সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কলকাতা লিগ জয়ের দৌড়ে আজ টিকে থাকার লড়াই ইস্টবেঙ্গলের। শেষ ম্যাচে পিয়ারলেসের বিরুদ্ধে ০-১ হেরে লিগ জয়ের রাস্তা আরও দুর্গম করে তোলে ইস্টবেঙ্গল। ছয় ম্যাচ খেলে ইস্টবেঙ্গলের পয়েন্ট এখন ১০। শীর্ষে থাকা পিয়ারলেসের থেকে তিন পয়েন্ট কম। লিগ টেবলের পাঁচে রয়েছে ইস্টবেঙ্গল। ফলে কলকাতা লিগ যদি জিততে হয় তা হলে শেষ পাঁচ ম্যাচের প্রত্যেকটাই তো জিততে হবেই। সঙ্গে আবার আশায় থাকতে হবে যাতে প্রতিদ্বন্দ্বীরাও পয়েন্ট নষ্ট করে। তবে কালীঘাট এমএসের বিরুদ্ধে ম্যাচে নামার চব্বিশ ঘণ্টা আগেও লাল-হলুদ অনুশীলন করেনি। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, ডিফেন্সকে আরও সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন স্প্যানিশ কোচ। তবে ম্যাচের আগে আবার জোড়া ধাক্কা ইস্টবেঙ্গলের। পিয়ারলেস ম্যাচে রেফারির সঙ্গে খারাপ আচরণের জন্য এক ম্যাচ সাসপেন্ড হয়েছেন মাঝমাঠের অন্যতম ভরসা লালরিন্ডিকা ও তরুণ ডিফেন্ডার মেহতাব সিং। ফলে খেলতে পারবেন না আলেজান্দ্রোর দুই গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার।
উল্লেখ্য, রেফারি নিগ্রহে ইস্টবেঙ্গলের দুই ফুটবলার ডিকা এবং মেহতাব সিংয়ের শাস্তির পরিমাণ, ১ লক্ষ টাকা জরিমানা এবং এক ম্যাচ নির্বাসন। ৭২ ঘন্টার মধ্যে জরিমানা না দিলে নির্বাসন বেড়ে ১ বছর। যা নিয়ে আইএফএ-তেই প্রবল আলোচনা, তাহলে কী পর্দার পিছন থেকে আসল কলকাঠি নাড়িয়ে ফুটবলারদের শাস্তি কমিয়ে দিলেন লাল-হলুদ কর্তা দেবব্রত সরকার। কেন না, বোরহাকে আইএফএ-তে তলবই করা হয়নি। আর কোলাডোকে আইএফএর ডিসিপ্লিনারি কমিটি ডাকলেও কোনও শাস্তি না দিয়েই ছেড়ে দিয়েছে। বড় শাস্তি, একমাত্র ম্যানেজার দেবরাজ চৌধুরি এবং গোলকিপার কোচ অভ্র মণ্ডলকে। এক বছরের জন্য নির্বাসন। যেহেতু এই শাস্তি আই লিগে প্রযোজ্য নয়, তাই কলকাতা লিগে পাঁচটা ম্যাচে বেঞ্চে বসতে পারবেন না তাঁরা।
শাস্তি দেবরাজের জন্য প্রযোজ্য হলেও অভ্রর জন্য নয়। কেন না, অভ্র এমনিতেই বেঞ্চে বসেন না। আর প্র্যাকটিস মাঠ কিংবা ড্রেসিংরুমে যেতে কোনও অসুবিধাও নেই। তবে পাশাপাশি এটাও সত্যি, এর আগে আইএফএ ৭২ ঘন্টার মধ্যে মিটিং ডেকে কোনওদিন বড় ক্লাবের ফুটবলারদের শাস্তিও দেয়নি। কিন্তু যে রেফারি নিগ্রহে কিছুদিন আগে সাদার্নের শ্যাম মণ্ডলকে দু’বছরের জন্য নির্বাসিত করল আইএফএ, সেই রেফারি নিগ্রহেই কেন ইস্টবেঙ্গল ফুটবলারদের মাত্র এক ম্যাচের শাস্তি? আইএফএ সচিব জয়দীপ মুখোপাধ্যায় বললেন, ‘‘খুন আর ডাকাতি দুটোই অপরাধ। কিন্তু শাস্তি কখনও এক হতে পারে না। শ্যাম মণ্ডল রেফারিকে মারার পরই, সঙ্গে সঙ্গে লাল কার্ড দেখে। এরপরেই পুলিশে এফআইআর করে রেফারি। ইস্টবেঙ্গল ফুটবলারদের ক্ষেত্রে কিন্তু রেফারির রিপোর্টে সেরকম কিছু নেই।’’
এক বছর নির্বাসনের খবর শুনে দেবরাজ বললেন, ‘‘ভিডিও ক্লিপিংসে পরিস্কার দেখা যাচ্ছে, আমি প্রতিবাদ জানাতে তেড়ে গিয়েছি। গায়ে তো হাত দিইনি।’’ এদিন কোলাডো, ডিকা, মেহতাব, অভ্র, দেবরাজকে ডেকে প্রথমে শুনানি হয়। পরে শাস্তির কথা জানানো হয়। কথা ওঠে, পরের দিন আড়াইটের সময় ম্যাচ খেলতে হবে। অথচ আগেরদিন রাত সাড়ে ন’টার সময় শাস্তি জানাতে আইএফএতে বসিয়ে রাখা হয়েছে কোলাডোকে। এদিকে, আইএফএ-র মিটিং শুরুর আগেই নিজেদের ক্লাবে মিটিংয়ে বসেন লাল-হলুদ কর্তারা। সেখানে জানানো হয়, দলের ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনায় বসা হবে কোচ আলেজান্দ্রোর সঙ্গে। আর পিয়ারলেস ম্যাচের ঘটনা টেনে বলা হয়, পুরো ঘটনা ফের তদন্ত করে দেখা হবে। পরে আইএফএর ডিসিপ্লিনারি কমিটির শাস্তি শুনে ইস্টবেঙ্গলের অন্যতম শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকার বলেন, ‘‘শাস্তি কমানোর জন্য আইএফএ-র কাছে ফের আবেদন জানাব আমরা।’’ সিদ্ধান্তর বিরুদ্ধে গভর্নিং বডিতে আবেদন করাই যাবে।