Advertisement
Advertisement

Breaking News

অশ্বিনের পর এবার দেবাং গান্ধী, শাস্ত্রী-রাজ নিয়ে বিস্ফোরক প্রাক্তন ক্রিকেটার

শাস্ত্রী-কোহলি জমানা নিয়ে ক্রমেই বাড়ছে বিতর্কের আঁচ।

Debang Gandhi vented his anger on Ravi Shastri। Sangbad Pratidin
Published by: Biswadip Dey
  • Posted:December 23, 2021 8:53 am
  • Updated:December 23, 2021 8:53 am

রাজর্ষি গঙ্গোপাধ্যায়: রবিচন্দ্রন অশ্বিন (Ravichandran Ashwin) যা ঘটিয়েছেন, তাকে সহজ বাংলায় আগ্নেয়গিরি বলে! আগ্নেয়গিরি ফাটলে যে ভাবে দিগ্বিদিকশূন্য হয়ে ছড়িয়ে পড়ে আগুন, জ্বলন্ত ‘খিদেয়’ বন-বাদাড় ভাসিয়ে নিয়ে যায়, যে ভাবে সৃষ্টি হয় নতুন অগ্নুৎপাতের উৎসমুখ– মঙ্গলবারের পর থেকে ভারতীয় ক্রিকেটে ঠিক সেটাই ঘটছে। নইলে সেই সময়কার (অশ্বিনের প্রতি অবিচার ঘটেছিল যখন) জাতীয় নির্বাচক কেনই বা ক্ষিপ্ত ভাবে মুখ খুলবেন? বলে দেবেন, আগামীতে আরও কত জন রবিচন্দ্রন অশ্বিনের মতো বেরিয়ে আসেন, তিনি দেখতে চান! পকেটে বিস্ফোরক সাক্ষাৎকার নিয়ে!

নির্বাচকের নাম? দেবাং গান্ধী (Devang Gandhi)! ভারতের হয়ে খেলেছেন। বাংলার অধিনায়কত্ব করেছেন। সবচেয়ে বড় কথা, পূর্বতন জাতীয় নির্বাচক কমিটির তিনি অংশ ছিলেন। ঠিক যখন অশ্বিনের প্রতি অবিচার পরপর ঘটছিল।

Advertisement

[আরও পড়ুন: বৃহস্পতিবার হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে বছরের শেষ ম্যাচে এসসি ইস্টবেঙ্গল, কোচেরও কি বিদায় নিশ্চিত?]

মঙ্গলবার এক ক্রিকেট ওয়েবসাইটকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অশ্বিন বলে দিয়েছেন যে, সিডনি টেস্টে কুলদীপ যাদব পাঁচ উইকেট পাওয়ার পর তৎকালীন ভারতীয় কোচ রবি শাস্ত্রী (Ravi Shastri) যে ভাবে বলেছিলেন এরপর থেকে কুলদীপই বিদেশে এক নম্বর স্পিনার হবে, শুনে মনে হয়েছিল তাঁকে ভেতরে ভেতরে কেউ থেঁতলে দিয়েছে! বাসের তলায় ফেলে দিয়েছে। অশ্বিন অভিযোগ করেছেন, সেই দুঃসময়ে একজনও তাঁর পাশে দাঁড়াননি। বরং চোট নিয়ে পঞ্চাশ ওভার বল করার পরেও শুনেছিলেন, ড্রেসিংরুমে তাঁকে নিয়ে হাসি-মস্করা চলছে। অশ্বিন এটাও বলে দিয়েছেন যে, ভেবেছিলেন, ক্রিকেটটাই ছেড়ে দেবেন। রক্তাক্ত হয়ে টিকে থাকা যায় কত দিন?

Advertisement

“অশ্বিন যা বলেছে, স্তব্ধ করে দেওয়ার মতো। শুনলে যে কারও ওর জন্য খারাপ লাগবে। আমি এতটুকু অবাক হব না, অশ্বিনের মতো আরও কয়েক জন এরপর প্রকাশ্যে এলে। আরও এ রকম বিস্ফোরক সাক্ষাৎকার বেরোলে।” নয়াদিল্লি থেকে বুধবার রাতে ফোনে বলছিলেন প্রাক্তন জাতীয় নির্বাচক দেবাং। সঙ্গে যোগ করলেন, “শাস্ত্রী যে কথাটা কুলদীপকে নিয়ে বলেছিল, সেটা বাকিদের পক্ষে অত্যন্ত অপমানজনক। তোমার টিমে অশ্বিন আছে। আর তুমি কিনা বলছ, কুলদীপই এখন থেকে এক নম্বর স্পিনার হবে? ঠিক আছে, তুমি কেউ ভাল করলে বলতেই পারো দারুণ করেছ। কিন্তু সে-ই এক নম্বর বললে তো বাকিদের অসম্মান করা হয়। তুমি কোচ, তোমাকে তো গোটা টিমের সম্মানের কথা ভাবতে হবে,” গরগর করতে থাকেন দেবাং।

[আরও পড়ুন: পাক চ্যালেঞ্জ উড়িয়ে এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ব্রোঞ্জ জিতল ভারতের হকি দল]

প্রাক্তন জাতীয় নির্বাচক আর কিছু বলতে চাইলেন না। ফোন রেখে দিলেন। কিন্তু ক্রিকেটমহলে খোঁজ চালিয়ে শাস্ত্রী জমানা নিয়ে যা শোনা গেল, স্তব্ধ করে দেওয়ার মতো। জাতীয় নির্বাচকদের নাকি টিমের ব্যাপার স্যাপারে ঢুকতেই দিতেন না শাস্ত্রী! কোনও কথাই শোনা হত না। অনিল কুম্বলে ভারতীয় টিমের কোচ থাকার সময় একটা নিয়ম চালু করেছিলেন যে, প্রথম এগারো নির্বাচনে অধিনায়ক, কোচ, ম্যানেজার আর একজন জাতীয় নির্বাচক থাকবেন। কিন্তু শাস্ত্রী এসে সে সবের পাট তুলে দেন। যার পর কোনও কোনও নির্বাচকের মনে হয়েছিল, তাঁরা বিদেশ সফরে ট্র্যাভেল করছেন কেন টিমের সঙ্গে? ঘুরতে? শোনা গেল, অশ্বিনের প্রতি যে ‘নির্যাতন’ চলছে, তা কানাঘুষো জাতীয় নির্বাচকদের কানেও পৌঁছেছিল। কিন্তু সত্যি-মিথ্যে বলবে কে? টিমের অন্দরে ঘেঁষারই তো অনুমতি নেই।

এঁরা কেউ কেউ অত্যাশ্চর্য হয়ে যাচ্ছেন, তৎকালীন নির্বাচক প্রধান এমএসকে প্রসাদের ডিফেন্সিভ স্টান্স দেখে। এঁদের প্রশ্ন, কেন এমএসকে মুখ খুলছেন না? কেন অশ্বিন-কাণ্ডের পরোক্ষ দায় তৎকালীন নির্বাচক কমিটির উপর টেনে আনছেন? এ দিন সন্ধেয় এমএসকে প্রসাদকে অশ্বিন-বিতর্ক নিয়ে ফোন করা হলে তিনি বললেন, “কী বলব বলুন? বলে নতুন করে আর বিতর্ক সৃষ্টি করতে চাই না।”

মুশকিল হল, এমএসকে প্রসাদ না বলুন। উত্তেজিত ক্রিকেটমহল কিন্তু জবাবদিহি চায়। কেউ কেউ বললেন, অশ্বিন নিজেরটা বলেছেন। কিন্তু চেতেশ্বর পুজারার হয়ে কে বলবেন? কে প্রশ্ন তুলবেন, কোন যুক্তিতে ২০১৮ ইংল্যান্ড সফরে বার্মিংহাম টেস্টে বাদ পড়েছিলেন পুজারা? সেটাও কাউন্টি ক্রিকেটে রান করে?

বলা হচ্ছে, শাস্ত্রী-কোহলি জমানায় এমন আতঙ্কের বাতাবরণ থাকত ভারতীয় ড্রেসিংরুমে যে বিশেষ ট্যাঁ-ফোঁ করার উপায় ছিল না। সামান্যতম বেচাল দেখলেই তুমি বাদ! বলা হল, অশ্বিন তো ভুল বলেননি। সহমর্মিতা বলে কোনও বস্তুই তখন ছিল না। নইলে যে কুলদীপ যাদবকে নিয়ে শাস্ত্রীরা এককালে এত নাচানাচি করেছেন, তিনি কোথায় এখন? টিম পাশে দাঁড়ালে, সহমর্মিতা দেখালে, কে বলতে পারে কুলদীপের অবস্থা এ রকম হতই না। এটাও বলা হল, ‘ফিয়ারলেস ক্রিকেটের’ ডঙ্কা বাজাতেন যে কোচ, তারই নেতৃত্বাধীন টিম ম্যানেজমেন্ট অস্ট্রেলিয়ায় এক তরুণ ক্রিকেটারকে নির্দেশিকা পাঠিয়েছিল যে, ড্রয়ের জন্য খেলো। সে শোনেনি।

বিতর্কের কবর খোঁড়াখুঁড়ি আরও দিন কয়েক এ ভাবে চললে, বিতর্কের কত কালকেউটে আরও বেরোবে, জানা নেই। তবে একটা জিনিস নির্জলা সত্যি। এ সব লাভাপ্রপাতের পাশে ক্রমশ ফুটনোট হয়ে পড়ছে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট সিরিজ। পাঠক, আপনার নিজেরও কি আর মনে আছে প্রথম টেস্ট আর তিন দিনে শুরু?

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ