সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২০০৮ সালের ১০ নভেম্বরের সেই দিনটার কথা ভাবলে আজও আবেগতাড়িত হয়ে পড়ে বাঙালি। কারণ সেই দিনটার পর থেকে দেশের জার্সি গায়ে আর না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। হঠাৎই বুট জোড়া তুলে রাখার সিদ্ধান্তটা নিয়ে ফেলেছিলেন দেশের সর্বকালের অন্যতম সেরা অধিনায়ক। কিন্তু কেন আচমকা এত বড় একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি? এতদিন পর সেই গোপন কথা ফাঁস করলেন দাদা।
চলতি মাসের শেষেই আত্মপ্রকাশ ঘটবে তাঁর বই ‘আ সেঞ্চুরি ইজ নট এনাফ’-এর। আর সেই বইতেই নিজের মন উজাড় করে দিলেন প্রিন্স অফ ক্যালকাটা। নিজের ব্যক্তিত্বর জন্য আজও তিনি ততটাই জনপ্রিয় ঠিক যতটা ছিলেন বাইশ গজে পুল শট হাঁকানোর সময়। তাঁর ধৈর্য, আত্মবিশ্বাস, পরিশ্রম, বুদ্ধি সবই অনুপ্রেরণা দেয় আগামী প্রজন্মকে। কোচ গ্রেগ চ্যাপেলের আমলে দল থেকে বাদ পড়ার পরও কীভাবে ঘুরিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন সৌরভ, সে কথা কারও অজানা নয়। কিন্তু সেই সৌরভ যে বুকের ভিতর কীসের ক্ষোভ আর অভিমান নিয়েই বাইশ গজকে বিদায় জানিয়েছিলেন, তা অনেকেরই অজানা। সে কথাই বিস্তারিতভাবে নিজের বইয়ে লিখেছেন তিনি।
ভারত-অস্ট্রেলিয়ার চার টেস্টের সিরিজ চলাকালীনই অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সৌরভ বলছেন, “ক্রিকেট কেরিয়ারে অনেকবার প্রত্যাখ্যান আর হতাশার শিকার হয়েছি। অনেক সমালোচনা শুনেছি। এখনও মনে আছে কীভাবে চোয়াল শক্ত করে প্রত্যাখানগুলোকে মেনে নিয়েছিলাম। এতটাই চড়াই-উতরাইয়ের মধ্যে দিয়ে এগিয়েছি যে মনে হত কোনও রোলার-কস্টারে চেপে রয়েছি। কোনও প্রতিভাবান অথচ আবেগপ্রবণ ব্যক্তি এমন পরিস্থিতিতে মাথা নত করে ফেলেন। কিন্তু আমি লড়াই চালিয়ে গিয়েছিলাম। মনকে বুঝিয়েছিলাম, এগুলোও পাওনা। পরিশ্রম করলে ফল পাবই। তাই হাল ছাড়িনি। জানতাম একদিন জিতবই। আর তাই কখনও নিজের উপর আস্থা হারাইনি। আমি সফল হব। সেই সঙ্গে আমার দলও। এই প্রত্যাশা নিয়েই রোজ ঘুম থেকে উঠতাম।” কিন্তু ভারত-অস্ট্রেলিয়া সিরিজের দল বাছাই নিয়ে সৌরভ এতটাই ক্ষুব্ধ ছিলেন যে আর সেই অপমান সহ্য করতে পারেননি।
I am super excited to give you a first look at my debut book #ACenturyisNotEnough ,to be published end of this month.
Read the first chapter, go to Juggernaut: https://t.co/OChPk6UUiJ@juggernautbooks @gbsaltlake pic.twitter.com/KI8nNm3MH9
— Sourav Ganguly (@SGanguly99) February 2, 2018
ঠিক কী হয়েছিল? টেস্ট শুরুর আগে ওয়ার্ম-আপ ম্যাচের জন্য বোর্ড প্রেসিডেন্ট একাদশ দলেও রাখা হয়েছিল সৌরভকে। কৃষ্ণমাচারী শ্রীকান্তের নির্বাচন কমিটিই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এর অর্থ একশোরও বেশি ম্যাচ খেলা ভারতীয় অধিনায়ককে ফের ট্রায়ালের সামনে দাঁড় করানো হয়েছিল। সে দলে তাঁর পারফরম্যান্স দেখেই বিচার হবে অজিদের বিরুদ্ধে প্রথম একাদশে তাঁর ঠাঁই হবে কিনা। আর এই বিষয়টিই মেনে নিতে পারেননি দাদা। স্মৃতির পাতা ঘেঁটে বলছেন, “ভীষণ রাগ হয়েছিল। সেদিনই বাবাকে জানিয়েছিলাম, অনেক হয়েছে। এবার সিদ্ধান্তটা নিতেই হবে। বাবা শুনে একটু অবাকই হয়েছিলেন। চ্যাপেল আমায় দল থেকে বাদ দিলেও সে সময় এতটা ভেঙে পড়িনি। নিজের জন্য লড়েছিলাম। কিন্তু সেদিনের অপমান সহ্য করতে পারিনি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.