কোয়েস চেয়ারম্যান অজিত আইজ্যাকের সঙ্গে কথা বললেন দুলাল দে।
প্রশ্ন: হঠাৎ স্পোর্টিং রাইটস ফিরিয়ে দিলেন?
অজিত: আপনাকে তো গত সপ্তাহেই বলেছিলাম, ছেড়ে দেব। এখনও লাইসেন্সিং প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। তার আগেই স্পোর্টিং রাইটস ফিরিয়ে দিলাম। এবার অন্তত কেউ বলতে পারবে না, কোয়েস এনওসি দিচ্ছে না বলে ইস্টবেঙ্গলের লাইসেন্স হচ্ছে না। ইনভেস্টর আসছে না। কোথাও খেলা সম্ভব হচ্ছে না।
প্রশ্ন: কিন্তু স্পোর্টিং রাইটস ফিরিয়ে দেওয়ার চিঠি ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে না পাঠিয়ে ফেডারেশনে কেন পাঠালেন?
অজিত: কিছুদিন আগে ফেডারেশনেই চিঠি দেয় বলেছিলাম, স্পোর্টিং রাইটস আমার কাছে আছে। ইস্টবেঙ্গলকে যাতে অন্য কোনও নামে খেলতে না দেওয়া হয়। এদিন তাই ফেডারেশনকে জানিয়ে দিলাম, স্পোর্টিং রাইটস আর আমার কাছে নেই। ইস্টবেঙ্গল যে নামে ইচ্ছে খেলতে পারে।
প্রশ্ন: কিন্তু এদিনই কেন এরকম সিদ্ধান্ত নিলেন?
অজিত: দেখুন, কিছুদিন ধরে প্রচুর সমর্থক আমাকে মেল করে জানিয়েছেন, তাঁরা বুঝতে পেরেছেন, আমার সঙ্গে ক্লাব কী অন্যায় করেছে। কিন্তু তাঁদের মাতৃসম ইস্টবেঙ্গল ক্লাবকে যেন ফুটবল খেলা থেকে বঞ্চিত না করি। এই দু’বছরে অনেক সমস্যা এসেছে। কিন্তু লক্ষ লক্ষ ইস্টবেঙ্গল সমর্থক আমাকে উৎসাহ জুগিয়েছে। ইস্টবেঙ্গলকে ভালবেসেই আমি এসেছিলাম। কখনওই চাইব না, ইস্টবেঙ্গলের থেকে ফুটবল কেড়ে নিতে।
প্রশ্ন: তাহলে ১ জুন থেকে স্পোর্টিং রাইটস কেন ফিরিয়ে দিলেন না?
অজিত: দেখুন, আমি জানি না, ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে কারা চুক্তির আইন কানুন পরীক্ষা করছিলেন। হয় তাঁরা আইন জানেন না। নাহলে মিথ্যে বলছিলেন। আমি স্পোর্টিং রাইটস ফিরিয়ে না দিলে, কীভাবে বলছিলেন, ১ জুন থেকে কোয়েসের স্পোর্টিং রাইটস ইস্টবেঙ্গলের কাছে স্বাভাবিকভাবে চলে আসবে, আমি এখনও বুঝতে পারছি না। এখনও নিশ্চয়ই সবাই বুঝবেন, যাঁরা বলেছেন, তাঁরা ঠিক বলেননি।
প্রশ্ন: কিন্তু দু’বছরেই সম্পর্ক এভাবে শেষ হয়ে গেল কেন?
অজিত: দেখুন, বিদায় বেলায় এসব নিয়ে আর বিস্তারিত বলতে চাই না। অনেক অনেক কারণ আছে। শুধু বলছি, ইস্টবেঙ্গলের রয়েছে দুর্দান্ত সব সমর্থক। কিন্তু ক্লাব ম্যানেজমেন্টকে আরও পেশাদার হতে হবে। আর সব ব্যাপারে নাক গলালে হবে না। কোচের কাজ কোচকেই করতে দিতে হবে। বিভিন্ন ব্যাপারে অন্যায়ভাবে এত সব মাথা গলিয়ে দেয় বলেই সমস্যা।
প্রশ্ন: বিচ্ছেদের জন্য কত টাকা ইস্টবেঙ্গলের থেকে কোয়েস পেল?
অজিত: বিচ্ছেদের জন্য আমাদের মধ্যে কোনও আর্থিক চুক্তি ছিল না। তবে এই বিচ্ছেদের পর থেকে ইস্টবেঙ্গল বা আমার কারও উপর কোনও আগের দায় বর্তাবে না। মানে, আমার কাছে ইস্টবেঙ্গল আর কোনও কিছু দাবি করতে পারবে না। আমিও আর ইস্টবেঙ্গলের কাছে কিছু দাবি করতে পারব না।
প্রশ্ন: আপনিও কিন্তু আইএসএল খেলার স্বপ্ন নিয়ে এসেছিলেন।
অজিত: অস্বীকার করছি না তো। কিন্তু শুধু আমার ইচ্ছের উপর তো সব নির্ভর করে না। চারপাশে অনেক ব্যাপার থাকে, যা অনেক সময় ক্লিক করে না। বিদায় বেলায় আর এসব নিয়ে মুখ খুলতে চাই না। আমার ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা ভাল থাকুক।
প্রশ্ন: শুনেছেন নিশ্চয়ই, ইন্দোনেশিয়ার বাঙালি শিল্পপতি ক্লাবের ইনভেস্টর হতে চাইছেন?
অজিত: হুম। বাংলার ক্লাবে ইনভেস্ট করতে চাইছেন একজন বাঙালি। এর থেকে ভাল কিছু হয় না।
প্রশ্ন: ওঁর ভবিষ্যতে পথ চলার জন্য আপনার অভিজ্ঞতা থেকে কিছু সাজেশন?
অজিত: এরকম সমর্থক বিশ্বজুড়ে পাবেন না আপনি। তবে চেষ্টা করবেন, কোচিং-সহ বেশ কিছু বিষয়ে অবাঞ্ছিত নাক গলানো বন্ধ করতে। আশা করি, আপনি ইস্টবেঙ্গলকে বিশ্বমানে নিয়ে যাবেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.