পর্তুগাল-২(রোনাল্ডো, নানি)
ওয়েলস-০
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দু’জনেই তারকা ফুটবলার৷ ফুটবল দক্ষতায়, ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের নিরিখে একে অন্যকে টেক্কা দিতে পারেন নানা বিষয়ে৷ তবু ইউরোর সেমিতে শেষ হাসি হাসলেন পর্তুগালের ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো৷ হার মানতে হল ওয়েলসের গ্যারেথ বেলকে৷ দলীয় শক্তিই তারকার রোশনাই ছাপিয়ে ফারাক গড়ে দিল দুই ফুটবলারের মধ্যে৷ একই ক্লাবের সতীর্থ হয়েও দু’জন থেকে গেলেন ইউরোর দুই গোলার্ধে৷ একজনের হাতে এল ফাইনালের টিকিট৷ অন্যজনকে এবারের মত ইতি টানতে হল ইউরো অভিযানে৷
আসলে এদিনের লড়াই যতই পর্তুগাল বনাম ওয়েলসের হোক, কার্যত তা হয়ে উঠেছিল রোনাল্ডো বনাম গ্যারেথ বেলের৷ দু’জনেই রিয়ালের হয়ে ঘাম ঝরান৷ সতীর্থ, তবু ক্লাব ফুটবলের জনপ্রিয়তা-ইগোর চোরাটান দুই ফুটবলারের মধ্যে পুরোদমে বর্তমান৷ একজন রিয়ালের একছত্র অধিপতি, অন্যজন নিজের দক্ষতায় জনপ্রিয়তার ভরকেন্দ্র নিজের দিকে টেনে নিতে পারেন৷ নিজেরা মুখে তাই যাই বলুন, দেশের হয়ে দু’জনের মুখোমুখি হওয়া মাত্র লড়াইটা দল থেকে নেমে এসেছিল ব্যক্তিতে৷ কিন্তু দিনের শেষে ফুটবল ‘টিম গেম’ই৷ আর তাই একক নৈপুণ্যে দলকে অনেকখানি টানলেও জয়ের চৌকাঠ পার করাতে পারলেন না বেল৷
প্রথমার্ধে নিজেদের দুর্গ ভালই আগলে রেখেছিলেন বেলরা৷ বেলের দুরন্ত গতি অন্তত একবার পর্তুগাল রক্ষণকেও ভাঙতে পেরেছিল৷ তুলনায় নিষ্প্রভই ছিলেন রোনাল্ডো৷ তাঁর বিশ্বখ্যাত ড্রিবলিংয়ের ঝলক দেখা গেলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি৷ কিন্তু ওয়েলস দুর্গের এই অটুট বাঁধন ভাঙল দ্বিতীয়ার্ধের গোড়াতেই৷ ম্যাচের ৫০ মিনিটে অসাধারণ দক্ষতায় হেডে ওয়েলসের জালে বল জড়িয়ে দেন রোনাল্ডো৷ সেই শুরু৷ এরপর থেকে ওয়েলস রক্ষণ আর না পেরেছে ঘর সামলাতে, না দানা বেঁধেছে তাদের আক্রমণ৷ তিন মিনিটের মধ্যেই পর্তুগালের হয়ে ব্যবধান বাড়ান নানি৷ ম্যাচের রাশ তখনই পর্তুগালের হাতে চলে আসে৷ ভোক্সকে নামিয়ে খেলার ছকে বদল আনেন কোলম্যান৷ কিন্তু তাতেও ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়নি ওয়েলসের৷
দ্বিতীয়ার্ধে আরও সহজ সুযোগ হাতছাড়া না করলে ব্যবধান বাড়াতে পারত পর্তুগাল৷ সেই তুলনায় গ্যারেথ বেলের গোটাকয় দূরপাল্লার শট ছাড়া ওয়েলসের বলার মতো তেমন কিছু ছিল না৷ বেল প্রাণপণ চেষ্টা করলেও, কথায় বলে না, ওস্তাদের মার শেষ রাতে! এদিন সেটাই করে দেখালেন রোনাল্ডো৷ দলকে দ্বিতীয়বার ইউরোর ফাইনালে তো তুললেনই, সেই সঙ্গে ইউরোর ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলের মালিকানাও এল সিআর সেভেনের দখলে৷ অন্যদিকে এবারের ইউরোর ইতিহাসে ট্রাজিক হিরো হয়েই থেকে গেলেন বেল৷
প্রতিযোগিতার শুরুতে ওয়েলসের এহেন সম্ভাবনা কেউ ভেবেই দেখেনি৷ বেলের ক্লাব ফুটবলের সতীর্থরাও তাঁদের দলের যাত্রাকে তিন ম্যাচের অভিযান হিসেবেই দেখেছিলেন৷ অর্থাৎ গ্রুপ পর্যায়েই ওয়েলসের দৌড় শেষ হবে এমনটাই ধরে নিয়েছিলেন অনেকে৷ শুধু তা ধরে নেননি ওয়েলসের খেলোয়াড় আর সমর্থকরা৷ ফাইনালের দোরগোড়া থেকে তাঁদের ফিরতে হল বটে, তবু এই অকুণ্ঠ সমর্থনের জন্য দর্শকদের কৃতজ্ঞতা জানিয়ে গেলেন বেলরা৷ এই প্রথমবার ইউরোর সেমিফাইনাল পর্যন্ত পৌঁছেছিল ওয়েলস৷
অন্যদিকে পর্তুগাল মুখোমুখি হবে জার্মানি বনাম ফ্রান্স ম্যাচের বিজয়ীর সঙ্গে৷ আপাতত তাই দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ফ্রান্স-জার্মানি দ্বৈরথের দিকেই তাকিয়ে ফুটবল অনুরাগীরা৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.