সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একেই হয়তো বলে অসম্ভবকে সম্ভব করা। যা করে দেখালেন জম্মুর (Jammu) একুশ বছরের তরুণ দানিশ ল্যাঙ্গার (Danish Langer)। কয়েক বছর আগেই জটিল রোগে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হন তিনি। সেই ছেলেই ভারতীয় সেনার (Indian Army) কঠিন পরীক্ষায় সফল হয়ে গোটা দেশকে অবাক করে দিলেন।
গালিয়ান ব্যারে সিনড্রম, যা জিবিএস (GBS) নামে পরিচিত চিকিৎসক মহলে, তাই হয়েছিল দানিশের। এই জটিল অসুস্থতায় রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতাই ভিলেন হয়ে ওঠে, শরীরের উপর আক্রমণ চালায়। এতে বিশেষ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় স্নায়ু। ২০১৭ সালে জিবিএসে আক্রান্ত হয়েছিলেন দানিশ। এর ফলেই তিনি পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েন। যে রোগের চিকিৎসা হয় প্লাজমা থেরাপির মাধ্যমে।
একদিকে এমন কঠিন রোগ, অন্যদিকে ছিল ছোটবেলার স্বপ্ন- বড় হয়ে সেনাবাহিনীতে যোগ দেবেন, দেশরক্ষা করবেন। সবাই ধরে নিয়েছিল ইচ্ছে থাকলেও শরীরের যুদ্ধে পরাজিত হবেন জম্মুর বাসিন্দা এই তরুণ। এমনকী পরিবারেরও তেমনটাই ধারণা ছিল। কিন্তু সেই ভাবনাকে ভুল প্রমাণ করে দিলেন দানিশ ল্যাঙ্গার। সম্প্রতি সেনা বাহিনীর পরীক্ষায় দারুণ ফল করেছেন। উত্তরাখণ্ডের সেনা অ্যাকাডেমি থেকে ২৮৮ জন সফল পরীক্ষার্থীদের একজন তিনিও।
ছেলের কৃতিত্বে স্বভাবতই গর্বিত বাবা-মা। দানিশের মা অঞ্জু ল্যাঙ্গার জানান, ছোট থেকেই সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার স্বপ্ন দেখত দানিশ। ফলে ওকে সেনাস্কুলেই ভরতি করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ঠাকুমা প্রবল আপত্তি তোলেন। অঞ্জুদেবী বলেন, “সেই আপত্তি অগ্রাহ্য করে দানিশকে আর্মি স্কুলে ভরতি করাই। সেখান থেকে উত্তরাখণ্ড মিলিটারি অ্যাকাডেমি। শারীরিক প্রতিবন্ধকতার বিরুদ্ধে লড়াই করে সাফল্য অর্জন করেছে। এর থেকে বড় আর কিছু হয় না।’’
দানিশের বাবা রাজেশ ল্যাঙ্গার বলেন, “ছেলের জন্য গর্বিত। যেভাবে কম বয়সেই কঠিন চ্যালেঞ্জকে ও সামলেছে… অনেকেই এমন লড়াই ছেড়ে দেয়। কিন্তু ওঁর পাখির চোখ ছিল ভারতীয় সেনা।” তাঁর মতো তরুণদের লেফটেন্যান্ট দানিশের ল্যাঙ্গারের বার্তা, “লক্ষ্যে পৌঁছতে নিজেকে উজার করে দিতে হবে। কিছুতেই হাল ছাড়লে চলবে না। কোনও কিছুর জন্যই লক্ষ্য থেকে সরে আসা চলবে না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.