Advertisement
Advertisement
Lalit Modi

‘প্রোমোশন-রেলিগেশন চালু হলে আইপিএলের আকর্ষণ আরও বাড়বে’, মত ললিত মোদির

শুধু সৌদি-বিনিয়োগ ঘটলেই হবে না। সেখানেও উপর্যুপরি পরিকাঠামো গড়ে ওঠা দরকার।

Lalit Modi thinks that the attraction of IPL will be increased if promotion and relegation is introduced । Sangbad Pratidin
Published by: Krishanu Mazumder
  • Posted:November 9, 2023 2:04 pm
  • Updated:November 9, 2023 2:47 pm

আইপিএলে (IPL) বিনিয়োগ করতে চেয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে সৌদির ধনকুবেররা। আর সেটা হলে বিবর্তন ঘটবে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে। আইপিএল যাঁর মস্তিষ্ক-প্রসূত সেই ললিত মোদি (Lalit Modi) কী ভাবছেন এই ব্যাপার নিয়ে? আইপিএলে সৌদি-বিনিয়োগ নিয়ে বোরিয়া মজুমদার-কে একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন ললিত মোদি। আজ তার দ্বিতীয় পর্ব

ফুটবলে সৌদি-বিনিয়োগ নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করেছে। বিপুল অর্থের বিনিময়ে বিশ্ব ফুটবলের সেরা তারকারা সৌদি ফুটবল লিগে যোগ দিচ্ছেন। আইপিএলেও কি তেমন দৃশ্য দেখা যেতে পারে?
ললিত: সৌদি ফুটবল লিগের সঙ্গে আইপিএলকে গুলিয়ে ফেলা ভুল হবে। এই মুহূর্তে তেমন কোনও পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি। সৌদিতে কোনও ক্রিকেট স্টেডিয়াম গড়ে ওঠেনি। তবে ভবিষ্যতে নিশ্চয় তা হবে। সেটা হতে এখনও পাঁচ থেকে সাত বছরের অপেক্ষা। আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে। কারণ শুধু সৌদি-বিনিয়োগ ঘটলেই হবে না। সেখানেও উপর্যুপরি পরিকাঠামো গড়ে ওঠা দরকার। এবং সবচেয়ে বেশি করে যেটা দরকার, তা হল ক্রিকেট নিয়ে আরব দুনিয়ায় আগ্রহ তৈরি করা। এই মুহূর্তে সেটা একদমই নেই। সেটা করতে গেলে ফ্যান বেস তৈরি করতে হবে। আর সেটা তখনই সম্ভব যখন বেশি করে ক্রিকেট প্রদর্শনী ম্যাচ আয়োজিত হবে সৌদির মাটিতে।
পরিকাঠামো গড়ে তোলার কথা বলছেন। সেটা কীভাবে সম্ভব?
ললিত: প্রথম কথা ক্রিকেটের প্রতি দায়বদ্ধতা থাকা দরকার। এই মুহূর্তে ক্রিকেট নিয়ে সৌদিতে যেটুকু আগ্রহ সেটা ওদেশে কর্মরত পরিযায়ী শ্রমিক এবং কর্মীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ। সৌদি নাগরিকদের মূল আগ্রহ কিন্তু ফুটবলকে ঘিরে। সেখান থেকে দৃষ্টি সরাতে হলে আইপিএলের মতো চিত্তাকর্ষক ইভেন্টের দরকার। ফুটবলের ব্যাপ্তি অনেক বড়, সেবিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু সেটা ক্রিকেটের জনপ্রিয়তাকে গ্রাস করবে, এমন দুশ্চিন্তা অমূলক। অন্য দেশে দেখুন। অস্ট্রেলিয়ায় এ-লিগ আর বিগ ব্যাশ পাশাপাশি চলছে। আইপিএলের পর বিগ ব্যাশ বিশ্বের দ্বিতীয় জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগ। সেই তুলনায় অনেক পিছিয়ে ‘দ্য হানড্রেড’। ক্রিকেট নিয়ে আগ্রহ তৈরি হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। বিনিয়োগের জন্য আদর্শ মঞ্চ এই মুহূর্তে আমেরিকা। লস অ্যাঞ্জেলস গেমসে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের অন্তর্ভুক্তি সেই আগ্রহকে আরও ত্বরান্বিত করবে। আমেরিকায় ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ সবদিক থেকে উজ্জ্বল। 

Advertisement

[আরও পড়ুন: উনিশের দুঃস্বপ্ন ফিরবে না তো! বুমরাহ-সিরাজদের ব্যাটিংয়ে আত্মনির্ভর করতে চান দ্রাবিড়]

একটা প্রশ্ন না করেই পারছি না। আইপিএলে প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন সৌদির লগ্নীকারীরা। সেই অঙ্কের বিচারে প্রতিটি দল পিছু বিনিয়োগের অঙ্কটা দাঁড়ায় ১.৮ বিলিয়ন ডলার। যদি প্লেয়ারদের উপার্জনের অঙ্কটা বিচার করা হয়, সেটা বর্তমান স্যালারি-কাঠামোর নিরিখে যথেষ্ট কম। নয় কি?
ললিত: দেখুন, এটা একটা প্রস্তাবিত অঙ্ক। বিনিয়োগের প্রথম পদক্ষেপ হিসাবে এটাকে দেখতে পারেন। আমরা যখন আইপিএল শুরু করেছিলাম, তখন প্লেয়ারদের ন্যূনতম স্যালারি-ক্যাপ কত ছিল? পাঁচ লাখ। সেটা সময়ের সঙ্গে ক্রমশ বেড়েছে। পনেরো বছরে সেই অঙ্কটাই এখন ১.৫ মিলিয়নের কাছে। কিন্তু শুধুমাত্র প্লেয়ারদের স্যালারি-ক্যাপ দিয়ে লাভ-লোকসান দেখলে হবে না। ভারতে ছবিটা অন্যরকম। ক্রিকেট থেকে আয়ের বাইরেও এন্ডোর্সমেন্ট থেকে প্রচুর আয় করেন ভারতীয় ক্রিকেটাররা। যেটা বিশ্বের বাকি দেশগুলোয় খুব একটা দেখা যায় না। আইপিএল আজ যে জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে, সেখানে বিদেশি প্লেয়ারদের প্রয়োজনীয়তা নেই বললেও চলে। তাঁদের অবদানকে মাথায় রেখেই কথাটা বলছি। বরং তাঁদের আইপিএলকে প্রয়োজন। ভারতে প্রতিভার অভাব নেই। সেই প্রতিভাদের বিকাশের মঞ্চ করে দিয়েছে আইপিএল।
আইপিএলের এই ঊর্ধ্বগামী জনপ্রিয়তা লাভের প্রধান উৎস সেটা দেরিতে হলেও উপলব্ধি করতে পেরেছে বিসিসিআই। করেছে বলেই দর্শক স্বাচ্ছন্দ্যকে তারা গুরুত্ব দিচ্ছে। নতুন নতুন অত্যাধুনিক স্টেডিয়াম গড়ে তোলার পরিকল্পনা সাজাচ্ছে। আইপিএলে একটা সময় ফ্র্যাঞ্চাইজি পাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্ব পেয়েছে মেট্রোপলিটন সিটিগুলো। এখন সেখানে লখনউয়ের মতো ছোট শহরের ফ্র্যাঞ্চাইজি টিমকে আমরা আইপিএলে দেখতে পাচ্ছি। ভবিষ্যতে তেমনই বেনারস, কানপুর কিংবা নয়ডা থেকে নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি দলের উঠে আসার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। আমি অবাক হব না, যদি অদূরভবিষ্যতে আইপিএলের সেকেন্ড লিগ ডিভিশন এবং জুনিয়ার লিগ ডিভিশন চালু হয়। আর সেক্ষেত্রে ভবিষ্যতে আইপিএলে হয়তো প্রোমোশন-রেলিগেশনও আমরা দেখতে পারি। সেটা হলে আইপিএলের আকর্ষণ আরও বাড়বে বই কমবে না।
শেষ দু’টো প্রশ্ন। দশ বছর পর আইপিএলকে কোন জায়গা দেখছেন? আর আইপিএলের এই ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা কি ৫০ ওভার ফরম্যাটের গতিরুদ্ধ করে দিতে পারে?
ললিত: দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর আগে দিই। ৫০ ওভার ফরম্যাট থাকবে। মুছে যাবে না। বরং টেস্ট পাঁচদিনের বদলে চারদিনে নেমে আসতে পারে। দিনরাতের টেস্ট আরও বাড়বে। আর থাকবে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট। আপনার প্রথম প্রশ্নের কথায় আসি। প্রায় পনেরো বছর আমি ভারতীয় ক্রিকেটের মূলস্রোতের সঙ্গে যুক্ত নই। থাকলে এতদিনে আইপিএল অন্য মাত্রায় পৌঁছে যেত। ২০টি দল সহ সেকেন্ড টায়ার লিগ চালু হয়ে যেত। সেখানে আইপিএলকে এখনও নিয়ে যেতে পারেনি বোর্ড। আশা করব, পরবর্তী সময়ে সেই জায়গা পৌঁছতে সক্ষম হবে আইপিএল। 

Advertisement

[আরও পড়ুন: বসুন্ধরার মাঠ নিয়ে ক্ষোভ, এএফসির কাছে অভিযোগ জানাতে চলেছে মোহনবাগান]

 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ