সৌরভ মাজি, বর্ধমান: এ যেন উলট পুরাণ। কুমড়ো গাছে ফলছে লাউ। শুনে আঁতকে উঠলেন? অবাক হলেও এই আশ্চর্যজনক ঘটনাটি সত্যি সত্যিই ঘটেছে সতেজ কুমড়ো গাছে ঝুলে আছে নধর লাউ। বর্ষার জল পেয়ে বাগান জুড়ে ডগা ছেড়েছে। কুমড়ো গাছে ফলন বেশ ভালই হয়েছে। ইতিউতি কুমড়োর মধ্যে ঝুলে থাকা লাউ, আপনার চোখ টানবেই। না না প্রচারের জন্য বাজার থেকে লাউ কিনে এনে কুমড়ো ডগার সঙ্গে জুড়ে দেননি বাগান মালিক। প্রাকৃতিক নিয়মেই এটি ঘটেছে। এর জেরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়ের বাসিন্দা স্বপন সানার বাড়িতে। এই অবিশ্বাস্য কাণ্ডকারখানা দেখতে স্থানীয়রা ভিড় জমিয়েছেন।
গোটা ঘটনায় দৃশ্যতই অবাক স্বপনবাবু। সাধারণ কুমড়ো চারার ফলন শুরু হতেই যে লাউ গজাবে কে জানত। এদিকে খবর পেয়ে জেলার কৃষি গবেষকরাও তাঁর বাড়িতে আসার জন্য উন্মুখ। ইতিমধ্যে কুমড়ো গাছে লাউয়ের ফলনের খবরটি পৌঁছে গিয়েছে স্থানীয় উদ্যানপালন আধিকারিকদের কাছে। তবে বিষয়টিতে তাঁরা বিস্মিত হননি। বরং ব্যাপারটি আজগুবি বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। জেলার সহকারী উদ্যান পালন দপ্তরের আধিকারিক পলাশ সাঁতরা জানান, এমনটা ঘটতেই পারে না। গ্রাফটিং পদ্ধতিতে একই গাছে একাধিক ফসল ফলানো সম্ভব। তবে এমন ঘটনা সম্ভব নয়। বীজ থেকেই যদি কুমড়ো চারা হয়ে থাকে তাহলে তাতে লাউ ধরবে কী করে। তবে যেটিক লাউ ভাবা হচ্ছে তা নাও হতে পারে। হয়তো দেখতে লাউয়ের মতো হয়েছে। কুমড়োর ভিতরের অংশ ফাঁপা হয়ে থাকে। লাউয়ের ভিতরটা ফাঁপা হয় না। ওই ফল কেটে পরীক্ষা না করে বলা সম্ভব নয় আদতে সেটা কী।
[হাত দেখতে গিয়ে গৃহবধূকে আঁচড়, পুলিশের জালে বাঁদর]
এরপর স্বপন সানার বাড়ির বাগান থেকে এই অবিশ্বাস্য ছবি পৌঁছে যায় ওই আধিকারিকের কাছে। তিনি ছবি দেখে জানান, এটি একটি গাছের জিনঘটিত রোগ। যার নাম অ্যালবিনোজম। আসলে কুমড়ো গাছে কুমড়োই ফলেছে। তবে অ্যালবিনোজমের কারণে ফলের রং বদলে যাওয়ায় লাউয়ের মতো দেখাচ্ছে। কাটলে কিন্তু কুমড়োই পাওয়া যাবে, লাউ নয়। ফলটি কাটলেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে।