Advertisement
Advertisement

Breaking News

Bangladesh

OMG!দাম্পত্যের ৯০ বছর পেরিয়ে ফের বিয়ের পিঁড়িতে শতায়ু দম্পতি

পাঁচ প্রজন্মকে সঙ্গে নিয়ে ফের বিবাহবন্ধনে দেবশর্মা দম্পতি।

Offbeat News: In Bangladesh, couple remarriages again even after spending 90 years of conjugal life |SangbadPratidin
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:February 24, 2021 9:57 pm
  • Updated:February 24, 2021 9:57 pm

সুকুমার সরকার, ঢাকা: দেখতে দেখতে দাম্পত্যের ৯০টা বছর। কিন্তু তারপরও বিয়ের আনন্দ যেন রয়ে গিয়েছে সেই আগের মতোই। তাই তা এত বছর পরও ফের বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন বাংলাদেশের (Bangladesh) শতায়ু দম্পতি। দিনাজপুরের দক্ষিণ মেড়াগাঁও গ্রামের এই দম্পতির বিয়ের নিমন্ত্রণপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, পাত্র ১০৭ বছরের বৈদ্যনাথ দেবশর্মা এবং পাত্রী ৯৮ বছরের পঞ্চবালা দেবশর্মা।

জানা গিয়েছে, এই দম্পতির সন্তান, তাঁদের সন্তানদের ঘরের সন্তান-সহ মোট পাঁচ প্রজন্ম নিয়ে জমজমাট সংসার। প্রচলিত লোকরীতি অনুযায়ী, পাঁচ প্রজন্মের মুখ দেখে এই দম্পতিকে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে আবার বিয়ে দিয়েছেন তাঁদের ঘনিষ্ঠ স্বজনরা। বিয়ের আয়োজন ঘিরে স্বজনদের মধ্যে আনন্দ-উচ্ছ্বাসের শেষ নেই। পাড়া-প্রতিবেশীদেরও উৎসবের আমেজে কমতি নেই। হইহই ব্যাপার বাংলাদেশের উত্তরের জেলা দিনাজপুরের বিরল উপজেলার দক্ষিণ মেড়াগাঁও গ্রামে।

Advertisement

একশো পেরিয়ে ফের বিয়ের পিঁড়িতে বসে নিজের প্রথম বিয়ের স্মৃতি ফিরে পাচ্ছিলেন ১০৭ বছরের বৈদ্যনাথ দেবশর্মা। মনে পড়ে যাচ্ছিল, প্রায় ৯০ বছর আগে কনের পঞ্চবালার বাবাকে ১৩ টাকা পণ দিয়ে বিয়ে করেছিলেন বৈদ্যনাথ। তখন তাঁর বয়স ছিল ১৭, পঞ্চবালা ছিলেন ৮ বছরের। এতগুলো বছর কাটিয়ে ২১ ফেব্রুয়ারি বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন বৈদ্যনাথের নাতি ফটিকচন্দ্র দেবশর্মা। বৈদ্যনাথের দাবি, তাঁর বাবা ভেলেগু দেবশর্মার হাতে লিখে যাওয়া জন্মতারিখ অনুযায়ী, এখন তাঁর বয়স ১০৭ বছর। বৈদ্যনাথ পেশায় কৃষিজীবী।

Advertisement

[আরও পডুন: বাংলাদেশে ফের গুলির লড়াই, টেকনাফে নিহত ৩ রোহিঙ্গা দুষ্কৃতী]

১৯৭২ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত তিনি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য ছিলেন। ঝিলকো মনি বালা নামে বৈদ্যনাথ-পঞ্চবালা দম্পতির এক মেয়ে আছে। মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। নাতি-পুতিও হয়েছে। সব মিলিয়ে সংখ্যাটা ৫৪। বিয়ের প্রসঙ্গে বৈদ্যনাথ বলেন, ‘‘আমাদের সন্তান হয়েছে। সন্তান থেকে নাতি-নাতনি। তাদেরও সন্তানাদি হয়েছে। এভাবে পাঁচপিড়ি (পাঁচ প্রজন্ম) হয়ে গেছে। পাঁচপিড়ি হওয়ার পর স্বামী-স্ত্রী বেঁচে থাকলে তাদের বিয়ে করতে হয়। এতে বংশের মঙ্গল হয়। নাতির সঙ্গে আলাপ করলে সে বিয়ের সব আয়োজন করে। আমার মতো পরবর্তী বংশধররাও যেন দীর্ঘ জীবন পায়।’’ বৈদ্যনাথ দেবশর্মা  ও পঞ্চবালা দেবশর্মার বিয়ের অনুষ্ঠান ঘিরে নানা আয়োজন চলে কয়েক দিন ধরে। বৈদ্যনাথের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠান তখনও শেষ হয়নি। মঞ্চে বাহারি পোশাক পরে বসেছিলেন বর-কনে। অনেকে আসছেন উপহার সামগ্রী নিয়ে, বর-কনের কাছ থেকে আশীর্বাদ নিচ্ছেন। রান্নাবান্না, গান-নাচ চলছিল পুরোদমে। বৈদ্যনাথের সুরেশ চন্দ্র নামের এক ধর্মপুত্র আছেন। তাঁর কথায়, ”মা–বাবার মঙ্গল কামনায় এই আয়োজন করা হয়েছে।” মাসখানেক ধরে এই আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়েছে সবাই। কার্ড ছাপানো, আত্মীয়স্বজনকে কাপড় কিনে দেওয়া, পূজা-পার্বণ, বাদ্য-বাজনা, বিয়ের অনুষ্ঠান, বাসি বিয়ে, বউভাত-বাদ যায়নি কিছুই।

[আরও পডুন: চলতি মাসেই স্বরাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে বসছে ভারত ও বাংলাদেশ]

বছর আটানব্বইয়ের কনে পঞ্চবালা বলেন, ”ভালয় নাগেছে। এলা দে বিহাও হইছে, ভাল নাগেছে। আর ছোটতে যে বিহাও হইছে, ওইলা আমি কহিবা পারি না। সুখী নাগেছে। নাতি-পুতি, ধরম ব্যাটা-সবগুলায় মিলিয়া বিহাও দিছে। আগে যে মা–বাবারা বিহাও দিছে, ওইলা আমি বইলতে পারি না।’’ স্বামীকে নিয়ে পঞ্চবালা বলেন, ‘‘তিনি ভালবাসে ভালয়। হামাক ছাড়া থাকিবা পারে না। আর আমিও উমহাক ছাড়া থাকিবা পারি না। বিহাত গহনাপত্র দুল, টিকলি, বালা, হার দিছে। ভালই নাগেছে।” পুরো অনুষ্ঠানের আয়োজক বৈদ্যনাথের মেয়ে ঝিলকোমনি বালা ও নাতি ফটিক চন্দ্র। মেয়ে বললেন, ‘‘সব আত্মীয়স্বজন আসছে। আমরা খুবই আনন্দিত।” বিয়ের অনুষ্ঠানে পুরোহিতের দায়িত্ব পালন করেন মহাদেব ভট্টাচার্য। তিনি জানান, ‘এর আগে কখনো এ রকম বিয়ে দিইনি, দেখিনি। বর্তমান যেখানে বিবাহবিচ্ছেদের ঘটনা হামেশাই ঘটছে, সেখানে এই দম্পতির একসঙ্গে এত বছর একসঙ্গে কাটানো ও নতুন করে বিয়ের আয়োজন সত্যিই অনন্য।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ