Advertisement
Advertisement
Migrant birds

জলঢাকা নদীতে মাছ ধরতে বিষ! পালাচ্ছে পরিযায়ী পাখিরা

বিষাক্ত তিস্তা এড়িয়ে পরিযায়ীর দল জলঢাকা নদীতে ডেরা বাঁধলেও নিস্তার নেই।

Migrant birds allegedly flew away as fishermen using poison in Jaldhaka | Sangbad Pratidin

ছবি: নিজস্ব চিত্র।

Published by: Paramita Paul
  • Posted:January 8, 2024 5:32 pm
  • Updated:January 8, 2024 5:33 pm

বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: মহানন্দা ক্যানালে নেই। নেই গজলডোবায়। বিষাক্ত তিস্তা এড়িয়ে পরিযায়ীর দল জলঢাকা নদীতে ডেরা বাঁধলেও নিস্তার নেই। সেখানে জলে বিষ ছড়িয়ে মাছ ধরার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েকজন জানিয়েছেন, ঘটনার পর কিছু পরিযায়ী উড়ে অন্য নদীতে পাড়ি দিয়েছে। কিছু ক্রমশ দূরে চলে গিয়ে আতঙ্কে রয়েছে। ঘটনার খবর মিলতে উদ্বিগ্ন বোম্বে ন্যাচারাল হিস্ট্রি সোসাইটির পাখি বিশেষজ্ঞ থেকে পরিবেশপ্রেমীরা। মৎস্য বিজ্ঞানীরা কড়া নজরদারির দাবিতে সরব হয়েছেন। তাঁদের শঙ্কা তিস্তার পর রসায়নিক বিষক্রিয়ায় যদি জলঢাকার বাস্তুতন্ত্র ধ্বংস হয় তবে যেমন মাছ মিলবে না। একইভাবে দেশ-বিদেশের পরিযায়ী পাখিরা মুখ ফেরাবে।

বোম্বে ন্যাচারাল হিস্ট্রি সোসাইটির পাখি বিশেষজ্ঞ সৌম্য চক্রবর্তী বলেন, “ভয়ঙ্কর ঘটনা। শীতের এই সময় নদীতে পরিযায়ীরা থাকে। বিষ তেল ছড়িয়ে মাছ ধরা হলে তো ওই পাখিরা আর আসবে না।” তিনি জানান, নিরিবিলি এবং যেখানে পর্যাপ্ত জল, মাছ, জলজ প্রাণীর মতো খাবার রয়েছে পরিযায়ীরা সেখানেই থাকতে পছন্দ করে। বন্যার পরে একদিকে তিস্তায় জল কমেছে। অন্যদিকে প্রচুর মাছ মরেছে। জল ও খাদ্য সংকটের কারণে পরিযায়ীরা মুখ ফিরিয়েছে। এবার যদি জলঢাকা নদীতে খাদ্য সংকট তৈরি হয় তবে ওরা থাকবে না। যখন বক্সা পাহাড়ে পাখি গণনা চলছে তখন ওই ঘটনার খবর মিলতে ক্ষোভ উগড়ে দেন সমীক্ষক দলের প্রধান তথা ‘হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশন’-এর কো-অর্ডিনেটর অনিমেষ বসু। তিনি বলেন, “কয়েকদিনের মধ্যে জলঢাকা নদীতে পাখি গণনা শুরু হবে। এই সময় যদি নদীতে বিষ ঢালা হয় তবে পাখি কোথায় মিলবে! স্থানীয় পঞ্চায়েতরা কেন বিষয়টি দেখছেন না!” ঘটনার কথা শুনে অবাক পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ইন্দ্রনীল ঘোষ। তিনি বলেন, “এই প্রবণতা বন্ধ না হলে কিছুদিন পর নদীতে মাছ মিলবে না। বারবার একথা বলার পরও একই ঘটনা ঘটে চলেছে।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টে বড় জয় বিলকিস বানোর, ধর্ষকদের ফিরতে হবে জেলেই]

 

Advertisement

 

পাখিপ্রেমীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, সাইবেরিয়া, তিব্বত, চিন-সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে পরিযায়ীরা নভেম্বরে উত্তরের বিভিন্ন প্রান্তে ঢুকে পড়ে। থাকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত। জলঢাকা, মূর্তি, তিস্তার গজলডোবায় বেশি সংখ্যায় দেখা মেলে চোখাচোখি, কমন ভুজেন্ডার, রেড কর্বোরেট প্রজাতির জলচর পরিযায়ী পাখি। এবারও এসেছে। তবে সিকিমে হড়পা বানে জল দূষণ এবং নাব্যতা কমে যাওয়ায় তিস্তায় বিদেশি অতিথি পাখিরা নামেনি বললে চলে। ডেরা বেধেছে ময়নাগুড়ি ও ধূপগুড়ির মাঝে জলঢাকায়। সেখানকার কয়েকজন চাষি জানান, ২৭ ডিসেম্বর থেকে নদীতে দফায় দফায় মাছ ভেসেছে। ৩০ ডিসেম্বরেও দেখা গিয়েছে। এরপর থেকে বিভিন্ন প্রজাতির হাস জাতীয় পাখি উড়ে পালাতে শুরু করে। ময়নাগুড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কুমুদরঞ্জন রায় বলেন, “ঘটনাটি জানা ছিল না। পরে শুনে পুলিশ ও স্থানীয় পঞ্চায়েতের সঙ্গে কথা বলে নজরদারি বাড়াতে বলেছি।”

[আরও পড়ুন: দেশের অপমানে মালদ্বীপকে বয়কট! ‘অতিথি দেব ভব’ সংস্কৃতির পাঠ দিলেন ভারতীয় তারকারা]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ