সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এভাবেও ফিরে আসা যায়। এভাবেও সমস্ত লাঞ্ছনার হাত থেকে বাঁচানো যায় শিল্পকে। এভাবেও সহস্র চোখের সামনেও ছড়িয়ে দেওয়া যায় ইন্দ্রজাল। ঔদ্ধ্যতের বিপরীতে আজও বাঁচিয়ে রাখা যায় মায়াকাননকে। এভাবেও। মেসি দেখালেন। দেখালেন, এমন সময়ে যখন ধ্বংস আর বিপর্যয় অদূরে অপেক্ষা করছে মাত্র। কয়েকটা মিনিটের ব্যবধানে হয়তো ইতিহাস তাঁকে সর্বকালের অন্যতম ট্র্যাজিক নায়কের তকমা দিয়ে দিত। আর্জেন্টিনাবাসী দ্রুত ভুলে যেতে চাইতেন আঠেরোর বিশ্বকাপের ইতিবৃত্ত। অথচ বৃত্তটা সম্পূর্ণ করলেন তিনিই। যেখানে ধ্বংসের দূত দাঁড়িয়ে ঠিক তার এক কদম দূর থেকেই সৃষ্টির দেবদূত হয়ে উঠে মেসি বোঝালেন, এভাবেও ফিরে আসা যায়।
[ ভগবানের উচ্ছ্বাসের দিনে ক্যালেন্ডারে লাল দাগ থাকে না… ]
রোজো গোলটা করতেই লাফিয়ে পিঠে উঠে পড়লেন মেসি। ক্যামেরা তখন প্রাণপণে তাঁর মুখের উপর ফেলছে আলো। পাল্লা দিয়ে দৌড়াচ্ছে আর ধরে রাখার চেষ্টা করছে আবেগের লেখচিত্র। কিন্তু বাইরে থেকে আর কতটা বোঝা যায়। কতটাই বোঝা যায় ঠিক কী যন্ত্রণামুক্তির বহিঃপ্রকাশ এই অভিব্যক্তিতে। মেসি মানেই ব্যক্তিগত স্কিলের বিচ্ছুরণ। তিনি নাকি তেমন ভাল নেতা নন। এমনকী ক্রোয়েশিয়া ম্যাচের বিরুদ্ধে জঘন্য হারের পর স্বয়ং মারাদোনাও বলে ফেলেছিলেন, বাচ্চাটা তেমন লিডার গোছের নয়। বিপরীত দুনিয়ায় তখন নেতা হিসেবে দাপাচ্ছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। হ্যাট্রিক করছেন। দলকে জেতাচ্ছেন। সোনার বুটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। চনমনে সে পৃথিবী যেন ক্রমাগত দুয়ো দিচ্ছে মেসির বিষণ্ণ দুনিয়াকে। অথচ ফুটবলপ্রেমীরা জানেন, তিনি নেতৃত্ব দিয়ে খেলতেই ভালবাসেন। শুধু গোলমুখে দাঁড়িয়ে থেকে পাসের অপেক্ষা করেন না। বরং অনেক নিচে নেমে খেলাটা তৈরি করে গোল করেন। সেই মেসি গত দুটি ম্যাচে যে কোনও কারণেই হোক সত্যি নেতা হয়ে উঠতে পারেননি। তবে তৃতীয় ম্যাচে বুঝিয়ে দিলেন, তিনি নেতাই। শুধু বোঝার ভুল হয়েছিল। পরে বললেনও, দেশের জার্সির থেকে বড় আর কিছু হতে পারে না।
Messi GOAL in unbelievable 😲#worldcup #ARG #NGA #ARGNIG pic.twitter.com/JyUm3eoIa3
— Mr.Friday (@aka_mrfriday) June 26, 2018
নিজে গোল করে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়েছিলেন। এই বিশ্বকাপের একশোতম গোলটি এল ফুটবলের ঈশ্বরের পা থেকেই। তারপর সারাক্ষণ চেষ্টা করে গেলেন দল হিসেবে আর্জেন্টিনাকে সংগঠিত করার। অতঃপর রোজোর গোল যেন পাসপোর্ট হাতে ধরিয়ে দিল। নিজেকে আর ধরে রাখতে পারেননি মেসি। তাঁর উচ্ছ্বাসই বলে দিল এই সাফল্যের জন্য কতটা চাতক ছিলেন তিনি। একই কথা বলতে হয় মাসচেরানোর জন্যও। সাম্পাওলিকে একঘরে দল বাছার দায়িত্ব নিয়েছিলেন তাঁরা দু’জনে। দলকে জোতানোর দায়িত্বও যেন নিয়েছিলেন। এদিন বারবার তার প্রমাণ মিলল। মেসি-মাসচেরানো জুটি আর্জেন্টিনাকে একটা দলের রূপ দিল, যা সাম্পাওলি দিতে পারেননি। সাফল্য এল। নক-আউটে পৌঁছানো হল। সম্ভাবনার দরজা খুলল। বাকিটা সময়ের হাতে। তবে এদিন মেসি যেন অগুনতি সমর্থককে বুঝিয়ে দিলেন, খাদের কিনারা যেমন আছে, তেমন ফিরে আসাও থাকে। এ পৃথিবীতে অসম্ভব বলে যে কিছুই নেই এটাই ম্যাজিক।
🇧🇷 2014 ✅
🇷🇺 2018 ✅Marcos Rojo loves a winner against Nigeria at the #WorldCup
👀 TV listings 👉 https://t.co/xliHcxWvEO
📺 Highlights 👉 https://t.co/LOdKDX2Cwn pic.twitter.com/rNOy3LJsP9— FIFA World Cup 🏆 (@FIFAWorldCup) June 26, 2018
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.