Advertisement
Advertisement

Breaking News

‘শচীনই স্বপ্ন দেখিয়েছে’, ‘ঈশ্বর’ প্রসঙ্গে বিশেষ বার্তা অশ্বিনের

'যতটুকু খেলেছি, শচীনের প্রেরণাতেই খেলেছি', বার্তা অশ্বিনের।

Ravichandran Ashwin pens special note about Sachin Tendulkar | Sangbad Pratidin
Published by: Anwesha Adhikary
  • Posted:April 23, 2023 1:48 pm
  • Updated:April 27, 2023 5:23 pm

রবিচন্দ্রন অশ্বিন: শচীন কি কেবল একজন ক্রিকেটার! শচীনকে (Sachin Tendulkar) শুধুমাত্র এই একটা বিশেষণে সীমায়িত করা যায় বলে আমি অন্তত বিশ্বাস করি না। আসলে শচীন আমার কাছে, আমার মতো অগণন ভারতীয়র কাছে আশার উজ্জ্বল নিশান। শচীন আমাদের সেই অভিজ্ঞান অঙ্গুরীয়, যার দিকে তাকালেই আমরা চিনতে পারি নিজেদের, খুঁজে পাই আত্মবিশ্বাস, বুঝতে পারি আমরাও হীন নই। নয়ের দশকের সেইসব দিনকাল। সেই আগুনে অস্ট্রেলিয়ার কথা কেই-বা ভুলতে পেরেছে। আগুনের মোকাবিলায় পালটা আগুন হয়েই মাঠে নামলেন শচীন। কিংবা দেশের মাটিতে ওয়ার্নের সঙ্গে সেই ঐশ্বরিক দ্বৈরথ। যতবার খেলা হয় শচীন যেন শাণিত তরবারির মতোই ঝলসে ওঠেন। আর আমার মতো তরুণরা সেদিকে বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকে আর ভাবে, এভাবেও তবে স্বপ্ন দেখা যায়। শচীন আমাদের কাছে স্বপ্নের ফেরিওয়ালা, আমরা শচীনকে দেখেই স্বপ্ন দেখতে শিখেছি। শচীনকে দেখতে দেখতেই আমরা টের পেয়েছি অন্তরের অন্তস্তল থেকে ভেসে আসে সেই ডাক, যা আমাদের বলেছে, বিশ্বের সেরা ক্ষমতার চোখে চোখ রেখেও প্রত্যুত্তর দিতে পারি আমরাও।

শচীন এই কাজটিই তো করেছেন দিনের পর দিন। তাঁকে শুধু ক্রিকেটার বলি কী করে! শচীন আসলে এক দ্রোহেরই নামান্তর। আমাদের জীবনে শচীনের তাৎপর্য যদি বুঝতে হয়, তাহলে শুধু মাঠের চৌহদ্দিতে আটকে থাকলে চলবে না। শচীন কত রান করেছেন, একশোটা সেঞ্চুরি করেছেন কি-না, এসব সংখ্যাতত্ত্ব কিংবা হিসাবশাস্ত্রে শচীনকে মাপা যায় না। শচীন তো একটি আশ্চর্য ঘটনা-ফেনোমেনন। প্রতিবার শচীন সেঞ্চুরি করেন আর আমাদের আশা-ভরসা আর-একটু দৃঢ় প্রত্যয়ী হয়ে ওঠে। নিজেদের প্রতি বিশ্বাস আরও একটু গাঢ় হয়। শচীন অবিশ্বাস্য একটা কিছু করলেন মানেই আমাদের উদ্দীপ্ত হয়ে ওঠার দিন। প্রায় দু-দশক ধরে শচীন আমাদের এভাবেই স্পন্দিত করেছেন, উদ্দীপিত করেছেন। আমাদের মতো একটা উন্নয়নশীল দেশের উত্থানের আখ্যানটিকে যদি খতিয়ে দেখা যায়, তাহলে দেখা যাবে, শচীন সে-আখ্যানেরই এক অনন্য অংশ। শচীন তরুণ ভারতবর্ষের সেই কণ্ঠস্বর, যা ছিল সেদিন কাঙ্ক্ষিত। শচীনের সঙ্গে ক্রমে যোগ দিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, রাহুল দ্রাবিড়, ভি ভি এস লক্ষ্মণ। ভারতবর্ষ হয়ে উঠল এক দুরন্ত শক্তি। আর সেদিনের সেই উত্থানপর্বের ঋত্বিক ছিলেন শচীনই।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মায়ের কোলে ফিরল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল থেকে ‘উধাও’ হওয়া শিশু, গ্রেপ্তার মূল অভিযুক্ত]

আমার সৌভাগ্য যে শচীনের সঙ্গে আমিও খেলার সুযোগ পেয়েছি। অবশ্যই তার মধ্যে স্মরণীয় অধ্যায় ২০১১-র বিশ্বকাপ। এখানেও সেই দুরন্ত আশা আর অসীম ধৈর্যের গল্প। বাইশটা বছর মানুষ এই স্বপ্নটাকে নিজের বুকের ভিতর বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। হেরে যাননি, স্বপ্নকে হারিয়েও ফেলেননি। বরং স্বপ্নকে স্পর্শ করতে নিজেকে দহন করেছেন পরিশ্রমের আগুনে। কঠোর থেকে কঠোরতম পরিশ্রম আর স্বপ্ন ছোঁয়ার দুরন্ত আকাঙ্ক্ষা। সাফল্যের ওই বিন্দুটিই ছিল পাখির চোখ, ব্যস, আর কোনও কিছুর তোয়াক্কা করেননি। এই হলেন শচীন। আমার স্বীকার করতে এতটুকু দ্বিধা নেই যে, আজ আমি যতটুকু ক্রিকেট খেলেছি, তা ওঁকে দেখে প্রাণিত হয়েই। যতবার দেশের জার্সি গায়ে মাঠে পা রেখেছি, মনে রেখেছি, নিজেকে উজাড় করে দিতে হবে। সেরা বিপক্ষের বিরুদ্ধে নিজের সেরাটুকু নিংড়ে দিতে হবে। এই প্রেরণা আমি শচীন নামে ওই অত্যাশ্চর্য মানুষটির থেকেই পাই, পেয়েছি। ২০১১-র বিশ্বকাপ আমরা সঙ্গত কারণেই শচীনকে উৎসর্গ করেছিলাম। শচীনই তো সেই নিশান যা আমাদের ঐক্যবদ্ধ করেছিল, একটা গোটা জাতির গণজাগরণের নায়ক তো ওই মানুষটিই। 

Advertisement

[আরও পড়ুন: একসঙ্গে ৬০ পুরসভায় নিয়োগের দায়িত্বে অয়নের সংস্থা, নেপথ্যে কার হাতযশ? খুঁজছে CBI]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ