Advertisement
Advertisement
FSDL

ভারতীয় ফুটবলে জটিলতা বাড়ছে, সংবিধান ঠিক না হওয়া পর্যন্ত ফেডারেশনকে অর্থ বন্ধের ভাবনা FSDL-এর

ভারতকে নিষিদ্ধ করার আগে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারে ফিফা।

FSDL may stop funding AIFF till new framework is made | Sangbad Pratidin
Published by: Subhajit Mandal
  • Posted:July 16, 2022 1:47 pm
  • Updated:July 16, 2022 1:47 pm

দুলাল দে: হিসেবমতো ১২ কোটির একটু বেশি পরিমাণ অর্থ এফএসডিএল (FSDL) থেকে এই মাসেই চলে আসার কথা ফেডারেশনের কাছে। কিন্তু মাসের ১৫ তারিখ হয়ে যাওয়ার পরেও কিন্তু এফএসডিএল থেকে কোনও টাকা আসেনি ফেডারেশনে। ব্যাপারটা এখানেই শেষ নয়। যা শোনা যাচ্ছে, তাতে ফেডারেশনের সংবিধান আইনিভাবে ঠিকঠাক না হওয়া পর্যন্ত নতুন করে আর কোনও অর্থ ফেডারেশনকে (AIFF) দেবে না এফএসডিএল।

অর্থাৎ, এফএসডিএল দেখে নিতে চাইছে, নতুন করে তৈরি হওয়া সংবিধানে তাদের স্বার্থ কতটা রক্ষিত হচ্ছে। সেই বুঝেই তাদেরও পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক হবে। আর এফএসডিএল থেকে টাকা না এলে ফেডারেশন যে আর্থিক ভাবে কিছুটা হলেও বেকায়দায় পড়বে, বলাই বাহুল্য। তবে শোনা যাচ্ছে, ভারতের বুকে অনূর্ধ্ব–১৭ মেয়েদের বিশ্বকাপের আগে ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনকে ব্যান না করার দিকেও হাঁটতে পারে ফিফা (FIFA)। তাহলে অক্টোবরে এই দেশে মেয়েদের বিশ্বকাপ আয়োজন করাই অসুবিধার হয়ে যাবে। ফলে ব্যান থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্য ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনকে সময় দিতে পারে ফিফা।

Advertisement

[আরও পড়ুন: জল্পনার ইতি, আসন্ন আইএসএলে বেঙ্গালুরুর জার্সিতে খেলবেন রয় কৃষ্ণ, সঙ্গী প্রবীর দাস!]

চুক্তিমতো ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনকে বছরে ৫০ কোটি টাকা দিয়ে থাকে এফএসডিএল। আর যে টাকার উপর নির্ভর করে আর্থিকভাবে ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের এখন রমরমা। এফএসডিএল আসার পর ভারতীয় ফুটবলকে আর্থিক নিরাপত্তা দেওয়ার বাইরেও, দেশের ফুটবল পরিকাঠামোর প্রভূত উন্নতি করেছে। কিন্তু সম্প্রতি যেভাবে তাদের বিরুদ্ধে আলোচনা শুরু হয়েছে, তা কিছুতেই ভালভাবে নিচ্ছেন না তাঁরা। ঘনিষ্ট মহলে বলেছেন, এখনও পর্যন্ত কোনও আর্থিক লাভ না পেয়েও প্রতি বছর ৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হচ্ছে। এফএসডিএলের জন্য ভারতীয় ফুটবলে টাটা, আরপিএসজির মতো শিল্পপতিরা ফুটবলে আগ্রহ দেখিয়েছেন। ভারতীয় ফুটবলে এই মুহূর্তে প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ হচ্ছে। আইএসএলের দলগুলি জুনিয়র ডেভলপমেন্ট প্রোগ্রামে অংশ নিয়েছে। এমনকি রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের জুনিয়র ডেভলপমেন্ট প্রোগ্রামও বেশ উন্নত। এত টাকা বিনিয়োগের পরেও তাদের যেভাবে সমালোচিত হতে হচ্ছে, তাতে তারাও বেশ হতাশ।

Advertisement

FSDL may stop funding AIFF till new framework is made

সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) নিযুক্ত অ্যাডমিনিস্ট্রেটররা ফুটবল ফেডারেশনের সংবিধান তৈরি করতে গিয়ে যে ড্রাফট তৈরি করেছেন, তাতে আইএসএলের (ISL) নিয়ন্ত্রণ এফএসডিএল থেকে সরিয়ে ফেডারেশনের হাতে দেওয়ার কথা বলা আছে। আর তাতেই এফএসডিএল ঠিক করেছে, পুরো পরিস্থিতির দিকে এখন লক্ষ্য রাখা হবে। কারণ, ফেডারেশনের সঙ্গে যে চুক্তির ভিত্তিতে তারা বছরে ৫০ কোটি টাকা ভারতীয় ফুটবলে বিনিয়োগ করে, সেই চুক্তিভঙ্গ হলে তারাও আর টাকা দেবে না। ফলে যতক্ষণ না আইনীভাবে ফেডারেশনের সংবিধান ঠিক হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত চুপচাপ থাকতে চায় এফএসডিএল। বার্ষিক ৫০ কোটি টাকা চারটে কিস্তিতে ফেডারেশনকে দেয় এফএসডিএল। যার একটা কিস্তি, যা কি না ১২ কোটির সামান্য বেশি, তা এখনও পর্যন্ত ফেডারেশনের কাছে আসেনি। ভারতীয় ফুটবলের ডামাডোলের বাজারে যা রীতিমতো সমস্যায় ফেলবে ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনকে। কারণ, এফএসডিএল থেকে টাকা না আসলে আই লিগ-সহ (I-League) বিভিন্ন প্রকল্প চালানো রীতিমতো সমস্যা হয়ে যাবে ফেডারেশনের জন্য। আর সেক্ষেত্রে ফিফার ব্যান এলে আই লিগ নিয়েও আর আগ্রহ দেখাতে চায় না এফএসডিএল।

৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ফেডারেশনের নির্বাচন সংক্রান্ত কিছু স্পষ্ট না হলে, ফিফার (FIFA) কর্তৃক যে ব্যানের ভয় রয়েছে, তা হয়তো এখনই প্রয়োগ হবে না। কারণ, অক্টোবরে ভারতের বুকেই হতে চলেছে অনূর্ধ্ব-১৭ মহিলা বিশ্বকাপ। ফলে মহিলা বিশ্বকাপ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ফিফা যদি ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনকে ব্যান করে, তাহলে ভারতের বুকে বিশ্বকাপ চালানোই সমস্যা হবে। যে দেশে বিশ্বকাপ আয়োজিত হবে, সেই দেশকেই ফিফা ব্যান করবে, এরকমটা হওয়া খুবই সমস্যার। ফলে যা শোনা যাচ্ছে, তাতে ভারতীয় ফুটবল কোন পথে যাচ্ছে তা দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারে ফিফা। কিন্তু সমস্যাটা হবে এফএসডিএলের জন্য।

[আরও পড়ুন: বার্সেলোনায় লেওনডস্কি, তবে কি ম্যান ইউ ছেড়ে বায়ার্ন মিউনিখের পথে রোনাল্ডো?]

ভারতীয় ফুটবলের রোডম্যাপ অনুযায়ী সামনের আই লিগের চ্যাম্পিয়ন দলের আইএসএল খেলার কথা। এফএসডিএল যদি দেখে চুক্তিমতো তাদের স্বার্থ রক্ষিত হচ্ছে না, তাহলে তারাও রোডম্যাপ মানবে কি না, তা নিয়েও যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। সেরকম হলে তারা শুধুই আইএসএল নিয়ে মাথা ঘামাবে। ফলে সব কিছু মিলে মারাত্মক জট তৈরি হয়েছে। এরমধ্যে সেপ্টেম্বরে ঘরের মাঠে মোহনবাগানের (Mohun Bagan) এএফসি খেলাও রয়েছে। এদিকে ফেডারেশনের নির্বাচনের যে নিয়মবিধি, তা ১৫ জুলাই জমা দেওয়ার কথা থাকলেও তা এদিন জমা দেননি অ্যাডমিনিস্ট্রেটররা। শোনা যাচ্ছে, সোমবার সেটা তাঁরা জমা দিতে পারেন। অ্যাডমিনিস্ট্রেটরদের সেই জমা দেওয়া সংবিধানবিধি নিয়ে ২১ জুলাই সুপ্রিম কোর্টে শুনানি। সেদিন নিজেদের দাবিতে মেনকা গুরুস্বামীর মতো দুঁদে আইনজীবীকে দাঁড় করাচ্ছে রাজ্য সংস্থাগুলিও। ফলে সেই দিনটা ভারতীয় ফুটবলের জন্য ভীষণই গুরুত্বপূর্ণ।
তার উপর আবার ইন্ডিয়ান অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (IOA) বৃহস্পতিবার একটি চিঠি পাঠিয়েছে তিন অ্যাডমিনিস্ট্রেটরের কাছে। তাদের বক্তব্য, ভারতীয় ফুটবলের সংবিধান তৈরির সময় স্পোর্টস কোড এবং আইওএ-র নীতির দিকটাও মাথায় রাখতে হবে। সব মিলিয়ে মরাত্মক জট তৈরি হচ্ছে ভারতীয় ফুটবল ঘিরে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ