সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মোহনবাগানের সহ-সচিব পদ থেকে পদত্যাগ করলেন সৃঞ্জয় বোস। পাশাপাশি অর্থ-সচিবের পদ ছাড়লেন দেবাশিস দত্তও। কোম্পানির ডিরেক্টরশিপ পদও থেকেও সরে দাঁড়ালেন তাঁরা। সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে সৃঞ্জয় বোস জানিয়ে দিলেন, অনেক ভেবে-চিন্তেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।
দীর্ঘদিন ধরে ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত তিনি ও দেবাশিস দত্ত। সবুজ-মেরুন তাঁবু তাঁদের কাছে সেকেন্ড হোমের মতোই। ফলে আচমকা তাঁদের এমন সিদ্ধান্তে রীতিমতো হকচকিয়ে গিয়েছেন অন্যান্য ক্লাবকর্তা ও সমর্থকরা। এর আগেও বিভিন্ন ডামাডোলের মধ্যে ক্লাব থেকে পদত্যাগ করেছিলেন দুই কর্তা। তবে ক্লাবের স্বার্থেই ফিরেছিলেন তাঁরা।
[ শামি কি দুবাইয়ের হোটেলে ছিলেন? BCCI-কে চিঠি কলকাতা পুলিশের ]
তৃতীয় স্থানে থেকে এবারের আই লিগ শেষ করেছে মোহনবাগান। সামনেই সুপার কাপ। তার আগে অবশ্য এক বিদেশিকে ছেড়ে দিচ্ছে সবুজ-মেরুন শিবির। নেপালে জাতীয় দায়িত্ব পালন করার ডাক পাওয়ায় বিমল মাগারকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ক্লাব কর্তারা। কিন্তু কী এমন হল যে এই সিদ্ধান্ত? উত্তর দিয়ে মোহনবাগানের অর্থ সচিব দেবাশিস দত্ত জানালেন, “আমরা দু’জনেই পদত্যাগ করছি। কারণ ব্যক্তিগতই। তবে কিছু কথা বলতে চাই, নাহলে মানুষ জানবে না, কী ঘটল? কেন এ কাজ করছি? গত চার বছর ধরে আমরা দু’জনে সবাইকে নিয়ে চেষ্টা করেছি টিমটাকে চালাতে। কিন্তু এখন এমন একটা জায়গায় পরিস্থিতি চলে যাচ্ছে, যেখান থেকে ক্লাবকে ফিরিয়ে আনা দুঃসাধ্য হয়ে যাচ্ছে। স্পনশর ও চুক্তি নিয়ে অনেক সমস্যা হচ্ছে। বোর্ড মিটিং ছাড়া তা মেটানো সম্ভব নয়।কিন্তু আজকের দিনটা বাছার পিছনে কারণ, আমরা আই লিগের মধ্যে কিছু করতে চাইনি। সঞ্জয়দা চলে যাওয়ার পর ভয়ানক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। সেখান থেকে দু’জনে সামলেছি। সমর্থকদের ভালবাসা ছিল। টিম আবার ঘুরে দাঁড়ায়। একটা সম্মানজনক জায়গায় পৌঁছাতে পেরেছি। এখন দরকার হচ্ছে পরের বছরের টিম তৈরি করা, যাতে ক্লাব চ্যাম্পিয়ন হতে পারে। আমরা জায়গা ধরে রাখলে হয়তো সে কাজ হয়ত কঠিন হয়ে যাচ্ছে। তাই অনেক ভাবনা চিন্তা করেই এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। ক্লাবের ব্যালেন্স সিট সই করে সচিবকে পাঠিয়ে দিচ্ছি।”
[ তৃতীয় সন্তানের বাবা হলেন মেসি, হাসপাতালে বসেই দেখলেন বার্সার ম্যাচ ]
সহ সচিব সৃঞ্জয় বোস বললেন, “সঞ্জয়দা ছেড়ে যাওয়ার দিনই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আজকে যখন কেউ মাঠে আসে না, অথচ বলেন, আমি মাঠে এলে এরকম ঘটত না। তাহলে মনে হয়, আমরা মাঠে আসি বলেই এরকম ঘটছে। দেখুন, আমরা দিনের শেষে ক্লাবের সমর্থক। শুধু অফিসিয়াল নই। আমরা কোনওদিন চাইব না মোহনবাগানের ক্ষতি হোক। তাই এমন সময় ছাড়ছি, যাতে কেউ আঙুল তুলে না বলতে পারে, টিম গড়ার কোনও স্কোপ দিল না। ব্যক্তিগত ঝামেলা কোথাও বড় হতে পারে না। সঞ্জয়দা আজও আমার ছেলেকে পরীক্ষার আগে উইশ করেছে। খারাপ সম্পর্ক হলে কি তা করতেন? যাঁরা আমাদের নামে বদনাম রটাচ্ছিলেন, তাঁদের এটা জেনে রাখা উচিত।”
[ শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক জয় বাংলাদেশের, মাঠ মাতাল মুশফিকুরের ‘নাগিন ডান্স’ ]
সচিবের থেকে যে কোনও সহযোগিতা পাননি, তা এদিন স্পষ্ট করে দেন সৃঞ্জয়বাবু। তবে সুপার কাপের আগে দলকে সাজিয়ে তবেই পদ ছাড়ছেন তাও সাফ জানিয়ে দেন দুই কর্তা। জানিয়ে দেন, টুটুবাবু শারীরিকভাবে আর টানতে পারছেন না। সে কথা তিনি জানিয়ে দিয়েছেন। অন্যদিকে তাঁরাও গত চার বছরের টানাপোড়েনে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত। জানালেন, গত কয়েক বছর ধরে বহু চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সমস্যা মেটেনি। ফলে মোহনবাগানের স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হচ্ছেন বলেই মত দুই কর্তার।