১৮৮৯ সালের ১৫ আগস্ট ‘মোহনবাগান স্পোর্টিং ক্লাব’-এর জন্ম। ১৮৯১ সালে তা ‘মোহনবাগান অ্যাথলেটিক ক্লাব’ রূপে আত্মপ্রকাশ করলেও বাঙালির মননে মোহনবাগান স্থায়ী জায়গা করে নেয় ১৯১১ সালের ২৯ জুলাই। ইস্ট ইয়র্কশায়ারকে হারিয়ে সবুজ-মেরুনের ‘আইএফএ’ শিল্ড জয়। ২০০১ সাল থেকে এই ঐতিহাসিক জয় স্মরণ করে দিনটিতে ‘মোহনবাগান দিবস’ পালন করা শুরু হয়। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া
২০০১-এর বৃষ্টিময় এক রবিবারের সন্ধ্যায় মোহনবাগান মাঠে শামিয়ানা খাটিয়ে শুরু হয়েছিল ‘মোহনবাগান দিবস’ পালনের অনুষ্ঠান। প্রথমবার ‘মোহনবাগান রত্ন’ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছিল তৎকালীন লিভিং লেজেন্ড ফুটবলার এবং ক্রীড়া প্রশাসক ‘পদ্মশ্রী’ শৈলেন মান্নাকে। সেরা ভারতীয় খেলোয়াড় হিসাবে ‘জার্নেল সিং পুরস্কার’ দেওয়া হয়েছিল ষষ্ঠী দুলেকে। হোস র্যামিরেজ ব্যারেটোর হাতে সেরা খেলোয়াড় হিসাবে ‘ধীরেন দে পুরস্কার’ তুলে দেওয়া হয়।
দ্বিতীয় মোহনবাগান দিবসে প্রথমবার মরণোত্তর ‘মোহনবাগান রত্ন’ হিসাবে সম্মানিত হন ডাক্তার টি. আও। ডাক্তার টি. আও ১৯৪৮ সালের লন্ডন অলিম্পিকে ভারতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক। পরের মরশুমে মোহনবাগানের অধিনায়কত্ব করেন।
২০০৩। ক্লাবে হাইকোর্ট নির্দেশিত স্পেশাল অফিসার থাকা অবস্থায় সভাপতি স্বপনসাধন বোস মোহনবাগান দিবসের মাত্র কিছুদিন আগে মোহনবাগান সমর্থকদের উৎকণ্ঠা কাটিয়ে ঘোষণা করেন ১৯১১ সালে শিল্ড-জয়ী অধিনায়ক শিবদাস ভাদুড়ী-কে মরণোত্তর ‘মোহনবাগান রত্ন’ সম্মানে ভূষিত করার কথা। ক্লাব তাঁবুর অনুষ্ঠান মঞ্চে শিবদাস ভাদুড়ীর পরিবার-পরিজনের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
২০০৪ সালে মোহনবাগান দিবসের অনুষ্ঠানে ‘মরণোত্তর’ ‘মোহনবাগান রত্ন’য় ভূষিত করা হয় ‘পদ্মশ্রী’ গোষ্ঠ পালকে। ২০০৫ সালে মোহনবাগান দিবসে বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব চুনী গোস্বামীর হাতে তুলে দেওয়া হয় ‘মোহনবাগান রত্ন’।
ক্লাবের দীর্ঘ দিনের সচিব ধীরেন দে-কে প্রশাসনিক কাজে অবদানের জন্য ‘মোহনবাগান রত্ন’য় সম্মানিত করা হয় ২০০৭ সালে। অনেকেরই অজানা, ধীরেন দে নিছক প্রশাসক নন, মোহনবাগান অ্যাথলেটিক ক্লাবের হয়ে ক্রিকেটও খেলেছেন চুটিয়ে।
২০১০। ঐতিহাসিক শিল্ড বিজয়ের শতবর্ষে অধিনায়ক শিবদাস ভাদুড়ী বাদে (ইতিমধ্যে সম্মানিত) সেই দলের বাকি দশ সদস্যকে একযোগে ‘মোহনবাগান রত্ন’ প্রদান করা হয়। এই বছরের ‘মোহনবাগান দিবস’-কে কেন্দ্র করে তুমুল উন্মাদনার সৃষ্টি হয়েছিল। ক্লাবের তাঁবু বিশেষ আলোকসজ্জায় সাজানো হয়। ক্লাবের মূল প্রবেশপথে অমর একাদশের ছবি-সহ শিল্ডের প্রতিকৃতি অনুসারে বিশাল তোরণ করা হয়। শিল্ড জয়ের শতবর্ষের সূচনা হিসাবে ভারত সরকারের পোস্টাল বিভাগের তরফে প্রকাশিত স্পেশাল এনভেলপেরও উদ্বোধন করা হয়েছিল। সঙ্গে ছিল অরুণ রায়ের ‘এগারো’ সিনেমার ময়ূখ-মৈনাকের ‘আমাদের সূর্য মেরুন’ গানটি।
করোনাভাইরাসের দাপট এই বছর ‘ঐতিহাসিক দিবস’ পালনের ঘনঘটায় ছেদ টানলেও ‘মোহনবাগান রত্ন’ প্রদান করার কথা ইতিমধ্যেই ঘোষিত হয়েছে।
এবার যে এই সম্মানে ভূষিত হলেন অলিম্পিক সোনাজয়ী গুরবক্স সিং এবং বিশিষ্ট ক্রিকেটার পলাশ নন্দী, তা প্রায় সুবিদিত। ‘জীবনকৃতি’ পুরস্কার দেওয়া হবে দুই বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদ মনোরঞ্জন পোড়েল ও অশোক কুমারকে।
এবছর মোহনবাগান দিবসে নিউ ইয়র্কের টাইমস স্কোয়্যারের Nasdaq বিলবোর্ডের রং হয়ে গেল সবুজ-মেরুন।
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.