Advertisement
Advertisement

Breaking News

ডার্বি দেখতে যাওয়া হল না মোহনবাগান ভক্ত রাজীবের, আক্ষেপ বন্ধুদের

কলেজ ছেড়ে বারে গান গাইত ঝিলিক, টাকার জন্য চাপ দিল রাজীবকে...

Dumdum suicide case, police start investigation
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:November 30, 2017 4:42 am
  • Updated:September 21, 2019 5:06 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আপামর মোহনবাগানের সমর্থক রাজীব। রাজীবের আত্মহননের খবর পেয়ে শোকস্তব্ধ বন্ধুবান্ধবরা। সদা হাস্যমুখর রাজীবকে দেখে তাঁর বন্ধুরা ভাবতেই পারেনি, স্রেফ একটা ফোন তাঁর জীবন নিয়ে নিতে পারবে। তাঁর বন্ধুরা আক্ষেপ করে রাজীবের ফেসবুক ওয়ালে লিখছেন, ‘ভেবেছিলাম তোকে ফোন করব, ডার্বি দেখতে যাব ৩ তারিখ। আর হল না। ডার্বিটা তোর জন্য জিততে চাই।’ রাজীবের এক বান্ধবী লিখেছেন, ‘মেয়েটার জন্য অনেক করেছিলি। কিন্তু এটা তুই কী করলি রাজীব?’

[‘স্বামীর সঙ্গে শুয়ে আছি’, ফোনে এই শুনে আত্মঘাতী প্রেমিক]

এখানেই শেষ নয়, রাজীবের ওয়ালে আছড়ে পড়ছে একের পর এক শোকবার্তা। কেউ লিখছেন, ‘কল্যাণী গিয়ে মহামেডানকে হারিয়ে এলি, আর একটা বাজে মেয়ের জন্য নিজেকে শেষ করে দিলি? খুব মিস করব তোকে।’ কেউ আবার লিখছেন, ‘রাজীবদা, তুমি আবার মোহনবাগানি হয়েই ফিরে এসো। একসঙ্গে বসে খেলা দেখব।’ তবে তাঁর বন্ধুরা একটা বিষয়ে একমত, আগামী তিন তারিখের ডার্বিটা তাঁরা রাজীবের স্মৃতি আঁকড়ে বসে দেখবে। মেরিনার্স গ্রুপে অনেকে বলছেন, ‘রাজীবের জন্যই ডার্বিটা জিততে হবে। স্বশরীরে না থাকলেও রাজীবের ফাঁকা আসনটা যে গোটা ৯০ মিনিট ধরেই গাইবে, ‘আমাদের সূর্য মেরুন, নাড়ির যোগ সবুজ ঘাসে…আমাদের খুঁজলে পাবে, সোনায় লেখা ইতিহাসে।’

Advertisement

দমদম শেঠবাগানের বাসিন্দা বছর ছাব্বিশের রাজীব পালের আত্মহত্যার খবরে শোকস্তব্ধ গোটা এলাকা। অনেকেই তাঁর আত্মহত্যার খবর এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না। যে প্রেমিকার জন্য রাজীব সিলিং ফ্যানে দড়ির ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে পড়েন বলে অভিযোগ, তার কঠোর শাস্তি চাইছেন এলাকাবাসী। তাঁদের প্রত্যেকেরই দাবি, যেভাবে প্রেমের অভিনয় করে ঝিলিক রাজীবকে শেষ করে দিল তাতে ওই যুবতীর কঠোর শাস্তি চাই।

Advertisement

[‘বিশ্ব বাংলা’ বিতর্কে এই প্রথম মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী]

সোশ্যাল নেটওয়ার্কে মাত্র তিন মাসের পরিচয়। তাতেই প্রেমিকাকে প্রাণের চেয়েও ভালেবেসে ফেলেছিলেন রাজীব। সেই প্রেয়সী অন্য পুরুষের সঙ্গে শুয়ে আছে, ফোনে প্রেমিকার মুখে একথা শুনে নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারেননি। বেঁচে থাকার ইচ্ছা হারিয়ে ফেলেন তিনি। বুধবার সকালে বাড়ির ঘরের দরজা ভেঙে তাঁর ঝুলন্ত মৃতদেহ দেখতে পান পড়শিরা। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ধারণা, রাজীব আত্মঘাতী হয়েছেন। ঘটনার পরই বাড়ি ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করেন তাঁর ‘প্রেয়সী’। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন। তার ঘরেও ভাঙচুর চালায় উত্তেজিত জনতা। আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে ‘প্রেয়সী’ ঝিলিক রায়চৌধুরিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, মেয়েটি কলেজের পড়াশোনা ছেড়ে পানশালায় গান গেয়ে বেড়ায়। নিজের বাড়ি ছেড়ে দমদমের বেদিয়াপাড়ায় ঘর ভাড়া নিয়ে ছিল। তারই মাঝে এত ঘটনা।

কীভাবে ঘটল পুরো ঘটনা?

পরিবার সূত্রে খবর, অন্য দিনের মতো মঙ্গলবার রাতে গল্প করার জন্য ঝিলিককে ফোন করেছিলেন রাজীব। বাবা-মা তখন অন্য ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন। দু’বার ফোন করার পরও ধরেনি ঝিলিক। পরে নিজেই কল ব্যাক করে বলে, ‘ডিসটার্ব করো না। আমি আমার স্বামীর সঙ্গে এখন শুয়ে আছি।’ একথা বিশ্বাস করতে পারেনি রাজীব। বুঝতে পারেনি, মাত্র তিনমাসের আলাপে যাকে মন প্রাণ দিয়ে ফেলেছে সেই তার সঙ্গে প্রতারণা করতে পারে। অন্ধবিশ্বাসে বলেন, ‘মজা করছ?’ বান্ধবীর উত্তর ছিল, ‘মজা নয়। সত্যি।’ তারপর প্রায় ঘণ্টাখানেকের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়।

[চাকরিতে যোগ শহিদ অমিতাভর স্ত্রীর, জানেই না পরিবার]

সকালে রাজীবের দেহ উদ্ধার হওয়ার পর পরিবারের দাবি, ওই মেয়ের কাছে প্রতারিত হয়েই গলায় দড়ি দিয়েছে সে। বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন রাজীব। পুলিশ সূত্রে খবর, মাস তিনেক আগে তার সঙ্গে সোশ্যাল সাইটে পরিচয় হয় বরানগরের বাসিন্দা ঝিলিকের। মেয়েটি তখন গান গাইছে। সদ্য কলেজ ছেড়ে বিভিন্ন বারে গান গাওয়ার কাজ করত। বারে গান গাওয়ার জন্য পরিবারও ছাড়তে হয় তাকে। সম্প্রতি সে বরানগরের বাড়ি ছেড়ে বেদিয়াপাড়ায় ভাড়া বাড়িতে থাকত।

rajib dumdum

মৃতের পরিবারের অভিযোগ, মাঝে-মধ্যেই রাজীবের কাছে টাকা চেয়ে চাপ দিত ঝিলিক। তা দিতে না পারলে নানাভাবে হুমকি দেওয়া হত। অভিযোগ, এই চাপ সহ্য করতে না পেরে বাধ্য হয়েই আত্মহত্যা করেছেন ওই যুবক। রাজীবের প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, মঙ্গলবার রাতে তাঁরাও চিৎকার শুনতে পান ওই যুবকের। বেশ কিছুক্ষণ ফোনে কথা বলছিলেন তিনি। তারপর বুধবার সকালের ঘটনা। এদিন বেলা হয়ে গেলেও দরজা খোলেননি রাজীব। বাধ্য হয়েই প্রতিবেশীদের ডাকেন রাজীবের বাবা—মা। প্রতিবেশীরা এসে দরজা ভেঙে দেখেন, ঘরের ভেতর ঝুলছে রাজীবের দেহ। তাঁর এক আত্মীয় বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতে কথা বলার সময় ওই মেয়েটিকে তিনি বলেছিলেন, আমি তোকে ছাড়া বাঁচব না। মরে যাব। সত্যিই ও চলে গেল।’

[চাকরি করতে চাপ স্বামীর, আত্মঘাতী গৃহবধূর সুইসাইড নোট ঘিরে চাঞ্চল্য]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ