Advertisement
Advertisement

‘অফুরান জীবন-শিক্ষা দিয়েছেন শচীন’, ২০২১১ বিশ্বকাপের স্মৃতি আওড়ে বললেন রায়না

'খেলাটাকে অন্তর্দৃষ্টিতে দেখতে পান শচীন।'

Suresh Raina praises Sachin before his 50th birthday | Sangbad Pratidin
Published by: Subhajit Mandal
  • Posted:April 23, 2023 4:50 pm
  • Updated:April 23, 2023 4:52 pm

সুরেশ রায়না: আস্ত আকাশ হৃদয়ে ধারণ করতে পারেন, এমন মানুষ ক’জন হন! সেবার কলম্বোয় আমি জীবনের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি করেছি। সন্ধেয় শচীন বললেন, আমার সেঞ্চুরিটা সেলিব্রেট করা জরুরি। অতএব তিনি আমাকে, হরভজন, যুবরাজকে ডিনারে নিয়ে যাবেন। এই হলেন শচীন তেণ্ডুলকর।

২০১১ বিশ্বকাপের কথা বলি। আমি শুরুর দিকে বেশ কয়েকটা ম্যাচে সুযোগ পাইনি। আপ্রাণ চেষ্টা করছি দলকে বোঝাতে যে, ৬ নম্বরে আমিই উপযুক্ত। ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ খেলা আর পাকিস্তান কিংবা অস্ট্রেলিয়ার মোকাবিলা করার যে কী উন্মাদনা, তা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন। প্রাণপণ তাই চেষ্টা করছি, মাহি ভাই আর গ্যারির দৃষ্টি আকর্ষণের। দেখতে দেখতে কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচ এসে গেল। শচীনের পাশে বসেই খেলা দেখছি। ভারতের জিততে তখনও ৭৮ রান বাকি। হঠাৎ শুনি শচীন আমাকে বলছেন, এই সেই সুযোগ। দেশের জন্য এই ম্যাচটা জিতে এসো। আমার তো সারা শরীরে শিহরণ খেলে গেল। শচীন নিজে আমাকে এ-কথা বলছেন!

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘শচীন পাজি কতটা ভাল বলব না, তবে উনি আমার অনুপ্রেরণা’, বললেন অজিঙ্ক রাহানে]

আমার ছোটবেলার স্বপ্নের নায়ক আমাকে নির্দেশ দিচ্ছেন, দেশের জন্য, ওঁর জন্য ম্যাচটা জিততে। মানুষটা ছ’টা বিশ্বকাপ জুড়ে শুধু প্রতীক্ষা করেছেন এই ট্রফিটা পেতে। সেই তিনি কিনা আমাকে বলছেন ম্যাচটা জিতে আসতে। বুঝলাম, নিজেকে প্রমাণ করার এর থেকে ভাল সুযোগ আর পাব না। মাঠে নামার আগে শুধু ওঁকে বলেছিলাম, “পাজি, আজ জিতে তবে ফিরব।” সেই ম্যাচটায় আমি ২৮ বলে ৩৪ রান করেছিলাম। হয়তো রান তেমন বেশি কিছু নয়, কিন্তু ওই যে একটা ঘণ্টা আমি আর যুবরাজ খেলছিলাম, মনে হচ্ছিল যেন আমি সব পারি। আশ্চর্য এক শক্তি আমার উপর ভর করেছে। সংকল্প করলাম, অনেক কষ্টে যে সুযোগ পেয়েছি তা হেলায় হারাতে দেব না কিছুতেই। আমার দেশের জন্য আর স্বয়ং শচীনের জন্য এই কাজটা আমাকে করতেই হবে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘আমার বাড়িতে তুলিতে হাতেখড়ি’, শচীনকে নিয়ে অভিজ্ঞতার কথা জানালেন শিল্পী সনাতন দিন্দা]

গোটা টুর্নামেন্টেই আমরা শচীনের কথা খুব মন দিয়ে শুনতাম। উনি যখন বলতেন যে, কোটি কোটি দেশবাসী চাইছে আমরা বিশ্বকাপ জিতি, তখন দেখতাম আত্মবিশ্বাসের অপূর্ব আলো ওঁর দু’চোখে ঝিলিক দিয়ে উঠছে।
শচীন আর দেশ তাই অবিভাজ্য। এই সেদিন রোড সেফটির জন্য একটা সৌজন্য ম্যাচে আবার ওঁর সঙ্গে খেললাম। সেই একই রকম জেতার খিদে। ড্রেসিংরুমে আমাদের বললেন, আমাদের কিন্তু জিততেই হবে, দেশের জন্য। এই ধারাবাহিকতা অবিশ্বাস্য। খেলাটাকে অন্তর্দৃষ্টিতে দেখতে পান আর সেই মতো নেতৃত্ব দিতে পারেন সকলকে, অনুপ্রাণিত করতে পারেন। মনে হয় এমন এক স্বর্ণখনি তিনি, যাঁর থেকে অবিরাম আহরণ করা যায় জীবনের শিক্ষা। এই শিক্ষা তিনি আরও বহু বছর আমাদের দিয়ে যান। তাঁর ৫০তম জন্মদিনে এই আমার প্রার্থনা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ