Advertisement
Advertisement

Breaking News

Mohun Bagan Club

সুভাষ ভৌমিক-সহ এগারো কর্তা-ফুটবলারের স্মৃতিচারণায় ব্যতিক্রমী স্মরণসভা মোহনবাগানে

প্রাক্তনের স্মৃতিচারণায় মুখ্য ভূমিকা নিলেন প্রাক্তনরাই।

Mohun Bagan Club pay tribute to Subhash Bhowmick and 10 others | Sangbad Pratidin
Published by: Sulaya Singha
  • Posted:February 5, 2022 9:32 am
  • Updated:February 5, 2022 9:32 am

দুলাল দে: কোভিড বিধ্বস্ত সময় অতিক্রম করে মোহনবাগান তাঁবুতে শুক্রবারের স্মরণসভা শেষ পর্যন্ত হয়ে উঠল প্রাক্তন ফুটবলারদের ‘রি-ইউনিয়ন।’ যেখানে মুখ্য ভূমিকায় উপস্থিত হয়েছিলেন গত পঞ্চাশ বছরে সবুজ-মেরুন জার্সিকে গৌরবান্বিত করা উজ্জ্বল মুখগুলি। স্মৃতিচারণায় ছিলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস আর অরূপ রায়। ছিলেন বিধায়ক দেবাশিস কুমারও। ’৬০ থেকে ২০১০, এই দীর্ঘ সময় জুড়ে মোহনবাগান জার্সিতে খেলা বিভিন্ন প্রজন্মের ফুটবলারদের স্মৃতিচারণার মধ্য দিয়ে পুরো অনুষ্ঠানটি হয়ে উঠেছিল, সম্পূর্ণ ভিন্ন মাত্রার। যেখানে প্রাক্তনের স্মৃতিচারণায় মুখ্য ভূমিকা নিলেন প্রাক্তনরাই।

এর আগে বহু স্মরণসভার সাক্ষী থেকেছে এই ময়দান। কিন্তু কর্মকর্তা আর ফুটবলার মিলিয়ে একসঙ্গে এগারোজন ব্যক্তির স্মরণসভা এই প্রথম দেখল কলকাতা ময়দান। ঠিক ছিল, বিখ্যাত সবুজ-মেরুন লনে (Mohun Bagan) হবে এই স্মরণসভা। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগে তড়িঘড়ি করে স্থান পরিবর্তন করে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয় সবুজ-মেরুন গ্যালারির নিচে। যেখানে স্মরণসভাকে কেন্দ্র করে ময়দানের বিভিন্ন প্রজন্মের মানুষের ভিড়ে তিল ধারণের জায়গা ছিল না। দু’জন কর্মকর্তা প্রাক্তন সহ-সভাপতি সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং প্রাক্তন ফুটবল সচিব অতীন্দ্র নাথ সেনের সঙ্গে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয় প্রাক্তন ফুটবলার সুভাষ ভৌমিক, সুকল্যাণ ঘোষদস্তিদার, প্রণব গঙ্গোপাধ্যায়, অশোক চট্টোপাধ্যায়, সনৎ শেঠ, কানাই সরকার, ভবানী রায়, সত্যজিৎ ঘোষ এবং প্রশান্ত ডোরার।

Advertisement

Mohun Bagan

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘আমাকে মন থেকে ভালবাসো’, শোভনের সঙ্গে ‘রোম্যান্টিক’ মুডে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়]

কেন প্রথাগত নিয়ম ভেঙে ব্যাতিক্রমীভাবে এগারোজনের স্মরণসভা একসঙ্গে অনুষ্ঠিত হল, তার ব্যাখ্যা করে শুরুতেই স্মরণসভার সুর উঁচু লয়ে বেঁধে দেন মোহনবাগান অর্থসচিব দেবাশিস দত্ত। বলেন, “কোভিড পরিস্থিতির জন্যই বিভিন্ন সময়ে ক্লাবের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা প্রাক্তনদের স্মরণসভার আয়োজন ঠিক সময়ে করা সম্ভব হয়নি। এই কোভিড (Corona Pandemic) আবহে চুনী গোস্বামী, পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো দুই বরেণ‌্য প্রাক্তন ফুটবলারের শেষ যাত্রার অংশ হতে পারেনি ভারতীয় ফুটবলের দুই ঐতিহাসিক তাঁবু মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল। সেরকম কর্মকর্তা, প্রাক্তন ফুটবলার মিলিয়ে একসঙ্গে এগারোজন ব্যক্তির স্মরণসভার আয়োজন করাটাও ব্যাতিক্রমী।’’ দেবাশিস দত্ত শুরুতেই স্মরণসভার আবহ তৈরি করে দেওয়ার পর সাংবাদিক গৌতম ভট্টাচার্য এবং প্রাক্তন ফুটবলার মানস ভট্টাচার্যর অসামান্য সঞ্চালনায় বাকি অনুষ্ঠানটি চলল মসৃণ গতিতে। যেখানে ৬০-এর দশকের বলাই দে, জহর দাস, শংকর বন্দ্যোপাধ্যায়দের স্মৃতিচারণা দিয়ে শুরু হয়ে বৃত্ত সম্পূর্ণ হয় শংকরলাল চক্রবর্তী, গৌতম ঘোষদের স্মৃতিচারণায় এসে।

কেউ বললেন, ফুটবলার সুভাষ ভৌমিকের (Subhash Bhowmick) কথা। কেউ আবার কোচ সুভাষ ভৌমিকের। কেউ প্রয়াত দুই কর্তার কথা। কেউ আবার বাকি আট প্রয়াত প্রাক্তন ফুটবলারের জীবন থেকে তুলে আনলেন নানা টুকরো টুকরো ঘটনা। আর তাতে অন্য মাত্রা যোগ করলেন সুভাষের কোচিংয়ে মাত্র ৬ মাস খেলা ব্যারেটোর অনন্য স্মৃতিচারণ। উপস্থিত বিভিন্ন প্রজন্মের ফুটবলারদের দেখিয়ে মুম্বই থেকে উড়ে আসা ব্যারেটো বলেন, “এই প্রাক্তন ফুটবলাররা মোহনবাগানের যাত্রাপথ সঠিকভাবে শুরু করেছিলেন বলেই, এখনকার প্রজন্ম তাঁদের আলোকে আলোকিত। ফলে এই ক্লাবের প্রাক্তন ফুটবলারদের অবদান অনস্বীকার্য।” আর সুভাষ প্রসঙ্গে বলতে উঠে ব্যারেটো বলেন, “কোচিং করতে গিয়ে আমি ওঁর ম্যান ম্যানেজমেন্টকে সব সময় ফলো করি। যেভাবে সুভাষ ফুটবলারদের ম্যানেজ করতেন, তা এক কথায় অসাধারণ। সুভাষের মৃত্যর সংবাদ শুনেই মনে হচ্ছিল, চলে আসি। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে সেটা সম্ভব নয়। ফলে যখন দেবাশিস আমাকে স্মরণসভায় আসার কথা বলে, সঙ্গে সঙ্গে জানিয়ে দিই, আমি আসছি।”

Mohun Bagan

গৌতম সরকার সন্তোষ ট্রফির একটা ঘটনা উল্লেখ করে বলেন, “একটা ঝামেলায় আকবরকে নিয়ে ফাইনালের ঠিক আগেই চলে আসে হাবিব। তখন আমরা মারাত্মক সমস্যায়। বাঘের মতো ঘুরে দাঁড়িয়ে সুভাষ বলে উঠেছিল, “কোনও চিন্তা করতে হবে না। আমি আছি। ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত জিতিয়ে দিয়েছিল সুভাষ। ওরকম মস্তান ফুটবলার সত্যিই আমি দেখিনি।” শ্যাম থাপার পাশাপাশি আরেক প্রাক্তন ফুটবলার প্রদীপ চৌধুরীও শোনাচ্ছিলেন সন্তোষ ট্রফিতে প্রয়াত সুভাষ ভৌমিকের মাস্তানির কথা। সমরেশ চৌধুরী, বিদেশ বসু, শ্যামল বন্দ্যোপাধ্যায়, কৃষ্ণেন্দু রায়, অলোক মুখোপাধ্যায়, অমিত ভদ্র, প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় প্রত্যেকের স্মৃতিচারণায় নানা ভাবে ঘুরে ফিরে এসেছেন সুভাষ সহ বিভিন্নরা।

[আরও পড়ুন: ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টিম ইন্ডিয়ার ঐতিহাসিক ম্যাচের আগে বিশেষ বার্তা শচীনের]

শেষে বক্তব্য রাখতে উঠে সুব্রত ভট্টাচার্য প্রস্তাব দেন, শুধুই স্মৃতিচারণা নয়। বিভিন্ন প্রকল্প বা কর্মকাণ্ডর মধ্য দিয়ে প্রয়াত প্রাক্তনদের মনে রাখার ব্যবস্থা করতে। অবশ্য তার আগেই ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ব্যাখ্যা দেন, রাজ্য সরকার কীভাবে বাংলার ক্রীড়াবিদদের পাশে সবসময় দাঁড়ায়। পাশাপাশি উপযুক্ত সম্মানও দেয়। ফুটবল সচিব স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রয়াত কর্মকর্তা এবং ফুটবলারদের পরিবারের পাশে ক্লাবের সব সময় থাকার অঙ্গীকার করেন। ক্লাবের সহ-সচিব প্রাক্তন ফুটবলার সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায় সবাইকে ধন্যবাদ দিয়ে অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘোষণা করেন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ