সঞ্জীব মণ্ডল, শিলিগুড়ি: ভেজাল চানাচুর ও মশলা তৈরির বেআইনি কারখানার হদিশ। হদিশ মিলল শিলিগুড়িতে। ঘটনাস্থল শিলিগুড়ির চম্পাসাড়ি এলাকার ডেবিডাঙ্গা। সেখানেই রয়েছে ভেজাল চানাচুর ও মশলা তৈরির কারখানা। গোপনসূত্রে খবর পেয়ে বুধবার রাতে কারখানায় হানা দেয় শিলিগুড়ি পুলিশের এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ। অভিযান চালিয়ে উদ্ধার হয়েছে প্রচুর রাসায়নিক রং ভরতি টিন ও দু’হাজার প্যাকেট ভেজাল চানাচুর। ৫০ কেজি মটর, গাঠিয়া-সহ চানাচুরের অন্যান্য উপকরণ। সবমিলিয়ে ভেজাল চানাচুরের উদ্ধার হওয়া কাঁচামালের পরিমাণ আড়াইশো কেজি।
এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের আধিকারিকরা ওই কারখানায় থাকা মেশিনগুলিকে বাজেয়াপ্ত করেছে। অভিযোগ, শুধু ভেজাল চানাচুর তৈরি হত এমন নয়। কারখানাটিকে বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় ছিল না। নেই কোনও সাইনবোর্ড। নেই রেজিস্ট্রেশন নম্বরও। একেবারে বেআইনিভাবেই চলত কারখানাটি। স্থানীয় বাসিন্দারাও কারখানাটি নিয়ে বিশেষ মাথা ঘামাননি। জানা গিয়েছে, বেশ কয়েকজন কর্মী দিনে-রাতে মিলিয়ে কারখানায় কাজ করেন। বুধবার রাতে অভিযানের সময় বেশ কয়েকজন মহিলা কর্মী কারখানায় ছিলেন। পুলিশ এসেছে বুঝতে পেরে তাঁরা একে একে সেখান থেকে পালিয়ে যান। অভিযানের সময় কারখানায় মালিক পক্ষের কাউকেই পাওয়া যায়নি। কারখানার মালিকের নাম অমিত গুপ্তা। তিনি সিকিমের জোড়ফাঙের বাসিন্দা। ডেবিডাঙ্গা এলাকায় কারখানা থাকলেও তিনি এখানে থাকেন না। মাসে দু’একবার এসে কারখানার দেখাশোনা করে চলে যান। কারখানায় ম্যানেজার পদের কাউকেই খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাই চানাচুর ও মশলা তৈরির বিবিধ উপকরণ বাজেয়াপ্ত হলেও কাউকেই গ্রেপ্তার করা হয়নি। উলটে কারখানায় থাকা মেশিনগুলিকে উদ্ধার করা হয়েছে। যার বাজার মূল্য লক্ষাধিক টাকা।
এই অভিযান প্রসঙ্গে শিলিগুড়ির সহকারী পুলিশ কমিশনার মানিকলাল লোধ জানিয়েছেন, খবর ছিল চম্পাসাড়ি এলাকায় ভেজাল চানাচুরের কারখানা চলছে। গোপনসূত্রে খবর পেয়েই এই অভিযান চালানো হয়। কেন না বেশ কিছুদিন ধরেই শিলিগুড়ির বিভিন্ন জায়গায় ভেজাল রোধে অভিযান শুরু হয়েছে। বুধবার রাতেই অভিযানও তারই অংশ। আগামীতেও চলবে এই অভিযান প্রক্রিয়া। উল্লেখ্য, বেশ কয়েকদিন আগে শিলিগুড়ির ফুলবাড়ি এলাকার পূর্ব ধনতলায় ভেজাল মশলার কারখানার হদিশ পায় পুলিশ। সেখানে অভিযান চালিয়ে ভেজাল মশলার উপকরণ-সহ বহু কিছু উদ্ধার হয়েছে। এরপরই নড়ে চড়ে বসে শিলিগুড়ি শহরের পুলিশ প্রশাসন। ভেজাল রুখতে শুরু হয় তৎপরতা। চারদিকে ক্রমাগত নজরদারি চালাতেই ডেবিডাঙ্গার ভেজাল চানাচুর কারখানর খবর কানে আসে। ডেবিডাঙ্গার ভেজাল চানাচুরের কারখানায় কেউ গ্রেপ্তার না হলেও বেআইনিভাবে কারাখানা চালানোর অভিযোগে সুয়োমোটো মামলা রুজু করেছে পুলিশ। কারাখানা মালিক অমিত গুপ্তর খোঁজে শুরু হয়েছে তল্লাশি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.