ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: চাঁদের মাটিতে ল্যান্ডার বিক্রমের পরিস্থিতি নিয়ে ফের আশার কথা শোনাল ইসরো। ল্যান্ডার বিক্রম ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়নি বরং অটুট আছে। সোমবার ইসরো সূত্রে এমনই খবর পাওয়া গিয়েছে। ইসরোর এক আধিকারিকের দাবি , ” চন্দ্রযানের অরবিটারে বসানো ক্যামেরা ল্যান্ডার বিক্রমের যে ছবি পাঠিয়েছে, সেই অনুযায়ী ল্যান্ডার বিক্রম তাঁর গন্তব্যস্থলের খুব কাছেই রয়েছে। এবং তা অটুট আছে, ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়নি। এটা কোনও ঢালু জায়গায় অবস্থান করছে।”
[আরও পড়ুন: চাঁদের মাটিতেই হদিশ মিলল ল্যান্ডার বিক্রমের, নিশ্চিত করলেন ইসরো প্রধান]
ইসরোর ওই আধিকারিক অবশ্য মেনে নিয়েছেন, ল্যান্ডার বিক্রমের অবতরণ পরিকল্পনামাফিক হয়নি। সফট ল্যান্ডিংয়ের পরিবর্তে বেশ জোরের সঙ্গেই চাঁদের মাটিতে ধাক্কা খেয়েছে সে। তবে, আশার কথা হার্ড ল্যান্ডিং হওয়া সত্ত্বেও ল্যান্ডার বিক্রম অটুট আছে। ল্যান্ডার বিক্রম অটুট থাকার অর্থ, রোভার প্রজ্ঞানেরও অটুট থাকার সম্ভাবনা প্রবল। ইসরো সূত্রের খবর, বিজ্ঞানীদের একটি বিশেষ দল লাগাতার ল্যান্ডার বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে চলেছে। ১৪ দিন ধরে এই প্রচেষ্টা চলবে। ল্যান্ডার বিক্রম এবং রোভার প্রজ্ঞান দু’জনেরই আয়ু ১৪ দিন। তাই ইসরোর হাতে এখনও বেশ কিছুদিন সময় আছে।
যদিও, বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগের এই রাস্তাটা সহজ নয়। ভেঙে টুকরো টুকরো না হয়ে গেলেও ল্যান্ডার বিক্রমের বেশ কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে অ্যান্টেনা এবং ক্যামেরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে যোগাযোগ সাধন কার্যত অসম্ভব বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানী মহলের একাংশ। ইসরোর এক আধিকারিক এ প্রসঙ্গে বলেন, “যদি ল্যান্ডারের সমস্ত যন্ত্রাংশ ঠিকঠাক না কাজ করে, তাহলে এটা (যোগাযোগ স্থাপন) খুব কঠিন। যদি, ওটার সফট ল্যান্ডিং হত, আর সব যন্ত্র ঠিকমতো কাজ করতো তাহলেই যোগাযোগ করা যেত। এই পরিস্থিতিতে আশা খুবই কম।”
[আরও পড়ুন: ‘বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগের আপ্রাণ চেষ্টা চলছে’, হাল ছাড়েননি ইসরো চেয়ারম্যান]
যদিও ইসরোর অন্দরেই আরেকটা অংশ এখনই আশা ছাড়তে রাজি নয়। আরেকজন বিজ্ঞানী বলছেন, “আমার মতে যোগাযোগ স্থাপনের ভাল সম্ভাবনা রয়েছে। আমাদের এই ধরনের কাজের (হারিয়ে যাওয়া মহাকাশযানের সঙ্গে যোগাযোগ করা) অভিজ্ঞতা রয়েছে। তবে, এক্ষেত্রে এটা চাঁদের মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। ওর নিয়ন্ত্রণ আমাদের হাতে নেই। তাছাড়া বিক্রমের অ্যান্টেনাগুলিকে হয় ইসরোর গ্রাউন্ড স্টেশনের দিকে না হয় অরবিটারের দিকে মুখ করে থাকতে হবে। এই কাজ খুবই কঠিন। তবে আশাও আছে।”