Advertisement
Advertisement
Sachin Tendulkar

‘ব্যাটম্যান ফরএভার’, ‘কোঁকড়া চুলের ঈশ্বরে’ আজও মগ্ন অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়

তাঁর মতে, ‘অর্জুন তুমি অর্জুন’ ওই শচীনই।

Anindya Chatterjee praises Sachin Tendulkar। Sangbad Pratidin
Published by: Biswadip Dey
  • Posted:April 23, 2023 5:16 pm
  • Updated:April 23, 2023 5:16 pm

অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়: এক বহুজাতিক পানীয়র বিজ্ঞাপন মনে পড়ছে। দেশোয়ালি ঠাটে গান গাইছেন রঘুবীর যাদব, আর গ্রামের সব ছেলেছোকরা জড়ো হয়েছে আনন্দের অশত্থতলায়, প্রত‌্যেকের মুখে শচীনের মুখোশ। বিজ্ঞাপনের শেষে দেখা যায় একটা মুখোশ খুলে সত‌্যি শচীন বেরিয়ে এলেন, ‘ওয়ে সচিনা’ বলে বাকিরা তখন হাসির হুল্লোড়পার্টিতে। অতি জনপ্রিয় অ‌্যাডটিতে মূল মেসেজটি প্রকৃত অর্থে কারেক্ট ছিল। আমরা তখন ছোট ছিলাম। আমরা তখন শচীন ছিলাম।

এ কথা ঠিক ভারতীয় ক্রিকেটে গাভাসকর হলেন প্রথম লিটল মাস্টার। কিন্তু এ-ও ঠিক, গাভাসকরোত্তর পর্বে ইন্ডিয়া মানে শুধুই শচীন। রাহুল দ্রাবিড় ছিলেন, সৌরভ গাঙ্গুলি বাঁ দিকের জমির ইজারাদার ছিলেন, কিন্তু পঞ্চপাণ্ডব-এর ধনুর্ধর, ‘অর্জুন তুমি অর্জুন’– ওই শচীনই (Sachin Tendulkar)। বিপক্ষ পাকিস্তান হোক বা অস্ট্রেলিয়া– শচীন মাঠে নামা মানে আমরা নিশ্চিন্ত। দেশের এত বড় বাহুবলী এখনও পর্যন্ত পর্দায় এসেছে কি না সন্দেহ।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘শচীন পাজি কতটা ভাল বলব না, তবে উনি আমার অনুপ্রেরণা’, বললেন অজিঙ্ক রাহানে]

ভারতীয় ক্রিকেটের প্রতি বাকি সব দলের তুমুল সমীহ– সে-ও কি শচীনের গোলাগুলি-বর্ষণের পরই শুরু হয়নি। একটা মানুষ মাত্র ১১ বছর থেকে ব‌্যাট ধরে, ১৬ বছরে টেস্ট খেলে ফেললেন। ২-৩ বছর ঘুরতে না ঘুরতেই সারা দেশের প্রত‌্যাশার চাপ তাঁর প্রথম যৌবনের কাঁধে। খুব সহজ নয় এ গ্ল‌্যাভিয়েটরের জীবন। শচীন শুধু পাখির চোখ দেখে গিয়েছেন। সারা পৃথিবীর ‘আইডল’ হওয়ার অ‌্যাসাইনমেন্ট ছিল তাঁর। চোট-আঘাত, ব‌্যক্তিগত জীবন, দৈনন্দিন ওঠা-নামা পেরিয়ে লাগাতার ২৪ বছর ধরে সে দায়িত্ব পালন করে গিয়েছেন অবিরামভাবে। শুধু অধিনায়কত্মের চাপটুকু তিনি নিতে পারেননি। কেনই বা দেশের সংকীর্ণ গন্ডিতে তাঁর আটকে থাকতে হবে, তিনি, শচীন রমেশ তেণ্ডুলকর, সব ক্রিকেটপ্রেমীর সর্বাধিনায়ক। যদি ডন ব্র‌্যাডম‌্যানের বেদিতে কেউ ব‌্যাট রাখার সাহস পায়, তবে সে শচীন। যদি ভিভ রিচার্ডসকে কেউ প্রতি আক্রমণ মনে করিয়ে দেয়, তবে সে একজনই।

Advertisement

আমাদের ব‌্যান্ডের দ্বিতীয় অ‌্যালবাম ‘গাধা’তে একটি গান ছিল, ‘খেলছে শচীন, খেলছে শচীন, মারছে শচীন ছয়।’ গানটা পুরোপুরি ক্রিকেট নিয়ে এমন নয়, কিন্তু ক্রিকেটবিশ্বের অবিসংবাদী এক পরিত্রাতার দরকার ছিল লিরিকটার। শচীন ছাড়া আর কেউ বসত কি ওখানে? ব‌্যক্তিগত ধারণা গানটার প্রবল জনপ্রিয়তার পিছনেও ওই শচীনেরই ব‌্যাট আছে। দেশজুড়ে থাকা শচীনভক্তের দল আরও বেশি হিট করিয়ে দিল গানটাকে। বেশ কয়েক বছর, যখন সৌরভ গাঙ্গুলি অন‌্যায়ভাবে বাদ গিয়েছিলেন টিম ইন্ডিয়া থেকে, আমরা শচীনের বদলে, খেলবে দাদা খেলবে দাদা মারবে দাদা ছয় গাইতাম। কিন্তু জেমস্‌ বন্ড-এর রোল যে-ই করুক, শঁ কনারিকে কেউ ভোলে না। মাঠ ছেড়ে শচীন চলে গিয়েছেন। সৌরভ চলে গিয়েছেন। শুধু গানটা রয়ে গিয়েছে। সেখানে আরও প্রতি ইনিংসে চার-ছয় মারেন শচীন। যেমন গানের বয়স বাড়ে না, তেমন রানের বয়স বাড়ে না।

[আরও পড়ুন: ‘আমার বাড়িতে তুলিতে হাতেখড়ি’, শচীনকে নিয়ে অভিজ্ঞতার কথা জানালেন শিল্পী সনাতন দিন্দা]

স্কোরকার্ডগুলো একরাশ মনখারাপ নিয়ে জ্বলজ্বলে চোখে তাকিয়ে দেখে সবুজ পিচ। যত বিরাট প্রতিভা আসুক, সূর্য ঝলসে উঠুক এ উপমহাদেশে, শচীন তাঁর কপিবুক ডিফেন্স নিয়ে শচীনই থাকবেন, তাঁকে ক্রিজ থেকে নড়ানো খুব শক্ত। আমার ছেলে জুজু ব‌্যাটম‌্যান সিরিজের ফিল্মের ভক্ত। সে যখন জিজ্ঞেস করে, ব‌্যাটম‌্যান হিসাবে কে তোমার বেশি ফেভারিট? বেন ‌অ‌্যাফ্লেক না রবার্ট প‌্যাটিনসন? আমার চোখে ভাসে এক কোঁকড়া চুলের ঈশ্বরের মুখ। বলি, আমার দেখা সেরা ব‌্যাটম‌্যান শচীন তেণ্ডুলকর। আমরা এখনও তাঁর মুখোশ পরে আছি। আমরা এখনও তাঁর মুখোশ পরে বাঁচি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ