সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রানার রানার, এ বোঝা টানার দিন কবে শেষ হবে…. সে দিন হয়তো শেষ হয়ে গিয়েছে। চিঠি লেখাটা এখন নেহাতই ব্যাকডেটেড। তাই খবরের বোঝা হাতে আর ছুটতে হয় না রানারদের। চিঠিপত্রের ঠাঁই এখন নস্টালজিয়ায় কিংবা সরকারি বা প্রশাসনিক কাজে। পেনের কালি খরচ করে পাতার পর পাতা লিখে প্রিয়জনের হাল হকিকত জানার মতো সময় জেনারেশন এক্স-এর কাছে কোথায়? হোয়াটসঅ্যাপ, টেক্সট, ই-মেলের যুগে তাই সাদা কাগজের লেখা বড্ড বেমানান। তাই শহরের আনাচে কানাচে কিংবা গ্রাম-গঞ্জের কোনও গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলিতে যে লাল রঙা পোস্টবক্সগুলির একসময় রমরমা ছিল, সেগুলিকে আর যথাস্থানে দেখা যায় না। কালের গর্ভে কোনও কোনওটি হারিয়ে গিয়েছে, আর নাহয় জীর্ণ দশায় অন্তিম সৎকারের অপেক্ষায় দিন গুনছে।
[অনলাইন শপিংয়ের জন্য টাকা জমাতে গিয়ে এ কী হাল হল তরুণীর!]
কিন্তু এসবের মধ্যেও স্বমহিমায় উজ্বল গভীর সমুদ্রের এই পোস্টবক্সটি। প্রতিবছর হাজার হাজার চিঠি জমা পড়ে এই ডাকবাক্সে। এমনকী পর্যটকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এটিকে দেখতে যান। কিন্তু কী রয়েছে এই ডাকবাক্সে। আসলে, এটি কোনও সাধারণ পোস্টবক্স নয়। এর অবস্থান সমুদ্রের গভীরে। বিশেষ রং দিয়ে তৈরি এই পোস্টবক্সটিতে চিঠিও লেখা হয় ওয়াটার প্রুফ কাগজ এবং পেন দিয়ে। আর এই বিশেষত্বের জন্যই এই ‘ডিপি সি পোস্টবক্সে’ প্রতিবছর হাজারো পর্যটকের ভিড় চোখে পড়ে, জমা পড়ে অনেক চিঠিও।
[OMG! প্রেমিককে কুচি কুচি করে কেটে রাঁধল মহিলা, মাংস কারা খেল জানেন?]
এই ডাকবাক্স রয়েছে জাপানের সুসামি শহরে। প্রতি বছর কয়েকশো পর্যটক ‘ডিপ সি ডাইভিং’-এর ছুতোয় এই ডাকবাক্সের কাছে ছুটে আসেন। জাপানের এই শহরে মূলত মৎস্যজীবী মানুষের বাস। প্রায় পাঁচ হাজার মৎস্যজীবী এখানে বসবাস করেন। ১৯৯৯ সালের এপ্রিলে পর্যটনের প্রসারের জন্য গভীর সমুদ্রে এই পোস্টবক্স বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সমুদ্র সৈকত থেকে ১০ মিটার দূরে এবং ৩২ ফুট গভীরে বসানো হয় ডাকবাক্সটি। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩৬ হাজার চিঠি পড়েছে এই ডাকবাক্সে। পর্যটকরা ওয়াটারপ্রুফ কাগজে, ওয়াটারপ্রুফ মার্কার পেন দিয়ে চিঠি লিখে জলের নিচে গিয়ে পোস্ট করেন। সেখান থেকে পোস্টাল ডাইভাররা সেই চিঠিগুলি তুলে এনে সেগুলিকে পাঠিয়ে দেন স্থানীয় ডাকঘরে। ছ’ মাস পর পর ডাকবাক্সটি তুলে আনা হয় রং আর মেরামতির জন্য। দু’টি ডাকবাস্ক এ ভাবে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে রেখে আসা হয় সমুদ্রের তলায়।