সাধ না মিটিল, আশা না পূরিল, বছর ফুরায়ে যায় মা…বছরশেষের মুহূর্তে এ অনুভূতিই যেন ঘিরে ধরে৷ প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির খেরোর খাতায় কত হিজিবিজি৷ এটা হল, তো ওটা হল না৷ সেটা হল তো ওটা হল আরও ভাল হত৷ কিন্তু সময় তো কারও জন্য অপেক্ষা করে না৷ সে তাই চলে যাবেই৷ যত অপ্রাপ্তিই জেগে থাকুক ২০১৭-কে বিদেয় দিতেই হবে৷ আর তাই ২০১৮’র ঘাড়ে চেপে বসে অনেক আশা৷ হিসেবের পাতা ওল্টাতে ওল্টাতে আমাদের মনে হয়, যদি এমন হয় তবে কেমন হত! তা কী কী হলে নতুন বছরের সফর সুহানা হয়ে উঠতে পারে? আসুন একবার চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক৷
গরুতেই শুরু, গরুতেই শেষ। গোমাতার নাম আর মুখেও যাতে না আনা যায় সেই বন্দোবস্তই পাকাপাকিভাবে করে ফেলল সরকার। এমনিতেই দক্ষিণ রায়ের সংখ্যা দেশে প্রায় কমে আসছে। গরুকে ঈশ্বরের মর্যাদা ইতিমধ্যেই দিয়ে দিয়েছে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি। গেরুয়া শিবিরও গরু নিয়ে স্পর্শকাতর। ভোটের রাজনীতির পালের হাওয়ায় ভেসে সবদিক বিবেচনা করে গরুকেই হয়তো জাতীয় পশুর মর্যাদা দিয়ে দেবে কেন্দ্র। নতুন বছরে সেদিনও দেখতে হতে পারে।
বাড়িয়ে দিলেম হাত। দীর্ঘদিনের সংঘাত ভুলে শেষপর্যন্ত যুদ্ধবাজ, খেপাটে সর্বাধিনায়ক কিমের দিকে এইবাক্য আউড়েই হয়তো এগিয়ে যাবেন মার্কিন মুলুকের আরেক খেপাটে রাষ্ট্রনায়ক ডোনাল্ড ট্রাম্প। এশিয়ায় লাল ড্রাগনের আগ্রাসন রুখতে এছাড়া আর উপায় বোধহয় ঈশ্বরেরও জানা ছিল না। পাগলাটে কিমের হাত ধরেই নিল আমেরিকা। একসঙ্গে বিয়ারের গ্লাস হাতে ট্রাম্প ও কিম নতুন বছরে যৌথ সামরিক কুচকাওয়াজ দেখছে, এমন দৃশ্য সম্ভব হতেই পারে। দুনিয়া বলবে, রতনে রতন চেনে আর…
বিরোধীদের কটাক্ষ। ঘরে-বাইরে চাপ। ব্যবসায়ীদের আন্দোলন। আর ২০১৯-এর লোকসভা ভোট। ভোটারদের আর চটিয়ে লাভ নেই। এইবেলা ভুল শোধরানোর পালা। তাই জিএসটিকে ব্যাক টু দ্য প্যাভিলিয়ন করে দিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী মোদিই। কর কাঠামো আগে যা ছিল তাই ফেরত এল, তবে একটু সংশোধিত ফর্ম্যাটে এই যা। জনসাধারণও একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল। এমনটা হতেই পারে নয়া বছরে। ভাবতে দোষ কোথায়?
নতুন বছরে পাঁচ রাজ্যে ভোট। তার মধ্যে উত্তর-পূর্বের চার এবং দক্ষিণের এক। মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, ত্রিপুরা ও কর্নাটক। যদি এমনটা হয়, যে এর মধ্যে কোনওরকমে ত্রিপুরায় গড়রক্ষা করল বামেরা। অন্যদিকে, বাকি রাজ্যে গেরুয়া ঝড়ে উড়ে যাবে বিরোধীরা। অবিশ্বাস্য নয়। এমনটাই পূর্বাভাস রাজনৈতিক মহলের। সুতরাং মোদি-শাহর স্বপ্নের গেরুয়া সাম্রাজ্য বিস্তারের পথ আরও প্রশস্ত হবে নতুন বছরে এ কথা চোখ বন্ধ করে বলাই যায়। বাকিটা ভোটবাক্স জবাব দেবে।
সিনেমা হলের টিকিট থেকে রেস্তরাঁয় খানা-পিনা। সরকারি ফরমানে সবকিছুতেই যদি বাধ্যতামূলক হয়ে যায় আধার? তবে? আধার ছাড়া গোটা দেশই কি অচল হয়ে পড়বে? বলা যায় না যা দিনকাল, হয়তো মুদি দোকানে জিনিস কিনতে গিয়েও আধার সংযুক্তিকরণের প্রয়োজন পড়বে। নতুন বছরে সেইদিন দেখতেও হতে পারে।
অবশেষে আই লিগ প্রাপ্তি ইস্টবেঙ্গলের
নতুন বছরে হাসি ফুটুক লাল-হলুদ সমর্থকদের মুখে৷ অনেক সাফল্যের ভিতরও এই একটা আক্ষেপ থেকেই গিয়েছে অর্ণবদের৷ এ নিয়ে সবুজ মেরুন সমর্থকদের টিপ্পনিও কম শুনতে হয় না তাঁদের৷ আই লিগ বাংলার ক্লাবেই আসুক, আর নাহয় এবারটা হোক লাল হলুদেরই৷
সাত-পাকে বাঁধা পড়লেন রণবীর-দীপিকা
সুখবরটা হয়তো নতুন বছরেই মিলবে। ২০১৭’য় বিনোদুনিয়ায় অনেকেরই বিয়ের ফুল ফুটেছে। তাহলে নিন্দুকদের মুখে ছাই দিয়ে নতুন বছরে চার হাত কি এক হবে রণবীর আর দীপিকার? সেই আশাতেই অনেকে বুক বেঁধে। তবে হবু শ্বশুরের সঙ্গে সেলফি পোস্ট করে জল্পনা তুঙ্গে তুলেছেন রণবীর। নতুন বছরে পদ্মাবতী মুক্তি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিয়ের পিঁড়িতে বসার আয়োজনও শুরু করে দিতে পারেন বলিউডের এই ট্রেন্ডিং কাপল।
মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে তালাইভা
২০১৭ সালের শেষদিনে এসে বোমা ফাটিয়েছেন তালাইভা রজনীকান্ত। নতুন বছরে তামিল রাজনীতিতে পদার্পণের ঢাক পিটিয়ে অনেকের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছেন রজনী। তাই নতুন বছরে দ্রাবিড়ভূমে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে আর কারও থাকার সাহস হবে কি? আর সঙ্গী হিসাবে আরেক সুপারস্টার কমল হাসানকে পেয়ে গেলে আর কথাই নেই। তাই ২০১৮-তে তাঁর নতুন রাজনৈতিক দল কী কামাল দেখায় সেটারই অপেক্ষায় দেশ। বাকিদের ভোকাট্টা হওয়া এখন শুধু সময়ের খেল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.