Advertisement
Advertisement

Breaking News

মৎস্যজীবীদের পাশে 'শের'

সুন্দরবনের মৎস্যজীবীদের সুরক্ষায় পাশে দাঁড়াল ‘শের’, নৌকায় বসে রান্নার জন্য বিলি গ্যাস স্টোভ

গভীর জঙ্গলে মাছ ধরতে যাওয়া ১০০জনের হাতে তুলে দেওয়া হল LPG সিলিন্ডার।

SHER distributes 100 LPG cylinders to fishermen in Sunderban
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:August 8, 2020 5:25 pm
  • Updated:August 8, 2020 5:28 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের (Royal Bengal Tiger) সঙ্গে সহবাস। এটাই সুন্দরবনবাসীর স্বাভাবিক জীবন। জীবিকা বলছে জঙ্গলে ফলমূল, মধু সংগ্রহ আর নদী, খাল, বিল থেকে মাছ ধরা। অনেক সময়ে সুন্দরবনের সংরক্ষিত ব্যঘ্র প্রকল্পের এলাকাতেও মৎস্যজীবীদের আনাগোনা থাকে, অবশ্যই বনদপ্তরের বিশেষ অনুমতি সাপেক্ষে। আর সেখানেই ঘাপটি মেরে থাকে বিপদ। নদীর দু’ধারে ঘন জঙ্গলে দক্ষিণরায়ের বাস। সন্ধের পর সেখানে নেমে কাঠকুটো জোগাড় করে মৎস্যজীবীরা রান্নার তোড়জোড় করতে করতেই কখন বাঘের হামলার শিকার হয়ে যান তাঁরা, বুঝতেও পারেন না। তাই তাঁদের সুরক্ষার কথা ভেবে বড় পদক্ষেপ নিল ব্যঘ্র সংরক্ষণ সংস্থা ‘শের’ (SHER)। জঙ্গলে না নেমে, মাছ ধরার নৌকায় বসেই যাতে রান্না করতে পারেন, তার জন্য ছোট গ্যাস স্টোভ বিতরণ করা হল মৎস্যজীবীদের।

SHER-LPG1

Advertisement

বন্যপ্রাণী আর মানুষের যথাযথ সহাবস্থানেই তো সুন্দর হয়ে ওঠে প্রকৃতি, পরিবেশ। সেই লক্ষ্যে বহুদিন ধরেই কাজ করছে ‘শের’। শুধু বাঘ, হাতির মতো বন্যপ্রাণ সংরক্ষণেই নয়, জঙ্গল লাগোয়া এলাকার মানুষজনের নানা প্রয়োজনে এগিয়ে এসেছে এই সংস্থার। কারণ, সংস্থার সদস্যরা মনে করেন, জঙ্গলের আশেপাশের বাসিন্দারা ভাল থাকলেই, বনজঙ্গল রক্ষায় উৎসাহী হবেন, কেউ কাউকে আঘাত না করে সহাবস্থানের পথ প্রশস্ত করবে। মে মাসে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আমফানের পর সুন্দরবন এলাকার বিস্তীর্ণ অংশের বিপর্যস্ত, সর্বহারা মানুষজনের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল ‘শের’। স্যানিটাইজার, ওষুধ, মাস্ক, সাবানের মতো করোনা মোকাবিলার সামগ্রী বিতরণ করে সহায় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এবার জীবিকার সন্ধানে বছরভর জল-জঙ্গল ঘুরে বেড়ানো মানুষজনের স্বার্থে নেওয়া হল আরও বড় পদক্ষেপ।

Advertisement

[আরও পড়ুন: করোনা আবহের মাঝেই সুখবর, বেঙ্গল সাফারি পার্কে আসছে নতুন সদস্য]

‘শের’এর বক্তব্য, সুন্দরবন ব্যঘ্র প্রকল্পের সংরক্ষিত অঞ্চলের জলাশয়ে অনেক সময়েই মৎস্যজীবীরা বনদপ্তরের বিশেষ অনুমতি নিয়ে যান মাছ ধরতে। তা লোকালয় থেকে অনেক দূরে। তাই একদিনের মধ্যে সেখানে গিয়ে ফিরে আসা কার্যত সম্ভব নয়। দিনভর মাছের খোঁজ করে সন্ধেবেলা কোথাও একটা তরী ভিড়িয়ে দেন মৎস্যজীবীরা। সেখানে নেমে জ্বালানি সংগ্রহ করে খাবার তৈরি করেন। আর ঠিক এই সময়েই বাঘের দল নিঃশব্দে তাঁদের উপর হামলায় চালিয়ে নিজেদের খাবার জোগাড় করে নেয়। এভাবেই কত মৎস্যজীবী যে বাঘের পেটে চলে যান, ঠিক নেই। কিন্তু যদি এমন ব্যবস্থা করা যায় যে রান্নার জন্যেও জঙ্গলের কোথাও তাঁদের নামতে হচ্ছে না, তাহলে অনেকটা সুরক্ষিত থাকা যায়। তাই ‘শের’ ওই মৎস্যজীবীদের জন্য গ্যাস স্টোভের আকারে এলপিজি সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করেছে।

[আরও পড়ুন: একরাতেই জঙ্গল থেকে উধাও মূল্যবান ২৭টি সেগুন গাছ, মুখে কুলুপ বনদপ্তরের]

বসিরহাটের বাগনা ও ঝিঙাখালি রেঞ্জে ১০০ জনের হাতে তা তুলে দেওয়া হয়েছে। সুন্দরবন ব্যঘ্র সংরক্ষণ প্রকল্পের ফিল্ড ডিরেক্টর তাপস দাস, ডেপুটি ফিল্ড ডিরেক্টর দীপক এম, বনসংরক্ষণ বিভাগের মুখ্য অধিকর্তা রবিকান্ত সিনহা নিজের হাতে সেসব বিতরণ করেন মৎস্যজীবীদের। ছিলেন ‘শের’এর কর্ণধার জয়দীপ কুণ্ডুও। কীভাবে তা ব্যবহার করতে হবে, সেসবও বুঝিয়ে দেওয়া হয়। মাছ ধরতে বেরনোর সময় নৌকায় এই সিলিন্ডার থাকলে, সেখানেই সময়-সুযোগমতো রান্নাবান্না করতে নিতে পারবেন মৎস্যজীবীরা, তাও বোঝানো হয়। সহজে রান্নার সরঞ্জাম পেয়ে তাঁরা খুশি তো বটেই, কিছুটা নিশ্চিন্তও। অন্তত খাবারের জন্য জঙ্গলে নেমে বাঘের পেটে তো যেতে হবে না।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ