বাবুল হক, মালদহ: এবার মালদহে খুন ইমামের ছেলে। মৃত যুবকের নাম মিজানুর রহমান (২৪)। তিনি তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। সোমবার রাত ১১টা নাগাদ তাঁর মাথা লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয় বলে খবর। আশঙ্কাজনক অবস্থায় মিজানুর রহমানকে উদ্ধার করে কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়। তবে সেই চেষ্টা ফলপ্রসূ হয়নি। জেলা ছেড়ে বেরনোর আগেই মৃত্যু হয় মিজানুরের। এই মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে গোটা এলাকা। দুর্ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের কালিয়াচক থানার বামনগ্রাম অঞ্চলের মসিমপুরের তৃণমূলের কার্যালয়ে।
জানা গিয়েছে, মিজানুর রহমান স্থানীয় মসজিদের ইমাম আবুল হায়াতের ছেলে। একই সঙ্গে তিনি একজন তৃণমূল কর্মীও। আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে এলাকার নির্বাচনী প্রার্থীপদেরও দাবিদার ছিলেন মিজানুর। ভোট উপলক্ষে মসিমপুরে তৃণমূলের নতুন বুথ কার্যালয় তৈরি হয়েছে। শনিবার রাতে সেখানেই দলের প্রার্থী বাছাইয়ের বৈঠক চলছিল। মনোনয়নের দাবিদার মিজানুর রহমানকে কোনও কারণে প্রার্থীর তালিকায় রাখা নিয়েই বাধে বচসা। দলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে তাঁকে প্রার্থী করা নিয়ে আপত্তি ওঠে। এই আপত্তির জেরেই বচসা শুরু হয়। রাত ততক্ষণে এগারোটা ছাড়িয়েছে। বৈঠক শেষ হবে হবে। আচমকাই কার্যালয়ের দরজায় গুলিবিদ্ধ হয়ে লুটিয়ে পড়েন মিজানুর। মাথায় গুলি লেগে ঘটনাস্থল তখন রক্তের পুকুর। রক্তাক্ত মিজানুরকে ওইভাবে পড়ে থাকতে দেখে হকচকিয়ে যায় উপস্থিত দলীয়কর্মীরা। তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হয়। কালিয়াচক থেকে বেরনোর আগেই গাড়ির মধ্যে মৃত্যু হয় ওই তৃণমূল কর্মীর।
এই মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কালিয়াচক থানার পুলিশ আধিকারিক সুমন চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। এই খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, প্রার্থীপদের বচসার জেরেই খুন হয়েছেন মিজানুর। গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের জেরেই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে আসানসোলে ইমামের ছেলে খুন, সংক্রান্ত খবরে এমনিতেই উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। সেখানে পঞ্চায়েত ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হতে না হতেই মালদহে ইমামের ছেলে খুনের ঘটনায় সেই উত্তেজনায় ঘি পড়েছে। তবে হিংসার জের নয়। মনে করা হচ্ছে রাজনৈতিক গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের জেরেই খুন হয়েছেন মিজানুর। তদন্তে নেমেছে কালিয়াচক থানার পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.