Advertisement
Advertisement
বাংলাদেশ

দক্ষিণ আফ্রিকাকে বধ করে খুশিতে ফুরফুরে এগারো বাঙালির ড্রেসিং রুম

ইদ ভুলে মাশরাফির মন বিশ্বকাপে।

Cricket World Cup: Bangladesh jubilant after beating S Africa
Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:June 4, 2019 1:14 pm
  • Updated:June 4, 2019 1:14 pm

রাজর্ষি গঙ্গোপাধ্যায়: ইদ কবে পড়ছে? ৪ জুন? নাকি ৫ জুন? বিলেতে ফোন করে জানা গেল, দু’দিনের যে কোনও একদিন পড়তে পারে। পদ্মাপার ক্রিকেটারদের স্ত্রী-রা অনেকেই উপস্থিত হয়ে গিয়েছেন। মাশরাফি মোর্তাজার স্ত্রী রবিবারই ঢুকে পড়েছিলেন। মাহমুদুল্লাহ, মুশফিকুর রহিমের স্ত্রী-রাও ঢুকে পড়বেন। কিন্তু তিনি- স্বয়ং বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি মোর্তাজার নাকি নিজেরই বিশেষ কোনও হেলদোল নেই!

ইদ যে দিনই পড়ুক, ৫ কিংবা ৬ জুন, মাশরাফি মোর্তাজা নাকি সে সব নিয়ে বিশেষ ভাবতে চান না। দক্ষিণ আফ্রিকাকে বধ করে খুশির যে ফুরফুরে আবহ এগারো বাঙালির সংসারে তৈরি হয়ে আছে, তাতে ইদ পালনের তোড়জোড় আরও ভাল ভাবে চলাটাই বোধহয় মাননসই ছিল। কিন্তু তিনি, মাশরাফি ওপার বাংলার আবেগের অধিনায়ক হয়েও ইদ উদযাপনের আবেগে গা ভাসাতে চাইছেন না। কারণ- বাংলাদেশ অধিনায়ক মন রাখতে চাইছেন বিশ্বকাপে।

Advertisement

সোমবার বিলেতে ফোন করে জানা গেল, বাংলাদেশ অধিনায়ক নাকি স্বদেশীয় সাংবাদিকদের বলে দিয়েছেন ইদ তাঁদের মাথায় নেই। “আমরা খেলাতেই বেশি করে ফোকাসটা রাখতে চাইছি। ইদ আগের দিন হলেও মাঠে থাকতে হবে। পরের দিন হলেও সেই মাঠেই থাকতে হবে।” আসলে আগামী ৫ জুন যে দিন ভারত বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে, সেই একই দিনে বাংলাদেশও নামবে। নামবে তাদের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে। আর হ্যাঁ, বাংলাদেশ অধিনায়ক সঙ্গে এটাও বলে দিয়েছেন, দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানোর পরেও তিনি নিজেদের ফেভরিট মানতে রাজি নন। শোনা গেল, পদ্মাপারের প্রাণাধিক প্রিয় ম্যাশ দেশজ সাংবাদিকদের বলেছেন, “আমরা কোনও টিমের বিরুদ্ধেই ফেভারিট নই। ইংল্যান্ডের পরিবেশের কারণে তো আরওই নয়। আমরা শুধু ভাল খেলতে চাই। ছোট ছোট যে সব অবদান ক্রিকেটাররা রাখছে, সেটা তারা রেখে যাক। আমি চাই, ধারাবহিকতাটা যেন থাকে।”

Advertisement

শুনেটুনে বাংলাদেশের কোনও কোনও সাংবাদিকের মনে হয়েছে, অধিনায়ক টিমের উপর থেকে চাপ সরানোর কারণেই কথাগুলো বলছেন। ইদ নিয়ে ভাববেন না বলছেন। আসলে ২০০৩ বিশ্বকাপে কানাডার কাছে হেরে গিয়েছিল বাংলাদেশ। যা পদ্মাপারের অন্যতম ক্রিকেট যন্ত্রণার কালো স্মৃতি হিসেবে আজও থেকে গিয়েছে। কারও কারও ধারণা, মাশরাফি তাই এবার চান না, বাড়তি কোনও আবেগ দেখাতে। বরং তিনি নাকি চান যে, দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানোর পর টিমের ভেতরে যে উদ্বেল আবেগটা জন্ম নেবে, সেটাকে বিনাশ করতে। যাতে ধারাবাহিকতাটা রেখে দেওয়া যায়। যে কারণে মাশরাফি নাকি বারবার বলে যাচ্ছেন, বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল খেলতে হবে, বা ফাইনালে উঠতে হবে— এ সব ভাবনাকে পুরোপুরি বাদ দিতে হবে। নইলে গন্ডগোল। কারণ এ সব উচ্চাশা-উচ্চাকাঙ্খাগুলো অহেতুক চাপ সৃষ্টি করে।

এটা ঠিক যে, বাংলাদেশ টিমের সবাই মাশরাফির মতো ভাবছেন না। যেমন রবিবারের ম্যাচের নায়ক শাকিব আল-হাসান। যিনি এ দিন স্বদেশীয় সাংবাদিকদের বলে দিয়েছেন, “এরপর বাকি টিমগুলো আমাদের নিয়ে সতর্ক হয়ে যাবে। তাতে দু’টো সুবিধে আমাদের হতে পারে। বাকি টিমগুলো আমাদের বিরুদ্ধে নার্ভাস থাকতে পারে। অথবা বেশি প্ল্যান করতে গিয়ে নিজেরাই সমস্যায় পড়তে পারে।” কিন্তু টিমের অধিনায়ক নিজেই আবার নিজেদের এত এগিয়ে রাখতে রাজি নন। আর বহিঃপ্রকাশে তার প্রমাণও আছে। রবিবাসরীয় দক্ষিণ আফ্রিকা বধের পর মাঠে আনন্দ করলেও বল্গাহীন মোটেও হয়ে পড়েনি বাংলাদেশ। অনেক নিয়ন্ত্রিত, অনেক পরিমিত আবেগ তারা প্রদর্শন করেছে। যার নেপথ্য কারণ একটাই। পদ্মাপারের অধিনায়ক। আপাদমস্তক আবেগে মোড়া মানুষটাই আজ আবেগ ঝেড়ে ফেলে বাস্তবে বিশ্বাসী।

দেশের স্বার্থে! বিশ্বকাপের স্বার্থে!

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ