রিন্টু ব্রহ্ম, কালনা: ‘চোখের আলোয় দেখেছিলেম চোখের বাহিরে…’, কিংবা ‘২৪x৭ গণশার চোখে’ কোথাও আবার ‘এবার পুজোর ভিড়ে বাবুই পাখির নীড়ে।’ বর্ধমান শহরের চারিপাশে চোখ পড়লে নজর কাড়বে এসব পোস্টার, হোর্ডিং। যা দেখে বহুজাতিক সংস্থার বিজ্ঞাপনী প্রচার বলে মনে হতে বাধ্য। কিন্তু নাহ, সংস্থা নয় দর্শনার্থীদের আকর্ষণ বাড়াতে এই টিজারের মাধ্যমেই প্রচার শুরু করেছেন উদ্যোক্তারা। কারণ, অঘোষিতভাবে উদ্যোক্তাদের কাছে যেন এ এক প্রতিযোগিতা। ব্যানার, হোর্ডিং-এর মাধ্যমেই সকলে বুঝিয়ে দিয়েছে যে প্রতিপক্ষকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তেও রাজি নন তাঁরা।
ছোট-বড় মিলিয়ে বর্ধমান শহরে কয়েকশো দুর্গাপুজো হয়। তার মধ্যে বিগ বাজেটের পুজোর তালিকায় রয়েছে পদ্মশ্রী সংঘ, ময়ূরমহল সংঘ, কাঞ্চননগর বেলপুকুর কিশোর সংঘ, শ্যামলাল সর্বজনীন, লালটু স্মৃতি সংঘ, আলমগঞ্জ বারোয়ারি-সহ আরও বেশ কয়েকটি পুজো। আর এই সব বিগ বাজেটের উদ্যোক্তারা এখন থেকেই প্রচারে ঝাঁপিয়েছেন। কেউ শহরের প্রাণকেন্দ্রে লাগিয়েছে ব্যানার, কেউ বা ভরসা করছেন সোশ্যাল মিডিয়ার উপর। সকলেই নিজেদের সর্বোচ্চ জায়গায় তুলে ধরতে চাইছে। শহরের কার্জন গেট, কালিবাজার, বীরহাটা স্টেশন-সহ নানা জায়গায় ব্যানার লাগানো হয়েছে।
পুজো উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, “এই বিজ্ঞাপনী চমকের মাধ্যমেই দর্শকদের আকর্ষণ বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আর এই সব টিজারের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে পুজোর থিম। ‘চোখের আলোয় দেখেছিলাম’-এই ক্যাচ লাইনের মাধ্যমে শ্যামলাল সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটি বোঝাচ্ছেন দৃষ্টিহীন মানুষদের জীবনের নানা খুঁটিনাটি, যন্ত্রণার কথা। সেসবই ফুটে উঠবে এবারের তাঁদের পুজো মণ্ডপে। আবার বাবুই পাখির বিলুপ্তপ্রায় বাসা বানিয়ে মণ্ডপ ভরাতে চাইছে ময়ূরমহল। প্রাচীন পট শিল্পকে তুলে ধরে কিশোর সংঘ লিখেছে, ‘প্রাচীন পট, বৃক্ষ মাঝে মা এলেন নব সাজে।’ চা তৈরির সামগ্রী দিয়ে বানানো হচ্ছে ইচ্ছালাবাদ কিরণ সংঘের থিম। সব মিলিয়ে প্রতিপক্ষকে টেক্কা দিতে সর্বতভাবে প্রস্তুত পুজো কমিটিগুলি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.