সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আধুনিক সভ্যতা তো অনেকটাই যন্ত্রনির্ভর। তা গাড়িই হোক বা অন্য কিছু। সময় যত এগোচ্ছে, ততই বাড়ছে যন্ত্রের ব্যবহার। আর তার ফলস্বরূপ দূষণে জর্জরিত হয়ে পড়ছে গোটা বিশ্ব। প্রতিদিন যাতায়াতের পথে ধোঁয়া, ধুলো থেকে নিজেকে বাঁচানো মুশকিল। তবে সেই মুশকিল আসানেই দিশা দেখাচ্ছেন ইজরায়েলি বিজ্ঞানীরা। এমন একটি গাড়ি আবিষ্কারের কথা তাঁরা ভেবেছেন, যে গাড়ি রাস্তায় চলবে গড়গড়িয়ে, অথচ কোনও দূষণ হবে না। প্রয়োজন পড়বে না পেট্রল বা ডিজেলের মতো জ্বালানিরও।
ইজরায়েলের একদল ইঞ্জিনিয়ারের গবেষণা বলছে, পেট্রল, ডিজেলের বিকল্প হতেই পারে ইথানল। যার মাধ্যমে গাড়ির ইঞ্জিন সচল করা হলে দূষণের মাত্রা তো কমবেই, সেইসঙ্গে জ্বালানি সাশ্রয়ও হবে। ৭০ শতাংশ ইথানল বা অ্যালকোহলের সঙ্গে ৩০ শতাংশ জলের মিশ্রণে যে জ্বালানি তৈরি হবে, সেটাই গাড়ি চালানোর কাজে লাগানো হবে। যদিও এর জন্য গাড়ির ইঞ্জিনও হবে নতুন ধরনের। সেই ইঞ্জিন বানানোর প্রাথমিক কাজই করছেন ইজরায়েলের ৪ বিজ্ঞানী।
[আরও পড়ুন: কাজ শেষ, ২০ বছর পুরনো মহাকাশ স্টেশন ‘বিসর্জন’ হবে প্রশান্ত মহাসাগরে]
তাঁদের এই কাজের একেবারে গোড়ার কথাই হল, পরিবেশ সবচেয়ে বেশি দূষিত করে এমন দুই গ্যাস, সালফার অক্সাইড ও নাইট্রোজেন অক্সাইডকে শুষে নেওয়ার কৌশল। ইঞ্জিন সচল থাকলেও, এই দুই গ্যাস নিঃসরণ হবে না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই দূষণের মাত্রা কমে আসবে। এই মুহূর্তে বিকল্প জ্বালানির ব্যবস্থা করার পথে সবচেয়ে বড় বাধা অতিরিক্ত খরচ। আর সেটাই চ্যালেঞ্জ ইজরায়েলি বিজ্ঞানীদের কাছে। তাঁরা এমন কিছু তৈরি করতে চলেছেন, যা সকলের সাধ্যের মধ্যে থাকবে। দীর্ঘ সময়ের গবেষণায় তাঁরা দেখেছেন, ইঞ্জিনে যেভাবে জ্বালানি শক্তিতে পরিণত হয়ে গাড়িকে গতিশীল করে, সেই একই বৈজ্ঞানিক নীতি মেনে কাজ করবে তাঁদের নতুন ইঞ্জিন। শুধু পেট্রল বা ডিজেলের বদলে সেখানে তরল জ্বালানি হিসেবে থাকবে ইথানল, জলের মিশ্রণ। গবেষক দলের অন্যতম প্রধান ইয়েহুদা স্মিউলির কথায়, ‘আমরা গত ৬বছর ধরে এনিয়ে কাজ করছি। এবার আমরা এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছেছি, যাতে আমাদের মনে হয়েছে যে এই প্রচেষ্টার কথা সকলকে জানানো উচিত। এভাবেও যে দূষণ রোধ করা যায়, তা আমরা প্রকাশ্যে আনতে চাই।’
[আরও পড়ুন: বন্ধু দেশের মহাকাশচারীদের জন্য স্পেস স্টেশন খুলে দিল নাসা]
ইজরায়েলি বিজ্ঞানীদের মস্তিষ্কপ্রসূত ইঞ্জিনটি তৈরি হলেও, এখনই তা বাজারজাত করার ক্ষেত্রে কিছু বাধাবিপত্তি আছে, তা মানছেন তাঁরা নিজেরাও। এই মুহূর্তে বিশ্বে ইলেকট্রিক কার বা বিদ্যুৎচালিত গাড়ির ব্যবহারে তেমন সড়গড় হননি অনেকেই। তাই বিকল্প জ্বালানির সাহায্যে চলা ইঞ্জিনের গাড়ির বিক্রি কতটা হবে, তা নিয়ে সংশয় থাকছে। তবে এসব উড়িয়েই দূষণ বিরোধী কাজে নিজেদের অভিনব ভাবনা বাস্তবায়িত করতেই ব্যস্ত ইজরায়েলের ৪ ইঞ্জিনিয়ার।