১৩ চৈত্র  ১৪২৯  মঙ্গলবার ২৮ মার্চ ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

পুরাতনেই ভরসা, আজও গ্রামোফোনে মহিষাসুরমর্দিনী শোনেন এই এলাকার বাসিন্দারা

Published by: Sayani Sen |    Posted: September 28, 2019 10:44 am|    Updated: September 28, 2019 10:44 am

People enjoy Mahisasurmardini by Gramophone in Asansol

চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: একটা ছোট্ট কালো গোল ই.পি. রেকর্ড ঘুরে চলেছে গ্রামোফোনে আর সুর ছড়িয়ে পড়ছে সারা ঘরে। মহালয়ার ভোরে বাড়ির ছোটবড় সবাই মিলে হাঁ করে যেমন শুনতেন কলের গান, আজও শোনেন একই ভাবে। হারিয়ে যাওয়া পুজোর স্মৃতিময় দিনগুলোকে ধরে রাখতে গ্রামোফোন সযত্নে সংগ্রহ করে রেখেছেন রানিগঞ্জের খনিকর্মী জগন্নাথ বাউরি। মহালয়ার ভোরে আজও ওই গ্রামোফোনে বেজে ওঠে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের স্তোত্রপাঠ। সুরেলা কণ্ঠে বেজে ওঠে আগমনি গান। রানিগঞ্জের নিমচা গ্রামে দেখা মিলবে এই দৃশ্যের। খনিকর্মী তথা প্রাক্তন প্রধান জগন্নাথ বাউরি বাড়িতে ব্রিটিশ এইচএমভি কোম্পানির গ্রামোফোনটি শুধু সংগ্রহ নয় সচলও রেখেছেন।

[আরও পড়ুন: চণ্ডীপাঠ-তর্পণে দেবীপক্ষের সূচনা, পিতৃপুরুষের স্মৃতিতে বুঁদ বাঙালি]

বিদ্যুৎহীন যন্ত্রের নাম গ্রামোফোন বা কলের গান। একটা সময় এই গ্রামোফোনই বিনোদনের অন্যতম যন্ত্র ছিল শৌখিন মধ্যবিত্ত সমাজের। জগন্নাথবাবুর বাবা ধর্মদাস বাউরি এটিকে কিনে এনেছিলেন ১৯৬২ সালে। মাঝে একবার খারাপ হয়ে যাওয়ায় চাঁদনি চক থেকে তা সারিয়ে নেন জগন্নাথবাবু। হাতল ঘুরিয়ে ভেতরে থাকা স্প্রিং এবং কয়েলের সাহায্যে এটিকে এখনও চালানো হয়। জগন্নাথ বাউরি নর্থ শিয়ারশোল কোলিয়ারির কর্মী। ২০১৩-২০১৮ পর্যন্ত নিমচা পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন তিনি। তাঁর কথায়, “আমার বাবা শৌখিন মানুষ ছিলেন। তখনকার দিনে ৩৫০ টাকা দিয়ে এটি কিনে এনেছিলেন। এই কলের গান শুনতে পাড়া প্রতিবেশীরা আসতেন। পুজোর সময় আগমনি গান বাজতো ঘরে। বাড়িতে এখনও ১৫০টির বেশির ভিনাইল ও ই.পি রেকর্ড রয়েছে। ৪৫ আরপিএম, ঘূর্ণানুমান গতিতে বাজে গ্রামাফোনটি।” স্মৃতিচারণ করে তিনি আরও বলেন, “আগের দিনের সেই পুরনো বাংলা গান কিংবা পুরনো হিন্দি গান আমরা কলের গানে শুনতাম। শচীন দেববর্মন, জগন্ময় মিত্র, মহম্মদ রফি, লতা, আশা, আব্বাস উদ্দিন, ফিরদৌসি রহমান, পান্নালাল ভট্টাচার্য, গীতা দত্ত, অখিলবন্ধু ঘোষ, দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়, পিন্টু ভট্টাচার্য, নির্মলা মিশ্র, বনশ্রী সেনগুপ্তর পুজোর গানের রেকর্ডগুলি আজও আছে। গ্রামোফোনটি আমাদের পেছনের দিনগুলোর কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।”

[আরও পড়ুন: ‘মা আসছেন, তুই কোথায়?’, দূর দেশবাসিনীদের ডাকছেন ঋতাভরী-পাওলি]

জগন্নাথ বাবুর স্ত্রী ঋতা বাউরি বলেন, “মহালয়ার ভোরে যতই টিভি দেখি না কেন, বা ছেলেমেয়েরা যতই এফএম শুনুক না কেন শ্বশুর মশাইয়ের কেনা গ্রামাফোনটি না বাজালে পুজো পুজো মনে হয় না।”

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে