এলাকা দিয়ে বন্য প্রাণীদের অবাধ যাতাযাত সেইসব এলাকায় পর্যটক-পর্বতারোহীদের সতর্ক করতে একাধিক বোর্ডে বন্যপ্রাণী করিডর বলে উল্লেখ করে দেবে সংশ্লিষ্ট দপ্তর।

[গড়পঞ্চকোট কথা: যেখানে নাগালে প্রকৃতি, পিছনে ইতিহাস]

ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ফরেস্ট ডেভলপমেন্ট এজেন্সির ওয়েবসাইট থেকে এই ট্রেকিং রুটগুলিতে ভ্রমণের জন্য বুকিং করা যাবে। ওই ওয়েবসাইটের ওয়েস্ট বেঙ্গল হাইকিং রুটের অপশন থেকেই বুকিং হবে বলে দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে। নাম ও ফোন নম্বর দিয়ে সেখানে বুকিং করার সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মোবাইল নম্বরে একটি লিঙ্ক যাবে। সেই লিঙ্ক ডাউনলোড করে গা-ছমছমের ওই ট্রেকিং রুটের নানা রহস্য আগেই জেনে যাবেন পর্বতারোহী থেকে পর্যটকরা। প্রত্যেকটি ট্রেকিং রুটেই একজন করে বনকর্মী মোতায়েন থাকবেন। তাদেরকে সঙ্গ দেবে এলাকার বন সুরক্ষা কমিটি। এই ট্রেকিং রুট থেকে বন বিভাগের যে মুনাফা হবে, তার ৬০ শতাংশ টাকা একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বন সুরক্ষা কমিটির কাছে যাবে। বাকি ৪০ শতাংশ ঢুকবে বন দপ্তরের ঘরে। পুরুলিয়া ডিভিশনের ডিএফও রামপ্রসাদ বদানা বলেন, “অ্যাডভেঞ্চার টুরিজম হিসাবেই দক্ষিণবঙ্গের এই আটটি জায়গায় আমরা নতুন ট্রেকিং রুট খুলে দিচ্ছি। কিছুদিনের মধ্যেই এই ট্রেকিং রুটগুলি চালু হয়ে যাবে”। প্রতিটি ট্রেকিং রুটের পরিকাঠামোগত উন্নয়নে ২ লক্ষ টাকা করে বরাদ্দ করা হয়েছে। বন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, খুব শীঘ্রই উত্তরবঙ্গেও আরও কয়েকটি ট্রেকিং রুট চালু হচ্ছে। পুরুলিয়া-বাঁকুড়ার বিভিন্ন পাহাড়ে পর্বতারোহীরা ট্রেকিং করলেও এভাবে বন দপ্তরের তত্ত্বাবধানে দক্ষিণবঙ্গে অতীতে কোনও ট্রেকিং রুট ছিল না। এই ট্রেকিং রুটগুলিতে ভ্রমণের বুকিং করলেই বন দপ্তরই তাদের খাওয়া-দাওয়া এমনকী হোম স্টে’র ব্যবস্থা করবে। সেইসঙ্গে থাকবে গাইডও। তবে সবকিছুই হবে পরিবেশবান্ধব। একইভাবে মুরগুমা জলাধারে ওয়াটার স্পোর্টস চালু করার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। খুব শীঘ্রই গড়পঞ্চকোটে প্রকৃতি বীক্ষণ কেন্দ্র গড়ার কাজও শুরু হবে।

ছবি: অমিত সিং দেও

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে