Advertisement
Advertisement

Breaking News

Harbhajan about Sachin

কীভাবে উন্নতির দীক্ষামন্ত্র দিয়েছিলেন শচীন? জানালেন হরভজন সিং

ভাজ্জির উপর একবার রেগেও গিয়েছিলেন মাস্টারব্লাস্টার।

Harbhajan Singh speaks about Sachin Tendulkar | Sangbad Pratidin
Published by: Suparna Majumder
  • Posted:April 23, 2023 6:21 pm
  • Updated:April 23, 2023 6:21 pm

হরভজন সিং: শচীনের (Sachin Tendulkar) সঙ্গে আমার ঠিকঠাক সাক্ষাৎ হয় ১৯৯৭ সালে। তত দিনে জুনিয়র ক্রিকেটে আমার বেশ নামডাক হয়ে গিয়েছে দুসরা দিতে পারি বলে। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে মোহালি টেস্টের আগে ভারতীয় নেটে ডাক পড়ে আমার। কয়েক দিন ধরে নেটে আমি ঘণ্টার পর ঘণ্টা বোলিং করেছিলাম। ভারতের সমস্ত বাঘা ব্যাটারদেরই বল করেছিলাম আমি–- শচীন, রাহুল, দাদা। এবং ক্রিজের উলটো দিকে শচীনকে দেখে আমি স্রেফ স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। আসলে ভক্ত হলে যা হয়। কিন্তু বল করার সময় কোনও রকম স্নায়ুর চাপে ভুগিনি। মনে আছে, আমার বোলিং খেলার পর শচীন বলেছিল, ‘‘আরও খাটো। পরিশ্রম চালিয়ে যাও।’’

Sachin-Harbhajan-1

Advertisement

সেই টেস্টের বছরখানেকের মধ্যে ভারতের হয়ে খেলা শুরু করি। আর শচীন তেণ্ডুলকর রাতারাতি আমার সতীর্থ হয়ে যায়। কিন্তু আমাদের মধ্যে বন্ধুত্ব প্রগাঢ় হয় ২০০১ সালে অস্ট্রেলিয়া সিরিজের পর। যে সিরিজ আমার জীবন বদলে দিয়েছিল। ইডেন হ্যাাটট্রিকের পর দু’টো ঘটনা আমার মনে আছে। প্রথমত, শচীন পাজি এসে আমাকে বলেছিল, ‘‘বল ভাজ্জি, তোর কী চাই?’’ আমি সসংকোচে বলেছিলাম, ‘‘পাজি তোমার অ্যাডিডাস বোলিং স্পাইক আমার দারুণ লাগে। আমাকে একজোড়া আনিয়ে দিতে পারবে?’’ শুনে একগাল হেসে শচীন বলেছিল, ‘‘ব্যস, তোর এটুকুই চাই?’’ এক সপ্তাহের মধ্যে অ্যাডিডাসের লোকজন এসে আমাকে গোটা কয়েক দামী বোলিং স্পাইক দিয়ে যায়।

Advertisement

দ্বিতীয় বিষয়টা, আমার উন্নতির সঙ্গে জড়িয়ে। অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। চেন্নাই টেস্ট আমরা জেতার পর, সিরিজ জেতার পর, মনে আছে শচীন আমার পাশে একটা চেয়ার টেনে বসেছিল। খেলা শেষের পর। বলেছিল, ‘‘ভাজ্জু, তুই কখনও রেসের ঘোড়া দেখেছিস? দেখবি, রেসের ঘোড়া কখনও আশপাশে তাকায় না। ওরা শুধু সোজা তাকায়, ওদের চোখ থাকে শুধুমাত্র টার্গেটে। তোকে সে রকম হতে হবে। মহাতারকা এখন তুই। তোর পাশে এখন প্রচুর বন্ধুবান্ধব চলে আসবে। কিন্তু তোকে বুঝতে হবে, কারা সত্যিকারের বন্ধু।’’

শচীনের থেকে আরও একটা জিনিস শিখেছিলাম আমি– নম্রতা। কিন্তু তাতে যদি ভাবেন, শচীন রাগ করত না, ভুল করছেন। আমিই একবার অস্ট্রেলিয়া সফরের সময় শচীনের রোষে পড়ে গিয়েছিলাম। ১৯৯৯ সালে।

[আরও পড়ুন: ‘ভয়ডরহীন মানসিকতার নাম শচীন’, মাস্টার ব্লাস্টারকে বিশেষ বার্তা সুনন্দন লেলের]

একটা ‌টুর ম্যাচে খেলছিলাম আমি। টেস্টে চান্স পাইনি বলে ওই ম্যাচটা খেলছিলাম। বাউন্ডারি লাইনের ধারে ফিল্ডিং করছিলাম। তা বাউন্ডারি লাইনের পাশেই সুন্দরী কয়েক জন মহিলা বসেছিল। কুড়ি বছর বয়স তখন আমার। প্রথমবার অস্ট্রেলিয়া সফরে গিয়েছি। তাই মাঝে মাঝে ওদের দেখা বা হাসি বিনিময় করার মধ্যে ভুল কিছু খুঁজে পাইনি। কিন্তু মনঃসংযোগের কারণে বাউন্ডারির দিকে ছুটে আসা কিছু শট বুঝতে আমার দেরি হয়েছিল। কিন্তু পরিস্থিতি খারাপ হতে শুরু করে, যখন আমি মহিলাদের দিকে হাঁ করে তাকিয়ে থাকা শুরু করি। শুনতেই পাইনি যে, শচীন ফিল্ড চেঞ্জের কথা বলছে। আর কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেখি, শচীন আমার পাশে দাঁড়িয়ে। মুখচোখে প্রচণ্ড রাগ নিয়ে।

Sachin-Harbhajan

‘‘ভাজ্জি, একটা জিনিস জেনে রাখো। তুমি আমার ভাল দিকটা দেখেছ। কিন্তু চাইলে আমি অত্যন্ত রূঢ় হতে পারি। তাই খেলায় মন দাও।’’ লজ্জায় লাল হয়ে গিয়েছিলাম আমি শুনে। আর বিশ্বাস করুন, বাকি সময়ে গ্যালারির দিকে তাকানোর সাহসটুকু পর্যন্ত আমার হয়নি।
আজ মনে হয়, জীবনে নিশ্চয়ই আমি ভাল কিছু করেছি। ভাল কিছু করেছি বলেই না আমি মাঠে শচীন তেণ্ডুলকরের সঙ্গে খেলতে পেরেছি!

[আরও পড়ুন: ‘কত পথ পেরলে শচীন হওয়া যায়?’ জানতে চাইছেন লিটল মাস্টারে আপ্লুত শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ