Advertisement
Advertisement

ফের নিজেদের জাত চেনাল জার্মানি, সুইডিশদের হারিয়ে স্বস্তির জয় মুলারদের

ফের স্বমহিমায় বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।

FIFA Football World Cup 2018: Germany stuns Sweden 2-1
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:June 24, 2018 1:33 am
  • Updated:June 24, 2018 1:59 am

জার্মানি- ২ (রয়েস, ক্রুস)

সুইডেন- ১ (টইভোনেন)

Advertisement

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২০০২-এ ফ্রান্স, ২০১০-এ ইটালি, ২০১৪-এ স্পেন, তারপর ২০১৮। চ্যাম্পিয়নদের পরের বিশ্বকাপে প্রস্থানের ধারা কি বজায় থাকবে সেই প্রশ্নই উঠে গিয়েছিল গত ম্যাচে। যখন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানি মেক্সিকোর কাছে অপ্রত্যাশিত হারের সম্মুখীন হয়। সেই অভিশাপ কাটাতে সুইডেন ম্যাচে বদ্ধপরিকর ছিলেন ইয়োগি লো-র ছেলেরা। কিন্তু অঘটন হতে দিলেন না ক্রুসরা। সুইডেনকে হারিয়ে নিজেদের জাত চেনালেন জার্মানরা। সেই জার্মানি, যারা হারার আগে হারে না। মরার আগে মরে না। বিশ্ব ফুটবলে শাসনের ক্ষমতা তারা কেন ধরে বুঝিয়ে দিলেন সোচির হাজার হাজার দর্শককে। শনিবারের রাত ফের একবার জার্মানদের নাছোড় লড়াইয়ের সাক্ষী থাকল। রাশিয়া যে পয়া নয় তা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বুঝেছিল হিটলারের নাৎসি বাহিনী। প্রবল পরাক্রম জার্মানরা ধ্বংস হয়েছিল রাশিয়ায়। কয়েক দশক পর সেই রাশিয়ায় টানা দুবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্নভঙ্গ হতে যাচ্ছিল জোয়াকিম লো-এর দলের। বিশ্বকাপের ইতিহাসে অন্যতম কুলীন দল, ৪ বারের চ্যাম্পিয়ন দলের প্রস্থান? এ কী করে মেনে নেবে বিশ্ববাসী? কিন্তু না! জার্মানরা এখনও ফুরোয়নি, তাদের জাত্যাভিমান সুবিদিত। তাই দেখল এদিন ফুটবল দুনিয়া। মার্কো রয়েস এবং ম্যাচের শেষ লগ্নে টনি ক্রুসের অবিশ্বাস্য ফ্রি-কিকের দৌলতে সুইডিশদের হারাল জার্মানি।

Advertisement

জিততেই হবে। গ্রুপের সব ম্যাচই এখন থেকে ফাইনাল। এই সংকল্প করেই সুইডেনের বিরুদ্ধে নামে জার্মানি। সেই প্রতিজ্ঞা চোখেমুখে ফুটে উঠছিল জোয়াকিম লো-এর দলের। প্রথম থেকেই এদিন গোলের জন্য ঝাঁপায় জার্মানি। লাগাতার আক্রমণে কেঁপে ওঠে সুইডিশ ডিফেন্স। এদিন দলে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন আনেন ইয়োগি লো। প্রথম একাদশে রাখেন মার্কো রয়েসকে। এই রয়েস গত বিশ্বকাপে চোটের জন্য দল থেকে ছিটকে যান। কিন্তু তাঁর কপাল যে চওড়া এদিন তিনি বুঝিয়ে দেন। বেশ কিছু আক্রমণ গড়ে তোলেন তিনি। কিন্তু বিধি বাম জার্মানির। গোলমুখই খুলতে পারছিলেন না তাঁরা। প্রথমার্ধে খেলার গতির বিপরীতে গোল পেয়ে যায় সুইডেন। তার আগে জার্মান বক্সে বিপজ্জনক জায়গায় পৌঁছে গিয়েছিলেন সুইডেনের টইভোনেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তাঁকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন জেরম বোয়াতেং। পেনাল্টির দাবিতে সরব হয় সুইডিশরা। কিন্তু রেফারি নীরব থাকায় বিতর্কের সৃষ্টি হয়। বিশেষজ্ঞদের প্রশ্ন, তাহলে ভিএআর প্রযুক্তি আছে কীসের জন্য? বিতর্ক যাই হোক। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দ হারায় জার্মানরা। নিজেদের স্বভাবসিদ্ধ খেলা থেকে সরে আসার ফল ভোগ করে তাঁরা। ক্রুসের ভুলে জার্মানির গোলে বল ঢুকিয়ে দেন টইভোনেন। প্রমাদ গোনেন জার্মানরা।

দ্বিতীয়ার্ধে গোল শোধ করতে মরিয়া হয়ে ওঠে জার্মানি। মাঝেমধ্যে বল জার্মানির অর্ধে গেলেও বেশিরভাগ সময় বল ছিল সুইডিশ অর্ধে। একের পর এক আক্রমণ। আর সেই আক্রমণ থেকেই আসে রয়েসের গোল। কিন্তু গোলশোধ করলেও প্রস্থানের বিপদঘণ্টি বেজে চলেছে অনবরত। জিততেই হবে। সেই সময় গোদের উপর বিষফোড়ার মতো বোয়াতেংয়ের দ্বিতীয় হলুদ কার্ড। লাল কার্ড দেখে তিনি মাঠ ছাড়তেই শেষ একবার মরণ কামড় দেয় জার্মানি। আর এই মরিয়া জার্মানিকেই চেনে বিশ্ব ফুটবল। ম্যাচের শেষ লগ্নে টনি ক্রুসের ফ্রি-কিক থেকে অনবদ্য গোল।

ফের স্বমহিমায় বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। জার্মানরা বীরের জাত। সুইডেনের বিরুদ্ধে অনবদ্য জয় বুঝিয়ে দিল, বিশ্বকাপটা শুধু আন্ডারডগদের জন্য নয়৷ দশজনের জার্মানি দ্বিতীয়ার্ধে সুইডেনকে প্রায় বিধ্বস্ত করে ছাড়ল৷ ভাগ্যদেবী সুপ্রসন্ন হলে জার্মানি অন্তত ৪ গোলে হারাতে পারত সুইডেনকে৷ টনি ক্রুসের অসমান্য গোলটির জন্য কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট নয়৷ সত্যি, জার্মানি পরের পর্বে না গেলে বিশ্বকাপটাই ম্যাড়ম্যাড়ে লাগত। কিন্তু ঐতিহ্য বজায় রেখে দ্বিতীয় পর্বে যাওয়ার দিকে পা বাড়িয়ে রাখল ৪ বারের চ্যাম্পিয়নরা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ