স্টাফ রিপোর্টার: ক্লাবের আবেগের কাছে হেরে গেল কর্পোরেট কালচার। স্পনসর বিহীন মোহনবাগানকে যেখানে প্র্যাকটিসের মাঠ থেকে সাংবাদিক সম্মেলন কোনও কিছুই সামলাতে হচ্ছে না। সেখানে ‘কর্পোরেট’ ইস্টবেঙ্গলে ফুটবলাররা মাঠের অভাবে রাস্তায় দাঁড়িয়ে টিম মিটিং করছেন। যা নিয়ে ময়দানে আলোচনা তুঙ্গে। তাহলে কর্পোরেট করে হলটা কী? মোহনবাগান অর্থ সচিব দেবাশিস দত্ত বললেন, “দেবব্রত সরকার যদি ইস্টবেঙ্গল দলের দায়িত্বে থাকতেন, মনে হয় না কোচ ফুটবলাররা রাস্তায় দাঁড়িয়ে টিম মিটিং করতেন। আসলে দীর্ঘদিন ধরে যাঁরা ক্লাবকে ভালবেসে দলটা চালান, তাঁরা বুঝতে পারেন ফুটবলারদের ভাল মন্দ। কোনও কর্পোরেট সংস্থার দু’দিনে সেটা বোঝা সম্ভব নয়।”
কিন্তু যুবভারতীর প্র্যাকটিস মাঠ ভাড়া না থাকা সত্ত্বেও কোয়েস ইস্টবেঙ্গল কীভাবে পৌঁছাল সকালে প্র্যাকটিসে? এখানেই প্রশ্ন। পাশের ক্লাব মোহনবাগান কর্পোরেট সংস্থার অধীনে না থাকলেও, তাদের প্র্যাকটিস মাঠ-সহ সাংবাদিক সম্মেলন নিয়ে তাহলে কেন কোনও সমস্যা হচ্ছে না! নিজেদের মাঠ, ক্লাব তাঁবু থাকা সত্ত্বেও কোয়েস ইস্টবেঙ্গল এফসির কোচ ফুটবলাররা কখনও টিম মিটিং করছেন রাস্তায় দাঁড়িয়ে। ফুটবলাররা কখনও সাংবাদিক সম্মেলন করছেন সাইয়ের বাইরে রাস্তার উপর। কর্পোরেট দল। কিন্তু দলের সঙ্গে যাঁরা যুক্ত, সব কিছু গুছিয়ে ঠিকঠাক করতে ল্যাজে গোবরে হচ্ছেন। মাঠ বুক না থাকার পরও কীভাবে কোয়েস ইস্টবেঙ্গল বৃহস্পতিবার সকালে চলে এল প্র্যাকটিস করতে? ভুলটা কার?
ডুরান্ড কমিটির নোডাল অফিসার গজমী বললেন, “ইস্টবেঙ্গলকে জানিয়েছিলাম, যদি সকালে প্র্যাকটিসের জন্য মাঠ দেওয়া হয়, তাহলে রাতে জানাব। সেই মতো যুবভারতীর আধিকারিকের কাছে ইস্টবেঙ্গলের মাঠ বুকিং নিয়ে জানতে চাই। তিনি বলেন, সেমিফাইনালে হেরে যাওয়া দলকে প্র্যাকটিসের জন্য মাঠ দেওয়া হবে না। তাই আমরা ইস্টবেঙ্গলকে প্র্যাকটিসের মাঠ নিয়ে কিছু জানাইনি। এরপর ওরা কেন চলে এসেছে সেটা ওরাই বলতে পারবে।” এই প্রসঙ্গে কোয়েস ইস্টবেঙ্গলের পক্ষে বিগ্রেডিয়ার বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায় বললেন, “এই প্রসঙ্গে আমি কিছু বলতে চাই না।”
প্রশ্ন উঠেছে, ‘কর্পোরেট’ সংস্থা থাকার পরও এত ভুল বোঝাবুঝি কেন? মোহনবাগানের দেবাশিস দত্ত বললেন, “আজ আমাদের কোচ-ফুটবলাররা যদি রাস্তায় দাঁড়িয়ে টিম মিটিং করত, তাহলে সৃঞ্জয় বোস, দেবাশিস দত্তদের সমালোচনা শুরু হত। আমাদের কোনও কর্পোরেট নেই। তবুও এসব নিয়ে আমাদের সমস্যা নেই। সেমিফাইনাল খেলে উঠে রাতেই ঠিক করে নিই, ফুটবলাররা পরদিন কোথায় সুইমিং করবে।” কিন্তু মোহনবাগানের স্পনসরের কী হল? দেবাশিস দত্ত বললেন, “আমাদের সঙ্গে স্পনসারের চুক্তি একেবারে শেষ পর্যায়ে। কিছু শর্ত নিয়ে কথা চলছে।” মোহনবাগান অর্থসচিব জোর দিয়ে বলেন, “আমরা যার সঙ্গেই চুক্তি করি না কেন, আমাদের সবুজ-মেরুন রং, পাল তৌলা নৌকো আর মোহনবাগান নামটা রাখতেই হবে। আশা করি, সেভাবে সব কিছু চুক্তি হতে যাচ্ছে।” মোহনবাগান সচিব টুটু বোস বলেছিলেন, মোহনবাগান আইএসএল খেলবে। “উনি ঠিকই বলেছেন। ওনার তিন বছরের মেয়াদ কালের মধ্যে মোহনবাগান আইএসএল খেলবে।’’ বলেন অর্থসচিব।
কিছুদিন আগে মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গলকে বাদ দিয়ে আই লিগের জোটের ক্লাবগুলি মিটিং করেছে। তাহলে মোহনবাগান জোটের বাইরে চলে গেল? দেবাশিস দত্ত বললেন, “সেদিন ব্যস্ততার জন্য মিটিংয়ে যাওয়া হয়নি। আইজলও তো আসেনি। এর মানে এমন নয় যে, আমরা জোটের বাইরে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.