ছবি: বিশ্বজিৎ নস্কর।
দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: সুস্থ বাস্তুতন্ত্রের এক বিরল ছবি দেখা গেল এই সুন্দরবন লাগোয়া এলাকা। বনের হরিণ ঘুরে বেড়াচ্ছে গেরস্তের উঠোনে। গৃহপালিত পশুদের সঙ্গে একইসঙ্গে থাকছে, খাচ্ছে, রয়েছে মিলেমিশে। কখনও কখনও মানুষের ডাকে সাড়া দিয়ে কাছে গিয়ে আদরও মাখছে। গরু, ছাগলের সঙ্গে হরিণের এই সহাবস্থান দেখে বিস্মিত বনদপ্তরের কর্মী, আধিকারিকরাও। এলাকায় জনসচেতনতার প্রচারে তাঁরা বলছেন, ওদের ক্ষতি করবেন না।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার পাথরপ্রতিমা ব্লক ১৫ টি গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে গঠিত। তার মধ্যে পাথরপ্রতিবার জি প্লট গ্রাম পঞ্চায়েত বঙ্গোসাগরের কুলবতী বিস্তীর্ণ এলাকা নিয়ে। তার মধ্যে জি প্লট গ্রাম পঞ্চায়েতের তটের বাজার সংলগ্ন সতীশ জানার ঘাট এলাকায় প্রতিদিনই দেখা যাচ্ছে, ঘুরে বেড়াচ্ছে একটি হরিণ। কখনও গৃহপালিত পশুর সঙ্গে মাঠে, কখনও এলাকার বাড়িতে ঢুকে বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি খাচ্ছে। মাঝেমধ্যে এলাকার মানুষ ডাকলেও সে অনায়াসে চলে যাচ্ছে। এই দৃশ্য দীর্ঘ প্রায় পাঁচ বছর আগে থেকেই দেখছেন বলে এলাকার মানুষের দাবি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, দীর্ঘ প্রায় চার-পাঁচ বছর আগে হঠাৎ করে একটি হরিণ শাবককে দেখতে পাওয়া যায় নদীর চরে ম্যানগ্রোভ জঙ্গলে। তাকে নিয়ে লোকালয়ে চলে আসে মানুষজন। ধীরে ধীরে হরিণ শাবকটি বড় হতে থাকে বিভিন্ন বাড়ির আর পাঁচটা পোষ্যের সঙ্গে। সেভাবেই তার সখ্য তৈরি হয় গরু, ছাগলদের সঙ্গে। তাদের সঙ্গেই সে মাঠে ঘুরতে যায়, কখনও বাড়ির উঠোনে খেলে বেড়ায়।
মাঝেমধ্যে স্থানীয় প্রশাসন এবং বনদপ্তরের লোকজন এলাকার মানুষকে সতর্ক করে দিয়ে যায়, হরিণ শাবককে যেন কোনওরূপ ক্ষতি করা না হয়। তারপর থেকেই এলাকার মানুষের কাছাকাছি থেকে তাদের আদর-যত্নে বড় হয়ে উঠেছে এই হরিণ। আর তাকে নিয়ে এলাকার মানুষের উৎসাহের কোনও খামতি নেই। গৃহপালিত পশুদের মতোই তাকেও আগলে রাখছেন। তবে মানুষের আদর-ভালোবাসা যতই থাক, এতদিন ধরে এই সহাবস্থান সম্ভব হচ্ছে এলাকার সুস্থ বাস্তুতন্ত্রের জন্য, এমনটাই মনে করছে বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.