BREAKING NEWS

১৪ চৈত্র  ১৪২৯  বুধবার ২৯ মার্চ ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

দ্বিতীয় গোল হতেই ভাঙচুর শুরু লন্ডনে, হেরে তাণ্ডব ইংরেজদের

Published by: Sangbad Pratidin Digital |    Posted: July 12, 2018 2:50 pm|    Updated: July 12, 2018 2:50 pm

FIFA Football World Cup 2018: Jolted English fans rampage in streets of London

সায়ন্তন দাস অধিকারী, লন্ডন: মারিও মান্দজুকিচ জয়ের গোল করে বুধবারের পর ক্রোয়েশিয়ার জাতীয় নায়ক হয়ে গেলেন। কিন্তু মারিও মান্দজুকিচ আমাদের একরাশ আশঙ্কা, আতঙ্কের মধ্যেও ফেলে দিয়ে চলে গেলেন। ফুটবলের ব্যাপারস্যাপার কিছু এখানে বলছিই না। বলছি, ব্রিটিশ জনজীবন নিয়ে আশঙ্কার কথা। মান্দজুকিচের গোলটার পর গোটা লন্ডন জুড়ে যে রকম হুলিগানদের দাপাদাপি চলছে, যে ভাবে চারদিকে চলছে ভাঙচুর, রাস্তায় বেরোলেই যে ভাবে বোতল ছোঁড়া হচ্ছে, বুঝে উঠতে পারছি না কবে থেকে আবার সব স্বাভাবিক হবে। কবে থেকে লোকজন আবার অফিস যেতে পারবে?

ঠিক এই ভয়টাই পাচ্ছিলাম সকাল থেকে। রাশিয়ায় হ্যারি কেনরা নামার আগে থেকে বুধবার যে ভাবে রাস্তায় গাড়িঘোড়া বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। যে ভাবে অশান্তির আশঙ্কায় লন্ডনের দু’টো টিউব লাইন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তাতে বারবার মনে হচ্ছিল, হেরে গেলে আজ কপালে প্রচণ্ড দুঃখ আছে। জিতে গেলেও উৎপাত চলবে। কিন্তু টিম হারলে কন্ট্রোলের বাইরে চলে যাবে। যা ভেবেছিলাম, তাই হল। গন্ডগোলের শুরু পিকাডেলি স্কোয়ার থেকে। জায়ান্ট স্ক্রিনে ম্যাচটা দেখানো হচ্ছিল। কিন্তু ক্রোয়েশিয়া দ্বিতীয় গোলটা করার পরই তাণ্ডব শুরু হয়ে যায় চারদিকে। বাধ্য হয়ে বন্ধ করে দিতে হয় ফ্যানজোন। উল্টে চলতে থাকে বোতল ছোঁড়াছুঁড়ি থেকে তুমুল মারপিট।

আর তা মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ল সর্বত্র। হাইড পার্কে পুলিশি নজরদারি বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেখানেও ফ্যানজোনের বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। প্রায় হাজার তিরিশেক লোক খেলা দেখছিল জায়ান্ট স্ক্রিনে। সেন্ট্রাল লন্ডনে বাকিংহাম প্যালেস থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে হাইড পার্ক। কিন্তু পুলিশ ভয় পাচ্ছিল যে, হাইড পার্কে একবার লেগে গেলে ইস্ট-ওয়েস্ট লন্ডনে তা ছড়িয়ে পড়বে। হলও। টিভিতে দেখছিলাম, লেস্টার থেকে শুরু করে লিডস, সব জায়গাতে শুধু বিশৃঙ্খলা আর বিশৃঙ্খলা। ব্রিটেনে বহু দিন ধরে আছি। কিন্তু এরকম অদ্ভুত সমস্যায় জীবনে পড়িনি। ইংল্যান্ডে ফুটবল নিয়ে আবেগটা একেবারে অন্য পর্যায়ের। এবার আরও বেশি ছিল। কে জানে, হয়তো ইংল্যান্ড বড় স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল। ভেবেছিল, বিশ্বকাপ জিতবে। সেমিফাইনালের আগে তো একটা পিটিশনও সই করানো হয়েছিল যে, ইংল্যান্ড যদি বিশ্বকাপ ফাইনালে ওঠে, সোমবার জাতীয় ছুটি।

[ইতিহাস ফেরাতে ব্যর্থ হ্যারি কেনরা, লুঝনিকির রাত দেখল সিংহ শিকারি ক্রোটদের]

কিন্তু এখন যা অবস্থা, তাতে বোধহয় ছুটি না পেয়েও ছুটি নিয়ে বাড়িতে বসে থাকতে হবে! যদিও বোঝা উচিত ছিল। গত তিন দিন ধরে যা চলছে। সুইডেন ম্যাচ জেতার পরই পরই উন্মত্ততা বাড়তে শুরু করেছিল। গাড়ি ভাঙচুর চলেছে। দোকান গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এমনকী লন্ডন ব্রিজে অ্যাম্বুল্যান্সকে পর্যন্ত ছাড়া হয়নি। পুলিশ বারবার অ্যালার্ট করেছে। আগেভাগে করেছে। মনে রাখতে হবে, এখানকার পুলিশ অত্যন্ত কড়া। কিন্তু দিনের শেষে পুলিশকে স্রেফ নির্বাক দর্শক হয়ে থাকতে হয়েছে। শুনতে হয়েছে রাস্তার মোড়ে মোড়ে মদ্যপ গলায় গানের নামে চিৎকার, ‘ইটস কামিং হোম।’
শেষ পর্যন্ত ফুটবল তার দেশে আর ফিরল না। বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল হেরে ফুটবল নয়, ইংল্যান্ডই বাড়ি ফিরছে। আমাদের জীবনকে নরক করে তুলে।

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে