ইস্টবেঙ্গল: ২ (জাস্টিন, ব্র্যান্ডন)
মিনার্ভা: ২ (সুখদেব, চেঞ্চো)
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ৮৭ মিনিটে যে ফ্যাকাসে মুখগুলো বারাসত স্টেডিয়াম ছেড়ে বেড়িয়ে যাচ্ছিল, তারা আচমকাই ঘুরে দাঁড়াল। বাকি গ্যালারি তখন উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ছে। ব্যাপারটা কী? কাটসুমির হেড থেকে গোল করে ইস্টবেঙ্গলকে তখন কোমা থেকে ফিরিয়ে এনেছেন ব্র্যান্ডন। আই লিগ তালিকার শীর্ষে থাকা মিনার্ভাকে রুখে দিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আশাটা অন্তত জিইয়ে রাখতে সফল হল ইস্টবেঙ্গল। তবে লড়াইটা নিঃসন্দেহে অনেক কঠিন হয়ে গেল।
ইস্টবেঙ্গলের আই লিগ জয়ের স্বপ্ন আরও সহজ হতে পারত। ঘরে ঢুকতে পারত মূল্যবান তিনটে পয়েন্ট। কিন্তু এসবের মাঝে বাঁধা হয়ে রইলেন এক প্রাক্তন মোহনবাগানি। তিনি কাটসুমি উসা। যাঁকে নিয়ে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের গর্বের অন্ত ছিল না। সেই জাপানি বোমার আজ রাতে কি আর ঘুম হবে? মনে হয় না। পেনাল্টি থেকে তাঁর একটা গোল খেলার ফলাফল পালটে দিতে পারত। কিন্তু ট্র্যাজিক হিরো হয়েই রয়ে গেলেন এদিন। মোহনবাগান সমর্থকরা অবশ্য এদিনের ফলাফল দেখে খুশিই হয়েছেন। আর ততটাই ক্ষুব্ধ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দলের ভক্তরা।
টুর্নামেন্টের শুরু থেকে দুর্দান্ত ফর্মে ছিল ইস্টবেঙ্গল। দু’টো ডার্বি বাদ দিলে খালিদ জামিলের তত্ত্বাবধানে চ্যাম্পিয়নশিপের দিকে ভালভাবেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন এডু-আমনারা। কিন্তু ফিরতি ডার্বির পরই শিবিরের ছবিটা অনেকখানি পালটায়। কোচের একগুয়েমি আর তুকতাকে অতীষ্ট হয়ে উঠেছিলেন কর্মকর্তারাও। দলের হাল ফেরাতে আবার ডেকে নেওয়া হয় প্রাক্তন তারকা মনোরঞ্জন ভট্টাচার্যকে। কিন্তু এভাবে একদিনে তো আর ম্যাজিক করে দলের মরচে পড়া ডিফেন্সে শক্তিশালী করে তোলা যায় না। সে কথা স্বীকার করে নিয়েছিলেন মনা নিজেও। আর সত্যিই যে রক্ষণ মেরামতির কাজটা অনেকটা বাকি, তা এদিনও স্পষ্ট চোখে পড়ল। জঘন্য রক্ষণেরই মাশুল দিতে হল দলকে। সুখদেব সিংয়ের গোলে শুরুতেই এগিয়ে যায় মিনার্ভা। আরও একটা গোল হয় প্রথমার্ধেই। কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের পারফরম্যান্স নয়, এদিন তাঁদের আত্মবিশ্বাসের তারিফ করতেই হয়। দু’গোল হজম করার পর যেভাবে দ্বিতীয়ার্ধে খেলার গতি বাড়িয়ে দু’টি গোল শোধ করলেন জবি জাস্টিন, ব্র্যান্ডনরা, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। পেনাল্টি থেকে গোল মিস করলেও এদিনের দু’টি গোলের নেপথ্যেই রইলেন জাপানি মিডিও। তবে শেষ মুহূর্তে আরও একটা সহজ সুযোগ পেয়েছিলেন রালতে। কিন্তু বারে লেগে বেরিয়ে যায় বল। তাই জেতা ম্যাচ মাঠে ফেলে এসে ট্রফি জয়ের চাপ হাজারগুণ বাড়িয়ে দিলেন খালিদের ছেলেরা।
চোটের কারণে আমনার উপস্থিতির সম্পূর্ণ সুযোগ কাজে লাগানোই উদ্দেশ্য ছিল মিনার্ভার। এদিন সেভাবেই শুরুটা করেছিল। দ্বিতীয়ার্ধের ইনজুরি সময়ে ফ্রি-কিক থেকে গোল হলে এদিন খেতাব জয়ের আরও কাছাকাছি পৌঁছে যেতে পারত পাঞ্জাবের দলটি। যদিও ১১ ম্যাচে ২৬ পয়েন্ট পেয়ে শীর্ষেই রইল তারা। আর পয়েন্ট খুইয়ে ১২ ম্যাচ পর ২০ পয়েন্ট নিয়ে তিনে থাকা ইস্টবেঙ্গল চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে আরও দূরে সরে গেল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.