স্টাফ রিপোর্টার: সিএবি প্রেসিডেন্ট অভিষেক ডালমিয়া শুক্রবার রাতে ঘুমিয়েছেন মাত্র দু’ঘণ্টা। দু’দণ্ড বসার সময় নেই, কথা বলার সময় নেই, কাপের পর কাপ কফি আর মাথা যন্ত্রণার অ্যাসপিরিনের উপর চলছে পুরোটা। কী করা যাবে, রাতারাতি যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি তো তৈরি হয়ে গিয়েছে বঙ্গ ক্রিকেট সংস্থায়! না, না রাশিয়া বনাম ইউক্রেনের মতো সত্যিকারের যুদ্ধ-উত্তাপ নেই সিএবিতে। আছে যেটা, টিকিট-পিপাসুদের প্রবল দৌরাত্ম্য। অমুকের নামে পাঁচটা, তমুকের খামে দশটা। ইডেনে আন্তর্জাতিক ম্যাচ পড়লে, যা চিরাচরিত চিত্র। এবং তা সামাল দেওয়া মোটেও পুরোদস্তুর যুদ্ধ করার চেয়ে সহজ নয়!
আসলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের (West Indies Cricket Team) বিরুদ্ধে ইডেনে প্রথম দু’টো টি-টোয়েন্টিতে রোহিত শর্মার (Rohit Sharma) ভারতের রাজত্ব যতই চলুক না কেন, দর্শক বসে তা চর্মচক্ষে দেখতে পাননি। উল্টে দেখতে হয়েছে রাস্তাঘাটে বাস-ট্রাম চলছে দিব্য। লোকজন অফিস যাচ্ছে। সিনেমা দেখছে। ঢোকা যাচ্ছে না শুধু ইডেনে। রাজ্য সরকার স্টেডিয়ামে পঁচাত্তর শতাংশ দর্শক থাকার অনুমতি দেওয়ার পরেও, ভারতীয় বোর্ডের ইচ্ছেয়। রবিবার সেই ‘নিষেধাজ্ঞা’ কিছুটা হলেও উঠবে। এত দিন মাঠে আসছিলেন, হাজার তিনেক। আজ থাকবে হাজার পঁচিশ। সাতষট্টি হাজারের স্টেডিয়ামে সংখ্যাটা অর্ধেকেরও কম বটে, তবে দর্শকের ‘টানাটানির সংসারে’ বড় কমও নয়। এ দিন ইডেনের টিকিট কাউন্টারে ভাল ভিড়-ভাট্টাও দেখা গেল। দেখলে কে বলবে, সিরিজ শেষ, রবিবারের ম্যাচ নিয়মরক্ষার মাত্র? দেখে কে বুঝবে, রোববার দুপুর থেকে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি আছে?
সবচেয়ে বড় কথা, সব রকম অধিনায়কত্ব যাওয়ার পরেও ভারতীয় টিমের এক নম্বর ধ্রুবতারা যিনি, সেই বিরাট কোহলিই (Virat Kohli) নেই। যিনি শহর ছেড়ে যাওয়ার আগে হাফসেঞ্চুরিতে ইডেন রাঙিয়ে দিয়েছেন। এ দিনই ঋষভ পন্থ আর বিরাট শহর ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে তৃতীয় টি-টোয়েন্টি খেলবেন না, আপাতত দু’জনেই নিপাট বিশ্রামে। অবশ্য ভারতের প্রেক্ষিত থেকে দেখতে গেলে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ভরাডুবির পর টানা দু’টো টি-টোয়েন্টি সিরিজে প্রতিপক্ষকে চুনকাম সম্ভাবনা আর আসন্ন বিশ্বকাপের আগে রিজার্ভ বেঞ্চের অস্ত্রশস্ত্র দেখে নেওয়া ছাড়া বিশেষ কিছু নেই। সিরিজ জিতে উঠে শুক্রবার রাতে ঋষভ পন্থ বলেও যান, “অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে যত বেশি সম্ভব, কম্বিনেশন দেখে নেব আমরা।”
খবরাখবরে আসা যাক। কোহলি নেই, তাই নতুন কেকেআর অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার যে ঢুকবেন বলে দেওয়াই যায়। আর পন্থ না থাকায় কিপিংয়ের দায়িত্ব বর্তাবে ঈশান কিষানের উপর। যিনি ইডেনের প্রথম দু’টো ম্যাচে ওপেন করেছিলেন। তবে সম্ভবত রবিবার ব্যাটিং অর্ডারে তাঁকে নিচের দিকে নামতে হবে। কারণ, সব ঠিকঠাক চললে রুতুরাজ গায়কোয়াড়ের অভিষেক ঘটছে। হওয়া উচিতও। দিনের পর দিন মহারাষ্ট্র ওপেনারকে বসিয়ে রাখা নিয়ে ভারতীয় ক্রিকেটমহলের একাংশে ঘোরতর অসন্তুষ্ট। বিশেষ করে মরাঠা ক্রিকেট-উপকুল।
আক্ষেপ একটাই। দু’ম্যাচ পর ইডেনে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দর্শক ফিরছে ঠিকই। কিন্তু ওটুকুই। তার বাইরে বিশেষ কিছু হচ্ছে না। কোনও প্রাক্তন ক্রিকেটার বা বিশেষ অতিথি– কেউই আসছেন না। অথচ ছিলেন। এসে গিয়েছেন শহরে একজন। পদ্মাপারের মহাতারকা যিনি। বিরাটহীন শহরে যাঁকে তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে গাড়ি পাঠিয়ে সিএবি নিয়ে এলে মন্দ হত না।
শাকিব-আল-হাসান (Shakib Al Hasan) কলকাতায়। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ কাঁপিয়ে বিজ্ঞাপনী কাজকর্মে শহরে ঝটিতি সফরে। টালিগঞ্জ বা কালীঘাট চত্বরে আজ তাঁকে দেখা যাবে!
আজ টিভিতে-ভারত বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ, তৃতীয় টি-টোয়েন্টি, ইডেন
সন্ধে ৭.৩০, স্টার স্পোর্টস
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.