শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: ছুটির ঘণ্টা তখনও বাজেনি। কে কার আগে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে বাড়ি যাবে তা নিয়ে ঠান্ডা লড়াই। প্রতিদিনের এই প্রবণতা শেষ পর্যন্ত রক্তারক্তিতে পরিণত হল। দুই শিক্ষকের মারামারিতে হতবাক ধুপগুড়ি গাদং ২ নম্বর বারোহালিয়া প্রাথমিক বিদালয়ের পড়ুয়ারা।
[লুকিয়ে পরীক্ষা দিয়ে রেলের স্টেশন মাস্টার, স্ত্রীর কৃতিত্ব উদযাপনে স্বামী]
বৃহস্পতিবার স্কুল ছুটির আগে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফণীন্দ্র সরকারের সঙ্গে বচসায় জড়ান টিচার ইনচার্জ অজয় চিনিম। দ্রুত বচসা হাতাহাতিতে জড়ায়। অভিযোগ অজয় ঘুসি মারেন ফণীন্দ্রকে। তাতে তাঁর নাক ফাটে। এরপর পালটা লাঠি দিয়ে সহকারী শিক্ষক অজয় চিনিমের মাথায় আঘাত করেন ফণীন্দ্র সরকার। দুই শিক্ষকের এমন ধুন্ধুমার কাণ্ড-কারখানা দেখে বিস্মিত স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা। অন্য শিক্ষকরাও বুঝতে পারেননি বিষয়টি এত দূর গড়াবে। শেষ পর্যন্ত অভিভাবক এবং গ্রামবাসীরা দুই শিক্ষককে কোনওভাবে নিরস্ত করেন। জানা গিয়েছে কে কার আগে বাড়ি যাবে তা নিয়েই অশান্তির সূত্রপাত।
[খড়গপুর ওয়ার্কশপের দু’টি ইউনিট দায়িত্ব সামলাবেন কেবল মহিলারাই]
দুই বিবদমান শিক্ষকই এদিন রাতে ধুপগুড়ি থানায় একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। সহ শিক্ষক অজয় চিসিন অভিযোগ করেন বিয়ের পর তাঁর বোনের শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার কথা ছিল। তাই তিনি একটু আগে স্কুল থেকে বেরোতে চেয়েছিলেন। এই নিয়ে কথা বলতে হঠাৎই প্রধান শিক্ষক তাঁর গায়ে হাত তোলেন। প্রধান শিক্ষক ফণীন্দ্র অবশ্য অন্য যুক্তি সামনে এনেছেন। তাঁর দাবি, তিনি ওই শিক্ষককে বলেছিলেন তিনটে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে। এতেই তিনি খেপে গিয়ে মারতে শুরু করেন। তিনি নিজেকে সামলাতে অজয়কে সামান্য ধাক্কা দেন। প্রধান শিক্ষক রাজনৈতিক প্রভাব খাটান বলেও দাবি করেছেন ওই সহ শিক্ষক। দুজনকে অবশ্য প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে ধুপগুড়ি থানার আইসি সঞ্জয় দত্ত জানান, দুই শিক্ষকের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। দুই শিক্ষকের এমন আচরণে আড়ালে হাসছেন অন্য শিক্ষকরা। আর অভিভাবকরা বলছেন যাঁরা জাতির মেরুদণ্ড তাঁরাই যদি কুস্তি শুরু করেন তাহলে পড়ুয়ারা কি শিখবে?
[প্রতিবন্ধকতাকে পেরিয়ে জয়ী জীবনের যুদ্ধে, পড়ুয়াদের কাছে প্রেরণা এই শিক্ষিকা]