সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলার ফুটবলের দুই সেরা ক্লাবের অন্দরে দু’রকম ছবি। একদিকে সোনির বিদায়কে কেন্দ্র করে গঙ্গাপারের ক্লাব আবেগে বানভাসি। অন্যদিকে পদ্মাপারের ক্লাব সমর্থকদের বিক্ষোভে উত্তাল। মঙ্গলবার সমর্থকরা বিক্ষোভ দেখান লাল-হলুদ তাঁবুতে। ওঠে ‘গো ব্যাক খালিদ’ স্লোগান। কর্তাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডাও হয় সমর্থকদের।
[ ইস্টবেঙ্গলে ক্ষমতা হ্রাস খালিদের, প্লাজার পরিবর্তে আসছে নয়া বিদেশি ]
আইজলকে আই লিগ দিয়েছিলেন। তাঁর ইউএসপি এটাই। মন কেড়ে নিয়েছিলেন লাল-হলুদ কর্তাদের। সুভাষ ভৌমিককে না পেয়ে তাই তাঁর হাতে দায়িত্ব তুলে দিতে দ্বিধা করেননি কর্তারা। একটা সময় মোহনবাগান যখন ক্রমশ অবনমনের দিকে যাচ্ছিল, তখন উজ্জ্বল হয়ে জ্বলে উঠছিল লাল-হলুদ মশাল। মনে হচ্ছিল, খালিদ ম্যাজিক ফিরেই এসেছে। কিন্তু তা যে ভ্রান্ত, অচিরেই বুঝে যান কর্তা থেকে সমর্থক প্রত্যেকেই। প্রথম ডার্বিতে খালিদের কৌশলগত ভুলেই ভরাডুবি হয়েছিল ইস্টবেঙ্গলের। ফিরতি ডার্বিতে অবশ্য তারাই ফেভরিট ছিল। একদিকে মোহনবাগান তাঁবুতে কোচ বদলেছে। অন্যদিকে দলের অধিনায়ক চোটের কারণে বাইরে। আক্রম মোগরাভির প্রথম ম্যাচই ডার্বি। সব মিলিয়ে আন্ডারডগই ছিল গঙ্গাপারের ক্লাব। কিন্তু তা সত্ত্বেও মোহনবাগানকে হারাতে পারেনি লাল-হলুদ শিবির। শুধু হারানো নয়, রীতিমতো বিপর্যস্ত হতে হয়েছে পদ্মাপারের ক্লাবকে। যে আধিপত্য নিয়ে মোহনবাগান সেদিন খেলেছে, তা স্পষ্ট করে দিয়েছে কোচ হিসেবে খালিদের ব্যর্থতা। দলের রক্ষণে অন্যতম ভরসা আমনার চোট বড় কারণ হতে পারে। কিন্তু খালিদের প্লেয়ার বদলের সিদ্ধান্ত এতটাই হাস্যকার যে, তার দুর্বলতা বুঝতে ফুটবল বিশেষজ্ঞ হতে হয় না। সমর্থকদের মধ্যে হতাশা ছিল স্পষ্ট। কর্তারাও খুশি নন। এই পরিস্থিতিতেই বিক্ষোভে উত্তাল হল ইস্টবেঙ্গল।
[ প্রমিস করছি, চোট সারিয়ে মোহনবাগানেই ফিরব: সোনি ]
মঙ্গলবার বেশ কিছু সমর্থক গিয়ে ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের একটাই দাবি, খালিদকে সরাতে হবে। এ নিয়ে কর্তাদের সঙ্গে বচসা হয় বলেও জানা যাচ্ছে। বস্তুত ডার্বি হারের পরই খালিদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন কর্তারা। খালিদের অন্যতম পছন্দ প্লাজাকে ছেড়ে দেওয়া হবে, তা প্রায় নিশ্চিত। কিন্তু এ যাত্রা কোচকে সতর্ক করেই আরও একটা সুযোগ দিয়েছেন কর্তারা। ফের ডাক পড়েছে চিরকালীন পরিত্রাতা মনোরঞ্জন ভট্টাচার্যর। খালিদ নিজে জানাচ্ছেন, মনোরঞ্জনের সঙ্গে তাঁর কথাও হয়েছে। দলের অবনমনের জন্য নিজের ভুল স্বীকারও করে নিয়েছেন। কিন্তু তাতে অবশ্য সমর্থকদের ক্ষোভ প্রশমিত হচ্ছে না। কর্তাদের বিরুদ্ধেও সমর্থকরা ক্ষুব্ধ। খালিদকে দায়িত্ব দেওয়া নিয়েও অসন্তোষ ছিল। এখন তাঁকে না সরানো নিয়ে ছাই চাপা আগুনে হাওয়া পড়েছে। বিপ্রতীপভাবে মোহনবাগানে মোটে একটা হোম ম্যাচে হারের দায় নিয়েই সরে গিয়েছেন সঞ্জয় সেন। শংকরলাল এসে ভাঙাচোরা ক্লাবকে শুধু জোড়াই লাগাননি, বরং বিক্রমের সঙ্গে খেলতে প্রাণিত করেছেন। সোনির চলে যাওয়ার বিষাদ যেন অনুঘটকের কাজ করেছে। ফলে জ্বলে উঠেছেন ডিকা। চোট আঘাত থাকলেও, সামনে কড়া চ্যালেঞ্জ থাকলেও, সব মিলিয়ে মোহন তাঁবুতে ফিরেছে স্বস্তির পরিবেশ। সেখানে লাল-হলুদ শিবিরে এখনও দমবন্ধ অবস্থা। কেন গঙ্গাপারের ক্লাবের মতো দৃষ্টান্তমূলক সিদ্ধান্ত পদ্মাপারের ক্লাবকর্তারা নিচ্ছেন না, সেই ব্যাখ্যাই এখন তলব করছেন সমর্থকরা।
[ ডার্বি হারের পর সমর্থকদের ক্ষোভের মুখে খালিদ, উঠল ‘গো ব্যাক’ স্লোগান ]
ছবি: শুভাশিস রায়
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.