সংবাদ প্রতিদিন-এর জন্য কলম ধরলেন রোমারিও
অহেতুক কথা না বলে একেবারে সোজাসুজি পয়েন্টে আসি। রবিবার লুকা মদ্রিচ বনাম ক্রিশ্চিয়ান এরিকসনের দ্বৈরথ দেখতে আর অপেক্ষা করতে পারছি না।
আমি জানি, ফুটবল এক বা দু’জনের খেলা নয়। ক্রোয়েশিয়া বনাম ডেনমার্ক এই দু’জনের খেলা ছাড়াও মনে রাখার মতো অনেক কিছু উপহার দেবে। তবু ম্যাচটায় এই দু’জনকে দেখার বাড়তি আগ্রহ থাকবে। ওরাই পারে নিজের নিজের টিমকে ভাল থেকে আরও ভাল টিমে পরিণত করতে। যদি ক্রোয়েশিয়া আর ডেনমার্কের ম্যাচ মন দিয়ে দেখে থাকেন, নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন যে এরা দু’জন মাঝেমাঝেই মাঠ থেকে অদৃশ্য হয়ে যায়। কিন্তু দু’টো টিমের সাফল্য দেখলে এদের অবদান নিশ্চিত পাবেন। মদ্রিচ এক কথায় ক্রোয়েশিয়ার বস। রিয়াল মাদ্রিদে যে ভূমিকায় ওকে পাওয়া যায় না। আসলে রিয়ালে একটা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো আছে। একটা টনি ক্রুস আছে। মদ্রিচের বস হওয়ার সুযোগ কোথায়? কিন্তু ক্রোয়েশিয়ার হয়ে যখন নামে, বিশ্বকে বোঝাতে চায় ও কী জিনিস। বাকি টিমগুলোয় ওর পজিশনে যারা এখন খেলছে, তাদের চেয়ে মদ্রিচ প্রচুর, প্রচুর এগিয়ে। এমনকী গ্রুপ কোয়ালিফাই করে যাওয়ার পরেও মদ্রিচকে দেখলাম, আইসল্যান্ডের বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচে বসল না। খেলল। এসব ছোট ছোট জিনিস টিমের বাকিদের তাতিয়ে দেয়।
[বিশ্বকাপ যাবে আসবে, বেঁচে থাক স্পোর্টসম্যান স্পিরিট]
রাশিয়া বিশ্বকাপে যে ক’টা টিমকে দারুণ মনে হচ্ছে, তাদের মধ্যে ক্রোয়েশিয়া অবশ্যই একটা। কিন্তু তারপরেও বলব, ডেনমার্ককে হারানো সহজ হবে না ক্রোয়েশিয়ার পক্ষে। ডেনমার্ক টিমে টিপিক্যাল বড় চেহারার স্ক্যান্ডিনেভিয়ান কিছু ফুটবলার আছে। যারা শুধুমাত্র শরীর ব্যবহার করে খেলে না। স্কিলও আছে। ডেনমার্ক হল যোদ্ধাদের টিম। যারা শেষ মিনিট পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যায়। একই সঙ্গে প্রতিপক্ষ পেনাল্টি বক্সে বিষ ছড়িয়ে দিতেও ওরা পছন্দ করে। আর সেই বিষ ছড়ানোর পিছনে থাকে এরিকনসনের মুভগুলো। রাশিয়ায় এরিকসন ইতিমধ্যেই একটা গোল করে ফেলেছে। ফ্রান্সের বিরুদ্ধে একটা ফ্রি-কিক মেরেছে যা গোলে না ঢুকলেও ফরাসি কিপার হুগো লরিসকে বিব্রত করে ছেড়েছিল। সোজা কথায়, ক্রিশ্চিয়ান এরিকসন অসম্ভব বুদ্ধিদীপ্ত এক ফুটবলার। ওকে, ওর টিমকে হালকাভাবে নিলে বিপক্ষকে ভুগতে হবে।
Ivan Perisic says the atmosphere in the #CRO camp is the best he’s ever experienced at a major tournament.
🤔 How far do YOU think Croatia can go at Russia 2018? pic.twitter.com/FRbW7O4t81
— FIFA World Cup 🏆 (@FIFAWorldCup) July 1, 2018
রবিবারের আর একটা ম্যাচে আসি। স্পেন বনাম রাশিয়া ম্যাচটায় নিঃসন্দেহে ফেভরিট স্পেন। প্রত্যেকটা বিভাগে ওরা রাশিয়ার চেয়ে অনেক এগিয়ে। আর ফারাক এতটাই যে, বড় বেশি চোখে পড়ে। রাশিয়া দুর্বল টিমগুলোর বিরুদ্ধে দুর্ধর্ষ শুরু করেছিল। কিন্তু ওরা আসলে কী টিম, উরুগুয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে। আমি জানি, রাশিয়ার উপর কোয়ালিফাই করার চাপ ছিল না। অনেক চাপমুক্ত ভাবে ওরা বিশ্বকাপ খেলতে নেমেছিল। কিন্তু উরুগুয়ে যেভাবে ওদের দুর্বলতা ধরিয়ে গিয়েছে, চোখে পড়ার মতো।
[মেসির ব্যর্থতার দিন জন্ম নয়া তারকার, পেলের কীর্তি ছুঁয়েও তুলনায় আপত্তি এমবাপের]
স্পেনীয়রা বল পজেশন নিজেদের কাছে রাখার ব্যাপার তুখোড়। যা ওদের খেলাটাকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। নিজেদের ডিফেন্সে ঢোকার খুব একটা সুযোগ ওরা রাশিয়াকে দেবেই না। মানছি, স্পেনকে প্রথম তিন ম্যাচে দারুণ কিছু লাগেনি। কিন্তু ওদের বিশ্বকাপে কিছু কঠিন পরিস্থিতি সামলাতে হয়েছে। আশা করছি, ওদের আরও ভাল খেলতে দেখব। যে বিশ্বকাপ অনেক বেশি চমক দিচ্ছে, সেখানে রাশিয়াকে আরও একটা চমক দিতে হবে দেশে নিজেদের বিশ্বকাপ পার্টি আরও লম্বা করতে।