Advertisement
Advertisement

‘আইএসএল থেকে বিশ্বকাপে যেতে লেগে গেল সাত বছর’, বলছেন ভারতে খেলে যাওয়া সেলিম বেনাশৌর

ফুটবলার হিসেবে বিশ্বকাপে খেলেছেন। এবার কোচ হয়ে কাতার যাচ্ছেন সেলিম।

Former world cupper and ISL player Selim Benachour will represent Tunisia as an assistant coach at Qatar World Cup | Sangbad Pratidin
Published by: Krishanu Mazumder
  • Posted:May 9, 2022 12:52 pm
  • Updated:October 10, 2022 2:43 pm

২০০২ বিশ্বকাপে তিনি ফুটবলার হিসেবে খেলেছিলেন। ২০ বছর পরে কাতার বিশ্বকাপে (Qatar World Cup) সেই তিনিই যাচ্ছেন কোচ হিসেবে। কে তিনি? তিনি সেলিম বেনাশৌর। টিউনিশিয়ার প্রাক্তন এই বিশ্বকাপার খেলে গিয়েছেন আইএসএল-এ (ISL)। ছিলেন মুম্বই সিটি এফসি (Mumbai City FC)(২০১৫) দলে। মাঝমাঠে খেলা তৈরি করতেন। মুম্বই সিটিতে একই সময়ে ছিলেন অস্কার ব্রুজো। তিনি এখন বাংলাদেশের ক্লাব বসুন্ধরা কিংসের কোচ। সেলিম বেনাশৌরকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন অস্কার ব্রুজো। স্প্যানিশ কোচ বলছিলেন, ”অত্যন্ত বুদ্ধিদীপ্ত প্লেমেকার ছিল সেলিম। দারুণ টেকনিক্যাল স্কিল সমৃদ্ধ একজন খেলোয়াড়। আক্রমণে দক্ষতা ছিল।” কাতার বিশ্বকাপের গ্রুপ বিন্যাস হয়ে গিয়েছে। টিউনিশিয়া রয়েছে গ্রুপ ডি-তে। কাতার বিশ্বকাপে টিউনিশিয়ার সম্ভাবনা, ব্যক্তিগত মাইলস্টোন নিয়ে সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল-কে সাক্ষাৎকার দিলেন টিউনিশিয়ার সহকারী প্রশিক্ষক সেলিম বেনাশৌর। শুনলেন কৃশানু মজুমদার

বিশ্বকাপে আপনি খেলেছেন। এবার কোচ হিসেবে যাচ্ছেন কাতার। দুটো ভূমিকার মধ্যে পার্থক্য কোথায়?
সেলিম: টিউনিশিয়া বিশ্বকাপের ছাড়পত্র পেয়েছে। তবে এখনও তো বিশ্বকাপে কোচ হিসেবে আমি নামিনি। তাই কোচ হিসেবে আমার উপলব্ধি ঠিক কী, তা এখনই আমার পক্ষে বলা সম্ভব হচ্ছে না। তবে প্লেয়ার ও কোচ হিসেবে বিশ্বকাপে যাওয়ার মধ্যে তো পার্থক্য রয়েইছে। প্লেয়ার হিসেবে ২০০২ সালের বিশ্বকাপে আমি খেলেছি। তখন আমার বয়স ছিল মাত্র ১৯ বছর। প্লেয়ার হিসেবে বিশ্বকাপে নামার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার নয়। টপ ফিলিং।

Advertisement

আপনি আইএসএলে খেলেছেন। এই মেগা টুর্নামেন্টের সঙ্গে আপনি ভালই পরিচিত। ভারতীয় ফুটবলের আরও উন্নতি কীভাবে সম্ভব বলে আপনার মনে হয়?
সেলিম- আমি আইএসএল খেলেছি। সেই সূত্রে জানি লিগটা কেমন। দেশীয় ও বিদেশি ফুটবলারদের খুব কাছ থেকে দেখেছি। আর খুব কাছ থেকে দেখেছি বলেই মনে করি ভারতীয় প্লেয়ারদের উন্নতির জন্য এখনও অনেকটাই কাজ করতে হবে। প্রথম যেটা করার দরকার সেটা হল লিগের সময় বাড়াতে হবে। তিন-চার মাসের লিগ করলে চলবে না। লিগের মেয়াদ বাড়িয়ে ১০-১২ মাসের করা খুব দরকারি। ইউরোপ থেকে কোচ আনা প্রয়োজন। তরুণ ফুটবলারদের উন্নতির দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। প্রয়োজনে বিদেশ থেকে কোচ আনা জরুরি। বাড়ি বানাতে হলে ভিত মজবুত করতে হয়। তেমনই দেশীয় ফুটবলের ভিত মজবুত করতে হলে তৃণমূল স্তরকে শক্তিশালী করার দরকার রয়েছে। সেই কারণে ১১, ১২, ১৫-সহ বিভিন্ন বয়সভিত্তিক যে সব দল রয়েছে, সেই দলগুলোর দিকে নজর দেওয়া দরকার। পরিকল্পনা করে এগোলে বয়সভিত্তিক এই সব দলগুলোই সিনিয়র দলের জন্য প্লেয়ারের জোগান দেবে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: IPL 2022: আজ সামনে রোহিতের মুম্বই, সম্মানরক্ষার লড়াইয়ে নাইটদের চিন্তা ওপেনিং]

নিজে একসময়ে আইএসএলে খেলেছেন, তাই টুর্নামেন্টটার উপরে এখনও নিশ্চয় আকর্ষণ রয়েছে। আপনার সময়ের আইএসএল আর এখনকার আইএসএলের মধ্যে পার্থক্য কোথায়?

সেলিম- ঘটনা হল, মুম্বই থেকে চলে যাওয়ার পরে আইএসএলের খেলা আমি খুব একটা দেখিনি। তাই এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া আমার পক্ষে ঠিক হবে না।

আইএসএল থেকে কাতার বিশ্বকাপ। কীভাবে সম্ভব হল এই জার্নি?
সেলিম-আইএসএল থেকে বিশ্বকাপে যাওয়ার এই জার্নি সম্পূর্ণ করতে দীর্ঘ ৬-৭ বছর লেগেছে আমার। ফুটবল কেরিয়ার শেষ করেই আমি কোচিং জগতে প্রবেশের চেষ্টা করেছি। এই ৬-৭ বছরে ইউরোপ থেকে কোচিং ডিগ্রি নিয়েছি আমি। এখন আমার চল্লিশ বছর বয়স। কোচিং জীবনের শুরুর দিকেই বিশ্বকাপের মতো টুর্নামেন্টে যেতে পারছি। এটা আমার কাছে গর্বের ব্যাপার। কোচিং করাতে গিয়ে অনেক কিছু শিখেছি। খোলা মেলা মনের হতে হয়। প্লেয়ারদের কথা শুনতে হয়। ওদের অভাব অভিযোগ জানার চেষ্টা করতে হয়। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সাফল্য পেতে হলে কঠিন পরিশ্রম করতে হয়। কোচিংয়েও তাই। কোচিং আমার খুব ভাল লাগার একটা জায়গা। ট্রেনিং সেশন তৈরি করা, টিম নিয়ে ভাবনাচিন্তা করা, টিম সম্পর্কিত তথ্য হেড কোচকে জানানো, আরও খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে ভাবনাচিন্তা করা আমি রীতিমতো উপভোগ করি।

বিশ্বকাপের গ্রুপ বিন্যাস হয়ে গিয়েছে। আপনাদের গ্রুপটা কেমন হল?
সেলিম- বিশ্বকাপে আমাদের গ্রুপটা খুবই কঠিন। আমাদের প্রথম ম্যাচ ডেনমার্কের সঙ্গে। দ্বিতীয় ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া বা পেরুর মুখোমুখি হব আমরা। কার বিরুদ্ধে খেলতে হবে দ্বিতীয় ম্যাচটা তা এখনও স্থির হয়নি। তৃতীয় ম্যাচে আমাদের প্রতিপক্ষ ফ্রান্স। ফলে বুঝতেই পারছেন আমাদের তিনটি ম্যাচই খুব কঠিন। বিশ্বকাপে আমরা আমাদের স্বাভাবিক খেলাই খেলব। টিউনিশিয়ার অনেক সাপোর্টার যাবে কাতার। ওদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য আমরা জেতার মরিয়া চেষ্টা করব।

বিশ্বকাপ শুরু হতে এখনও কিছুটা সময় বাকি। তবে এই সময়টা মনে হয় যথেষ্ট নয়। বিশ্বকাপের জন্য কীভাবে প্রস্তুতি নেবেন তা কি স্থির করেছেন আপনারা?
সেলিম-বিশ্বকাপ খুবই কঠিন প্রতিযোগিতা। আমার মতে বিশ্বকাপ আর উয়েফা চ্যাম্পিযন্স লিগ পৃথিবীর সব থেকে কঠিন দুটো প্রতিযোগিতা। বিশ্বকাপ নিয়ে কাজ শুরু করব আমরা। দীর্ঘ সময় ধরে আমাদের প্রতিপক্ষ নিয়ে বিশ্লেষণ করব। সেই সঙ্গে আমাদের প্লেয়ারদের শক্তি ও দুর্বলতা নিয়েও আলোচনা করতে হবে। প্রতিটি প্লেয়ার সম্পর্কে চুলচেরা বিশ্লেষণ করে বিশ্বকাপের ২৩ জন খেলোয়াড় নির্বাচন করব। ফুটবলার নির্বাচনে যাতে কোনও ভুলভ্রান্তি না হয়, সেই দিকেই আমাদের সবার লক্ষ্য থাকবে। ছোট ছোট বিষয়গুলোর দিকে নজর দিতে হবে। এই ছোট ছোট দিকগুলোই পার্থক্য গড়ে দিতে পারে। তাই কোনও বিষয়ে যাতে আমরা ভুল না করি, সব জিনিসগুলি যাতে নিখুঁত হয়, সেই দিকে আমাদের লক্ষ্য থাকবে।

আপনার ফুটবলার জীবন সম্পর্কে আসি। আপনি তো প্যারিস সাঁ জাঁয়ে খেলেছিলেন। এখন এই প্যারিস সাঁ জাঁয়ে খেলছেন তিন সুপারস্টার-মেসি, নেইমার আর এমবাপে। এখনকার প্যারিস সাঁ জাঁ দেখলে নস্ট্যালজিক হয়ে পড়েন নিশ্চয়?

সেলিম-প্যারিস সাঁ জাঁয়ে (২০০১-২০০৫) আমি খেলেছি। এখন প্যারিস সাঁ জাঁয়ে খেলছে মেসি, নেইমার এমবাপে। এমবাপের চুক্তি শেষ হয়ে যাচ্ছে এই মরশুমের শেষে। সাঁ জাঁ অবশ্য ওকে রাখতে চায়। তবে এমবাপে থাকবে কিনা আমার জানা নেই। সেটা এমবাপের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। মেসি আর নেইমারের কন্ট্র্যাক্ট অবশ্য আছে। ওরা থেকে যাবে। ঘটনা হল, তিন সুপারস্টারকে নিয়ে কাজ করা কঠিন। তা সে ম্যানেজমেন্টের পক্ষেও, কোচের পক্ষেও। নামকরা সব সুপারস্টার একটা টিমে থাকলে দল যে রেজাল্ট দেবে এমন কোনও কথা নেই। তবে কাগজে কলমে প্যারিস সাঁ জাঁ খুবই শক্তিশালী। প্যারিস সাঁ জায়ে খেলার জন্য আমি গর্ববোধ করি। সাঁ জায়ে খেলার সময়টা আমার খুব ভাল কেটেছে। ১৯ বছর বয়সে আমি প্যারিস সাঁ জাঁয়ে খেলেছি। পিছন ফিরে তাকালে বেশ ভাল লাগে।

আপনাকে মুম্বই সিটি এফসি-তে এনেছিলেন আনেলকা। অনেকদিনের বন্ধু আপনারা। সে প্রসঙ্গে যদি কিছু শেয়ার করেন।
সেলিম-আমি আনেলকার অধীনে খেলেছি। আনেলকা আমার ছোটবেলার বন্ধু। ওকে খুবই সম্মান করি। অত্যন্ত পেশাদার একজন। মাঠে আমার থেকে সেরাটা বের করে আনার চেষ্টা করতো। আমার ক্ষমতা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিল আনেলকা। সেই কারণেই আমার উপরে আনেলকা বিশেষ নজর দিত।মুম্বইয়ে বেশ ভাল সময় কাটিয়েছি আমরা।

[আরও পড়ুন: IPL 2022: ব্যাটে-বলে বিধ্বংসী চেন্নাই, সম্মানরক্ষার লড়াইয়ে ‘শিষ্য’কে হারালেন ‘গুরু’ ধোনি]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ